কল্পবিজ্ঞান গল্প এক বাড়িতে লুকিয়ে থাকা রহস্যের গল্প। অন্ধকার শক্তি, ভবিষ্যৎবাণী, এবং এক যুদ্ধের কাহিনী। বাংলা ছোট গল্পে এই রোমাঞ্চকর যাত্রায় যোগ দিন।

বাংলা ছোট গল্প

Home » বাংলা ছোট গল্প » ভবিষ্যতের ছায়া

ভবিষ্যতের ছায়া

কল্পবিজ্ঞান গল্প এক বাড়িতে লুকিয়ে থাকা রহস্যের গল্প। অন্ধকার শক্তি, ভবিষ্যৎবাণী, এবং এক যুদ্ধের কাহিনী। বাংলা ছোট গল্পে এই রোমাঞ্চকর যাত্রায় যোগ দিন।

কলকাতার উত্তরের এক নিস্তব্ধ পাড়ায় অবস্থিত বাড়িটি যেন নিজেই একটা রহস্যের আবরণ জড়িয়েছিল। স্থানীয়েরা বলত, বাড়িটিকে ‘রক্তের বাড়ি’ বলে। কিংবদন্তি আছে, বছরের পর বছর আগে এই বাড়িতে এক ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছিল। তবে সঠিক কাহিনী কেউ জানে না। কেবলই অন্ধকারের গভীরে হারিয়ে যাওয়া কিছু আঁকড়াল।

অনুভবের কলেজের শেষ বর্ষের ছাত্রী রিয়া সেনগুপ্ত একদিন তার বন্ধু রাহুলের সঙ্গে সেই বাড়িটি দেখতে যায়। রাহুলের পড়াশোনার জন্য দরকার হয় কিছু পুরনো বই, আর শোনা যায়, সেই বাড়িতে এক বিশাল লাইব্রেরি আছে। কিন্তু বাড়িটির ভিতরের পরিবেশ তাদেরকে ভীত করে তোলে। ধুলো জমে কালো হয়ে যাওয়া দেয়াল, ভাঙাচুরির চিহ্ন, সবকিছুই এক অদ্ভুত ভয়ের সঞ্চার করে।

তারপরও কৌতূহল জয় করে। তারা বাড়ির ভিতরে ঢুকে পড়ে। অন্ধকারের মধ্যেও বাড়িটির বিশাল আকৃতি তাদেরকে বিমুগ্ধ করে। ধীরে ধীরে তারা উপরের তলায় উঠতে থাকে। সেখানে পৌঁছেই তাদের চোখ ধাঁধিয়ে যায়। একটি বিশাল লাইব্রেরি! কাঠের বইয়ের আলমারিগুলো ধুলোতে ঢাকা হলেও, বইগুলো অক্ষত।

ভুতের বাংলা ছোট গল্প - রক্তিনী বাড়ির রহস্য: রক্তিনী বাড়ির ভয়াবহ রহস্য! এক মেয়ের জীবন এবং একটি শাপগ্রস্ত বাড়ির কাহিনী। বাংলা ভাষায় লেখা এই ভূতের গল্প আপনাকে ভয়ানকভাবে নাড়িয়ে দেবে। সম্পুর্ন্য বাংলা ছোট গল্পটি পড়তে এই লিংকটি ক্লিক করুন।

সেই রাতে তারা বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসে অনেক রহস্য নিয়ে। কিন্তু রিয়া, অজান্তেই, সেই বাড়ির প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ে। সেই রহস্যের জাল তাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছিল।

পরের দিন, রিয়া একা বাড়িটিতে ফিরে আসে। সাহস করে সে লাইব্রেরিতে ঢুকে পড়ে। বইয়ের ধুলো তার নাকে লাগছে, কিন্তু সে কিছুই টের পাচ্ছে না। একটা বই তার হাতে ধরে নেয়। বইটি খুলে দেখে সে অবাক হয়ে যায়। এটি কোনো সাধারণ বই নয়, এটি ভবিষ্যৎ সম্পর্কে লেখা একটি ডায়েরি।

ডায়েরির পাতাগুলো পড়তে পড়তে রিয়ার শরীর কাঁপতে শুরু করে। ডায়েরির লেখক, একজন বিজ্ঞানী, যে নাম ছিল অর্ণব সেন। তিনি ভবিষ্যৎ দেখতে পেতেন। তার লেখা অনুযায়ী, পৃথিবীর একটা বিশাল বিপর্যয় আসতে চলেছে। একটা অদৃশ্য শক্তি, যাকে তিনি ‘অন্ধকার’ নাম দিয়েছিল, পৃথিবীকে ধ্বংস করতে চায়। আর এই বাড়িটিই ছিল সেই অন্ধকারের শক্তির উৎস।

অর্ণব লিখেছিলেন, এই বাড়িটি তিনি নিজেই বানিয়েছিলেন। এখানে একটি বিশেষ ধাতু ব্যবহার করা হয়েছে, যা অন্ধকারের শক্তিকে আকর্ষণ করে। কিন্তু তিনি ভুল করেছিলেন। অন্ধকারের শক্তি এতটাই বেশি হয়েছিল যে, এটি তার ওপর আক্রমণ করেছিল। অর্ণব নিজের জীবন দিয়ে এই শক্তিকে আটকানোর চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু সফল হতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত তিনি নিজেরই তৈরি করা যন্ত্র দিয়ে বাড়িটিকে সিল করে দিয়েছিলেন।

রহস্য-রোমাঞ্চ বাংলা ছোট গল্প - অন্ধকার ঘর: রহস্য, রোমাঞ্চ, প্রেম, এবং প্রতিশোধের মিশ্রণ। একটি বাংলা ছোট গল্প যা আপনাকে চমকে দেবে। সম্পুর্ন্য বাংলা ছোট গল্পটি পড়তে এই লিংকটি ক্লিক করুন।

রিয়া ভয় পেয়ে গিয়েছিল। ডায়েরির শেষ পাতায় লেখা ছিল, “যদি কখনও এই বাড়িটি খোলা হয়, তবে অন্ধকার জেগে উঠবে।” আর সেই দিনটি এসে গিয়েছিল।

রাত হতে শুরু করেছে। বাড়িটিতে এক অদ্ভুত শব্দ শুরু হয়েছে। যেন কিছু একটা জেগে উঠছে। রিয়া ভীত হয়ে ওঠে। সে জানত, এবার তার আর ফেরার পথ নেই। অন্ধকারের সঙ্গে তার যুদ্ধ শুরু হয়ে গিয়েছে।

বাড়ির বাইরে বজ্রপাত শুরু হয়েছে। বাতির জ্বালা কমতে শুরু করেছে। অন্ধকার ঘনিয়ে আসছে। আর বাড়ির ভিতর থেকে এক অদ্ভুত আলো দেখা যাচ্ছে। রিয়া জানত, এবার তার সবচেয়ে বড় পরীক্ষা।

আলোটি ধীরে ধীরে জোরালো হতে লাগল। রিয়া ভয় পেয়ে চোখ বুঁজে নিল। কিন্তু ভয়ের চেয়েও বেশি ছিল কৌতূহল। ধীরে ধীরে সে চোখ খুলে দেখল, আলোর মাঝখানে একটা আকৃতি ধরা দিচ্ছে। সেটা ছিল একটা মানুষের আকৃতি, কিন্তু তার চেহারা দেখতে পাওয়া যাচ্ছিল না। শুধুই অন্ধকার।

আকৃতিটি ধীরে ধীরে রিয়ার দিকে এগিয়ে আসতে লাগল। রিয়ার শরীর জবরদস্তভাবে কাঁপছিল। সে পিছু হটতে চাইল কিন্তু পা নাড়াতে পারল না। আকৃতিটি এখন তার খুব কাছে। রিয়া চিৎকার করে উঠল।

হঠাৎ করেই বাইরে একটা জোরালো আওয়াজ হল। বজ্রপাতের আলোতে রিয়া দেখতে পেল, বাড়ির জানালা ভেঙে একটা আকৃতি ভিতরে ঢুকছে। সেটা ছিল রাহুল।

রাহুল দৌড়ে এসে রিয়াকে জড়িয়ে ধরে। তারপর দুজনে মিলে সেই অন্ধকার আকৃতির দিকে তাকাল। আকৃতিটি ধীরে ধীরে ছোট হতে লাগল, তারপর অদৃশ্য হয়ে গেল।

বাড়িটির ভিতর থেকে আবারও শান্তি ফিরে এল। কিন্তু রিয়া জানত, এটা শেষ নয়। অন্ধকার আবার ফিরবে, সে নিশ্চিত। তখন তাদের আরও প্রস্তুত থাকতে হবে।

রাহুলের সাহসে রিয়া কিছুটা শান্ত হল। তারা দুজনেই বুঝতে পারছিল, এই রহস্যের গভীরে আরও অনেক কিছু লুকিয়ে আছে। আর সেই রহস্য উন্মোচন করার জন্য তাদের আরও অনেক কষ্ট করতে হবে।

দিনের আলো ফুটতে শুরু করেছে। বাড়িটি এখনও অদ্ভুত এক নিস্তব্ধতায় নিমগ্ন। রিয়া ও রাহুল একে অপরের দিকে তাকিয়ে থাকে। তাদের মনে নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। কী এই অন্ধকার শক্তি? কেন এই বাড়িটিকে বেছে নিল? আর সবচেয়ে বড় প্রশ্ন, এখন তারা কী করবে?

ডায়েরিটি নিয়ে অনেকবার পড়তে শুরু করে রিয়া। অর্ণবের লেখা প্রতিটি শব্দ এখন তার কাছে এক রহস্যের জাল বুনে দিচ্ছে। সে বুঝতে পারছে, এই অন্ধকার শক্তি শুধু এই বাড়িটিকেই নয়, সমগ্র পৃথিবীকে ধ্বংস করতে পারে।

বাংলা রোমান্টিক ছোট গল্প - সপ্তম পত্র: দূরত্বের ভালোবাসা, স্বপ্নের সংগ্রাম, এবং জীবনের বাস্তবতার মধ্যে আটকে পড়া দুটি মন। এই রোমান্টিক বাংলা ছোট গল্পে আবেগের ছোঁয়া, স্মৃতির সুর, এবং অনিশ্চয়তার মিশেল। সম্পুর্ন্য বাংলা ছোট গল্পটি পড়তে এই লিংকটি ক্লিক করুন।

রাহুলের সাহায্য নিয়ে রিয়া বাড়িটির প্রতিটি কোণ খুঁটিয়ে দেখতে শুরু করে। তারা ডায়েরিতে লেখা বিভিন্ন সূত্র ধরে এগোতে থাকে। বাড়ির নিচতলায় একটি গোপন দরজা খুঁজে পায়। দরজাটি খুলে দেখে তারা অবাক হয়ে যায়। সেখানে একটি ছোট্ট ল্যাবরেটরি।

ল্যাবরেটরিতে অর্ণবের ব্যবহার করা যন্ত্রপাতিগুলো এখনও আছে। কিন্তু সবকিছুই ধুলোতে ঢাকা। ধীরে ধীরে তারা যন্ত্রপাতিগুলো পরিষ্কার করতে শুরু করে। হয়তো এখানেই অন্ধকার শক্তিকে পরাস্ত করার উপায় লুকিয়ে আছে।

রাত আবার নামতে শুরু করেছে। বাড়িটি আবারও তার ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে শুরু করেছে। কিন্তু এবার রিয়া ও রাহুল একা নয়। তাদের হাতে আছে অর্ণবের অসমাপ্ত কাজ শেষ করার দায়িত্ব। তারা জানে, পৃথিবীর ভবিষ্যৎ তাদের হাতেই।

ল্যাবরেটরির মধ্যে কাজ করতে করতে রাত গভীর হয়ে আসছিল। রাহুল ও রিয়া একেবারেই ভুলে গিয়েছিল যে তারা কোথায় আছে। শুধুমাত্র অর্ণবের অসমাপ্ত কাজ শেষ করার একটাই লক্ষ্য তাদের চোখে ভাসছিল।

অনেক চেষ্টার পর অবশেষে তারা একটি যন্ত্রের রহস্য উন্মোচন করতে পারল। ডায়েরির কিছু পাতা থেকে তারা বুঝতে পেরেছিল, এই যন্ত্রটিই অন্ধকার শক্তিকে আটকাতে পারে। কিন্তু যন্ত্রটির শক্তি চালু করার জন্য একটি বিশেষ ধাতু দরকার, যা অর্ণব নিজেই তৈরি করেছিলেন।

বাড়ির বিভিন্ন জায়গা খুঁটিয়ে দেখার পর তারা সেই ধাতুটি পেল। এটি ছিল একটি ছোট্ট, অদ্ভুত আকৃতির পদার্থ। ধাতুটিকে যন্ত্রের মধ্যে রাখার পর তারা যন্ত্রটি চালু করল।

যন্ত্রটি চালু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ির ভিতরের পরিবেশ বদলাতে শুরু করল। আবারও সেই অদ্ভুত আলো দেখা গেল। কিন্তু এবার আলোটি ভিন্ন ছিল। এটি শান্তি ও নিরাপত্তার বার্তা বহন করছিল।

ধীরে ধীরে আলোটি জোরালো হতে লাগল। তারপর হঠাৎ করেই সব আলো নিভে গেল। এক মুহূর্তের জন্য সম্পূর্ণ অন্ধকার। তারপর আবার আলো ফিরল। কিন্তু এবার পরিবেশ পুরোপুরি বদলে গিয়েছিল। বাড়িটি পরিষ্কার, সুন্দর দেখাচ্ছিল।

রিয়া ও রাহুল একে অপরের দিকে তাকিয়ে থাকল। তারা বুঝতে পারল, তারা জিতে গিয়েছে। অন্ধকার শক্তিকে পরাস্ত করা হয়েছে।

কিন্তু তাদের মনে একটা প্রশ্ন জাগল। যদি অন্ধকার শক্তি আবার ফিরে আসে? সেই সম্ভাবনা একেবারেই উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তাই তারা সিদ্ধান্ত নিল, এই বাড়িটিকে আর কখনও একা রাখবে না। তারা এখানেই থাকবে, অন্ধকারের প্রত্যাবর্তনের জন্য প্রস্তুত থাকবে।

এভাবেই শেষ হল রিয়া ও রাহুলের অদ্ভুত অভিজ্ঞতা। কিন্তু এই অভিজ্ঞতা তাদেরকে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করে রেখেছিল। কারণ তারা জানত, অন্ধকারের যুদ্ধ এখনও শেষ হয়নি।

এই রকম চিত্তাকর্ষক বাংলা ছোট গল্প -এর আপডেট পেতে আমাদের WhatsApp চ্যানেল জয়েন করুন।

About The Author

নতুন বাংলা ছোট গল্প

গুপ্ত চক্রান্ত

"গুপ্ত চক্রান্ত" একটি আঁকড়ান রহস্য রোমাঞ্চ বাংলা ছোট গল্প, যেখানে রহস্য, সাসপেন্স ও টুইস্টের মাধ্যমে এক উত্তেজনাপূর্ণ হত্যাকাণ্ডের খোঁজ চলছে। গল্পটি আপনার মনোযোগ আকর্ষণ করবে।

"গুপ্ত চক্রান্ত" একটি আঁকড়ান রহস্য রোমাঞ্চ বাংলা ছোট গল্প, যেখানে রহস্য, সাসপেন্স ও টুইস্টের মাধ্যমে এক উত্তেজনাপূর্ণ হত্যাকাণ্ডের খোঁজ চলছে। গল্পটি আপনার মনোযোগ আকর্ষণ করবে।

সম্পুর্ন্য গল্পটি পড়ুন: গুপ্ত চক্রান্ত

ভালোবাসার গলি

"ভালোবাসার গলি" একটি হৃদয়স্পর্শী রোমান্টিক বাংলা ছোট গল্প, যেখানে কলকাতার রঙিন সড়কে প্রেমের এক নতুন অধ্যায়ের শুরু হয়, যা শহরের ঐতিহ্য এবং সম্পর্কের মধুরতা তুলে ধরে।

"ভালোবাসার গলি" একটি হৃদয়স্পর্শী রোমান্টিক বাংলা ছোট গল্প, যেখানে কলকাতার রঙিন সড়কে প্রেমের এক নতুন অধ্যায়ের শুরু হয়, যা শহরের ঐতিহ্য এবং সম্পর্কের মধুরতা তুলে ধরে।

সম্পুর্ন্য গল্পটি পড়ুন: ভালোবাসার গলি

বন্ধুত্বের জাদু

"বন্ধুত্বের জাদু" একটি মনোমুগ্ধকর ছোটদের গল্প। এই রূপকথার গল্পে স্নেহা ও তার বন্ধুরা জাদুকরি উপত্যকাকে বাঁচাতে সাহস, ভালোবাসা ও বন্ধুত্বের মাধ্যমে এক অনন্য অভিযানে পা বাড়ায়।

"বন্ধুত্বের জাদু" একটি মনোমুগ্ধকর ছোটদের গল্প। এই রূপকথার গল্পে স্নেহা ও তার বন্ধুরা জাদুকরি উপত্যকাকে বাঁচাতে সাহস, ভালোবাসা ও বন্ধুত্বের মাধ্যমে এক অনন্য অভিযানে পা বাড়ায়।

সম্পুর্ন্য গল্পটি পড়ুন: বন্ধুত্বের জাদু

Leave a Comment

অনুলিপি নিষিদ্ধ!