রক্তিনী বাড়ির ভয়াবহ রহস্য! এক মেয়ের জীবন এবং একটি শাপগ্রস্ত বাড়ির কাহিনী। বাংলা ভাষায় লেখা এই ভূতের গল্প আপনাকে ভয়ানকভাবে নাড়িয়ে দেবে।

বাংলা ছোট গল্প

Home » বাংলা ছোট গল্প » রক্তিনী বাড়ির রহস্য

রক্তিনী বাড়ির রহস্য

রক্তিনী বাড়ির ভয়াবহ রহস্য! এক মেয়ের জীবন এবং একটি শাপগ্রস্ত বাড়ির কাহিনী। বাংলা ভাষায় লেখা এই ভূতের গল্প আপনাকে ভয়ানকভাবে নাড়িয়ে দেবে।

আমাদের WA চ্যানেল জয়েন করুন

এই মাসের সেরা ভুতের ছোট গল্প, পড়ুন ও অডিও স্টোরির স্বাদ উপভোগ করুন – ঝড়ের রাত

আমি রুপসা। কলকাতার এক কোণে আমার একটা ছোট্ট জগৎ। কলম আর কাগজই আমার সবচেয়ে ভালো বন্ধু। ভূত-প্রেত, অন্ধকারের রাজ্য, এই সবই আমার খেলার মাঠ। আমার লেখা গল্পগুলো মানুষকে ভয় দেখায়, তাড়িত করে, আবার কখনও কখনও ঘুম কেড়ে নেয়।

আজ বলবো এমনই এক গল্প।

কলকাতা থেকে কিছুটা দূরে, বর্ধমানের ধানখেতের মাঝে একটা পুরনো বাড়ি আছে। স্থানীয়েরা তাকে ‘রক্তিনী বাড়ি’ নামে ডাকে। কেন, তা কেউ জানে না। শুধু জানা যায়, সেই বাড়িতে থাকতে গেলে মানুষ পাগল হয়ে যায়।

এই বাড়ির মালিকিনী হলেন রুপা। একটা দুর্ঘটনায় তার বাবা-মা মারা যাওয়ার পর বাড়িটা তার নামেই চলে আসে। রুপা ছোটবেলা থেকেই শহরে বড়ো হয়েছে। বাড়িটা তার কাছে শুধুই একটা ঐতিহ্যিক বোঝা। কিন্তু অর্থের অভাবে সে বাড়িটা বিক্রি করতে পারছে না।

একদিন সাহস করে সে বাড়িটা দেখতে যায়। পুরনো জিনিসের ধুলা আর পোকার গন্ধে ভরা বাড়িটা দেখে তার শরীর কাঁপে। কিন্তু তার মনে একটা অদ্ভুত আকর্ষণও কাজ করে।

সিদ্ধান্ত নিল, সে বাড়িটাকে ঠিক করে নেবে। সব পুরনো জিনিস বের করে ফেলবে, নতুন করে সাজাবে। একটা ভালো ডিজাইনারকেও নিয়োগ করে। কাজ শুরু হল।

কিন্তু কাজ শুরু হতেই অদ্ভুত ঘটনা ঘটতে শুরু করে। রাতের বেলায় দরজা বন্ধ হওয়ার আওয়াজ, পা ফোঁটার শব্দ, এমনকি কারোর হাঁপানির শব্দও শোনা যায়। রুপা ভয় পায়, কিন্তু কৌতূহলও জাগে তার মনে।

এসময় তার স্কুলের বন্ধু অভিষেকের সাহায্য নেয়। অভিষেক একটু বুদ্ধিমান ছেলে। সেও রহস্যের প্রতি আগ্রহী। দুজনে মিলে বাড়িটা অনুসন্ধান করতে থাকে।

রহস্য-রোমাঞ্চ বাংলা ছোট গল্প - অন্ধকার ঘর: রহস্য, রোমাঞ্চ, প্রেম, এবং প্রতিশোধের মিশ্রণ। একটি বাংলা ছোট গল্প যা আপনাকে চমকে দেবে। সম্পুর্ন্য বাংলা ছোট গল্পটি পড়তে এই লিংকটি ক্লিক করুন।

একদিন তারা বাড়ির ওপরের তলায় একটা লুকোনো ঘর পায়। ঘরটা বহুকাল ধরে বন্ধ ছিল। ভারী দরজাটা খুলে তারা ভিতরে ঢুকে যায়। ঘরটা ধুলাতে ভরা, কিন্তু সবচেয়ে আশ্চর্যজনক ব্যাপার হল, সেখানে একটি পুরনো ডায়েরি পাওয়া যায়।

ডায়েরিটা রুপার দাদির। সেই থেকে ধীরে ধীরে একটা ভয়াবহ গল্পের সূত্র ধরা পড়তে শুরু করে। রুপার দাদি এক সময় এই বাড়িতে থাকতেন। তিনি এক রহস্যময় মহিলার প্রেমে পড়েন। কিন্তু সেই মহিলা তাঁকে ঠকায়। হৃদয় ভাঙা দাদি আত্মহত্যা করেন। আর তার পর থেকেই বাড়িটা শাপগ্রস্ত হয়ে পড়ে।

রুপা ধীরে ধীরে বুঝতে পারে, সেই মহিলার আত্মা এখনও বাড়িতে ভূত হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আর সে রুপাকেই তার লক্ষ্য করেছে।

ভয় আর কৌতূহলের মিশ্রণে রুপা আর অভিষেক এবার আত্মার সঙ্গে লড়াই করার জন্য প্রস্তুত হয়। কিন্তু প্রতিটি রাত আগের রাতের চেয়েও ভয়াবহ হয়ে উঠতে থাকে।

এক রাতে, বাড়িটা কাঁপতে শুরু করে। আন্ধার থেকে একটা ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে ওঠে সেই মহিলা। রুপা আর অভিষেকের মধ্যে এক মর্ত্য যুদ্ধ শুরু হয়।

শেষ পর্যন্ত, রুপার সাহস আর অভিষেকের বুদ্ধির জয় হয়। মহিলার আত্মাকে শান্ত করা সম্ভব হয়। বাড়িটা থেকে অন্ধকার সরে যায়।

কিন্তু সেই রাতের পর থেকে রুপার জীবন আর আগের মতো হয়নি। সে জানত, অন্ধকার কখনও পুরোপুরি চলে যায় না। শুধু লুকিয়ে থাকে, কোনও একটা অন্ধকার কোণে। আর সেই অন্ধকারের জন্য সে সবসময় প্রস্তুত থাকবে।

রক্তিনী বাড়ি থেকে বের হয়ে এসেও রুপার মন শান্ত হয়নি। সেই রাতের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা এখনও তার মনে ভেসে উঠছে। অভিষেকের সাহায্য ছাড়া সে একা কিছুই করতে পারত না, এই বোধগম্যতাও তাকে কষ্ট দিচ্ছে।

বাংলা রোমান্টিক ছোট গল্প - সপ্তম পত্র: দূরত্বের ভালোবাসা, স্বপ্নের সংগ্রাম, এবং জীবনের বাস্তবতার মধ্যে আটকে পড়া দুটি মন। এই রোমান্টিক বাংলা ছোট গল্পে আবেগের ছোঁয়া, স্মৃতির সুর, এবং অনিশ্চয়তার মিশেল। সম্পুর্ন্য বাংলা ছোট গল্পটি পড়তে এই লিংকটি ক্লিক করুন।

কয়েকদিন পর অভিষেকের সঙ্গে দেখা করতে গেল রুপা। তার চোখে চোখ রেখে বলল, “আমি আর সেই বাড়িতে থাকতে পারব না অভি, আমার মনটা খারাপ হয়ে যাচ্ছে।”

অভিষেক রুপার কথা শুনে চিন্তিত হয়ে পড়ল। সে জানত, রুপার ভয়টা কতটা বাস্তব। কিন্তু বাড়িটা তো এমন করেই ফেলে রাখা যায় না। একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে সে বলল, “আমরা একটা কাজ করি রুপা, বাড়িটা ভাড়া দিয়ে দেই। কিন্তু কারোকে বলবো না যে সেখানে আগে কী হয়েছিল।”

রুপা একটু ভেবে বলল, “তুই ভাবি কিভাবে হবে।”

এভাবেই রক্তিনী বাড়ির এক নতুন অধ্যায় শুরু হল। বাড়িটা ভাড়া দেওয়া হল একটা তরুণ দম্পতিকে। সুদীপ আর মীনাক্ষী নাম ছিল তাদের। দুজনেই শহর থেকে এসেছিল, গ্রামের পরিবেশ পছন্দ করে বাড়িটা ভাড়া নিয়েছিল।

শুরুর দিকে সব ঠিকঠাকই চলছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে অদ্ভুত ঘটনা ঘটতে শুরু করল। রাতের অদ্ভুত আওয়াজ, জিনিসপত্র সরে যাওয়া, এমনকি মীনাক্ষীর অস্বাভাবিক আচরণ—সব মিলিয়ে বাড়িটা আবারও তার ভৌতিক রূপ ধারণ করতে শুরু করল।

একদিন সুদীপ খুব রাতে ঘুম থেকে উঠল। তার মনে হল, কে যেন তার পাশ থেকে কাঁদছে। সে চোখ খুলে দেখল, মীনাক্ষী বিছানায় নেই। ঘরটা অন্ধকার। তড়পাড়া করে লাইট জ্বালানোর চেষ্টা করল। লাইট জ্বলে ওঠার আগেই তার চোখে পড়ল একটি ছায়া। একটা দীর্ঘ, কালো ছায়া।

সেই রাতের পর থেকে সুদীপ আর মীনাক্ষীর জীবন নরকে পরিণত হল। মীনাক্ষীর অবস্থা দিনের পর দিন খারাপ হতে লাগল। সে অদ্ভুত অদ্ভুত কথা বলতে শুরু করল। কখনও সে নিজেকে রক্তিনী বলে দাবি করত, কখনও আবার রুপার নাম ধরত।

এদিকে রুপাও সব খবর পেয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ল। সে বুঝতে পারছিল, রক্তিনীর আত্মা এবার আরও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। সে আবারও অভিষেকের সাহায্য নিতে বাধ্য হল।

এবার তাদের লড়াইটা আরও কঠিন হবে। কারণ তারা জানত, এবার শুধু নিজেদের বাঁচানোই যথেষ্ট নয়, মীনাক্ষীকেও বাঁচাতে হবে। আর তার জন্য তাদের রক্তিনীর সঙ্গে মুখোমুখি হতেই হবে।

এক রাত, পূর্ণিমার রাত। রক্তিনী বাড়ি আবারও আগুনের মতো জ্বলে উঠল। রুপা আর অভিষেকের পাশাপাশি সুদীপও এবার লড়াইয়ে নামল। তাদের সামনে দাঁড়িয়ে ছিল অন্ধকারের রানি, রক্তিনী।

পূর্ণিমার রাত। আকাশ ছটাতে ছটাতে তার স্বর্ণালী আলো ছড়াচ্ছে। কিন্তু রক্তিনী বাড়ির ভিতর কালো মেঘ জমে আছে। রুপা, অভিষেক আর সুদীপ তিনজনই একসঙ্গে দাঁড়িয়ে। তাদের চোখে ভয় নয়, একটা দৃঢ় সংকল্প।

রক্তিনী ধীরে ধীরে আকার নিতে শুরু করে। তার চোখ দুটি লালচে আগুনের মতো জ্বলে উঠল। সে হাসল, একটা ভয়ঙ্কর হাসি। তার হাসি শুনে বাড়ির পুরোটা কাঁপতে শুরু করল।

“তোমরা ফিরে এসেছো,” রক্তিনীর কণ্ঠ একটা শুষ্ক বাতাসের মতো বইল।

“হ্যাঁ, ফিরে এসেছি,” রুপা জোরে বলল, “এবার তোমাকে শান্ত করতে।”

লড়াই শুরু হল। রুপা, অভিষেক আর সুদীপ তিনজন মিলে রক্তিনীর বিরুদ্ধে লড়তে লাগল। কিন্তু রক্তিনী অসাধারণ শক্তিশালী ছিল। সে তাদের একের পর এক আক্রমণ করতে থাকল।

সুদীপ আগেই আহত হয়ে গেল। সে পড়ে গেল। অভিষেক তাকে সাহায্য করতে গিয়ে রক্তিনীর আক্রমণের শিকার হল। এবার রুপা একাই। তার হাতে ছিল শুধু একটা ছোট্ট কুঠি। কিন্তু তার মনে ছিল অসীম সাহস।

অনুপ্রেরণামূলক বাংলা ছোট গল্প - অনন্ত পথ: মোটিভেশনাল বাংলা ছোট গল্প: কীভাবে একজন মেয়ে তার স্বপ্নের আশ্রম গড়ে তুলে সমাজকে বদলে দিল? সম্পুর্ন্য বাংলা ছোট গল্পটি পড়তে এই লিংকটি ক্লিক করুন।

রক্তিনী ধীরে ধীরে রুপার কাছে এগিয়ে আসতে লাগল। রুপা ভয় পেল না। সে জানত, এটাই শেষ লড়াই। তার কুঠিটা তুলে ধরল রক্তিনীর দিকে।

ঠিক সেই মুহূর্তে বজ্রপাত হল। একটা জোরেসোর আওয়াজে আকাশ কাঁপল। বাড়িটা কাঁপতে লাগল। একটা উজ্জ্বল আলো বাড়িটাকে ভরিয়ে তুলল।

যখন আলো কমতে শুরু করল, তখন দেখা গেল, রক্তিনীর চেহারাটা ধীরে ধীরে মলিন হয়ে আসছে। তার শরীরটা কেমন জ্বলে উঠছে। আর তারপর সে অদৃশ্য হয়ে গেল।

বাড়ির ভিতরে একটা শান্তি নেমে এল। রুপা, অভিষেক আর সুদীপ তিনজন ধীরে ধীরে নিশ্বাস ফেলতে লাগল। তারা জানত, এবার সত্যিই শেষ। রক্তিনী আর ফিরবে না।

বাড়িটা এখন আর রক্তিনী বাড়ি নয়। সেটা হয়ে উঠল জীবনের বাড়ি। রুপা, অভিষেক আর সুদীপ তিনজন মিলে বাড়িটাকে নতুন করে সাজাতে শুরু করল। তাদের মধ্যে একটা নতুন বন্ধন গড়ে উঠল।

এভাবেই রক্তিনী বাড়ির ভয়াবহ অধ্যায়ের শেষ হল। কিন্তু রুপা জানত, তার জীবনে অন্ধকারের ছায়া সবসময়ই থাকবে। কারণ সে একজন গল্পকার। তার কল্পনায় সবসময়ই ভূত-প্রেতের বাস। কিন্তু সে ভয় পাবে না। কারণ সে জানে, ভয়কে জয় করা যায়, শুধু সাহসের দরকার।

এই রকম চিত্তাকর্ষক বাংলা ছোট গল্প -এর আপডেট পেতে আমাদের WhatsApp চ্যানেল জয়েন করুন।

আমরা কারা

নতুন বাংলা ছোট গল্প

আকাশের অতিথি

"আকাশের অতিথি" একটি মজার এবং রহস্যময় কল্পবিজ্ঞান গল্প, যেখানে ভিনগ্রহের অতিথিরা দুর্গাপূজার আবহে শান্তিপুরে নেমে আসে। বাংলা ছোট গল্পের অনন্য স্বাদ নিয়ে রচিত এই উপাখ্যান পাঠককে মুগ্ধ করবে।

"আকাশের অতিথি" একটি মজার এবং রহস্যময় কল্পবিজ্ঞান গল্প, যেখানে ভিনগ্রহের অতিথিরা দুর্গাপূজার আবহে শান্তিপুরে নেমে আসে। বাংলা ছোট গল্পের অনন্য স্বাদ নিয়ে রচিত এই উপাখ্যান পাঠককে মুগ্ধ করবে।

সম্পুর্ন্য গল্পটি পড়ুন: আকাশের অতিথি

আষাঢ়ের সন্ধ্যে

"আষাঢ়ের সন্ধ্যে" - রোমান্টিক বাংলা ছোট গল্প যেখানে ১০ বছর পর বর্ষার সন্ধ্যায় রাহুল আর মোনালিসা-র পুনর্মিলন ঘটে। বৃষ্টিভেজা আবেগের মাঝে তাদের ভালোবাসার গল্প নতুন মোড় নেয়।

"আষাঢ়ের সন্ধ্যে" - রোমান্টিক বাংলা ছোট গল্প যেখানে ১০ বছর পর বর্ষার সন্ধ্যায় রাহুল আর মোনালিসা-র পুনর্মিলন ঘটে। বৃষ্টিভেজা আবেগের মাঝে তাদের ভালোবাসার গল্প নতুন মোড় নেয়।

সম্পুর্ন্য গল্পটি পড়ুন: আষাঢ়ের সন্ধ্যে

শীতের রাজ্যের জাদু

"শীতের রাজ্যের জাদু: একটি মজাদার ছোটদের গল্প, যেখানে রাজা শীতল রূপকথার গল্পের মাধ্যমে শিশুদের জন্য শীতের রাজ্যে গরমের অনুভূতি এনে দেন।"

"শীতের রাজ্যের জাদু: একটি মজাদার ছোটদের গল্প, যেখানে রাজা শীতল রূপকথার গল্পের মাধ্যমে শিশুদের জন্য শীতের রাজ্যে গরমের অনুভূতি এনে দেন।"

সম্পুর্ন্য গল্পটি পড়ুন: শীতের রাজ্যের জাদু

Leave a Comment

অনুলিপি নিষিদ্ধ!