চিঠির শেষ লাইন

কলকাতার এক ঝড়জল রাতে, বইয়ের তাক থেকে একটা পুরনো চিঠি পড়ে গেল মেঘলার পায়ের কাছে। ধুলো মুছে সে দেখল — লেখাটি ছিল আর্যর, যাকে সে হারিয়েছিল পাঁচ বছর আগে।

চিঠির প্রথম লাইনেই লেখা — “তুই একবার পিছন ফিরে দেখলে হয়তো আমি এখনো দাঁড়িয়ে থাকতাম।” মেঘলার বুকের মধ্যে হঠাৎ ঝড় উঠে গেল। স্মৃতিরা একে একে ফিরে এলো।

পাঁচ বছর আগে, এক ঝগড়ার শেষে আর্য বলেছিল, “তুই যদি আমাকে ভালোবাসিস, তাহলে ফিরে আসবি।” কিন্তু অভিমানে মেঘলা আর ফিরেই আসেনি। চিঠিটা সেই দিনই লেখা হয়েছিল।

চিঠির প্রতিটা শব্দ যেন মেঘলার হৃদয়ে ছুরি চালাচ্ছিল। সে আর অপেক্ষা করল না — রাতেই ট্রেন ধরল শান্তিনিকেতনের দিকে, যেখানে শেষবার আর্যকে দেখা গিয়েছিল।

স্টেশনে নেমেই মেঘলা দেখল এক চা দোকানে বসে আছে আর্য। চুলে সাদা রং, চোখে পরিচিত বিষণ্ণতা। সে তাকিয়েই রইল মেঘলার দিকে — যেন সে কখনো ভুলেনি।

আর্য শান্ত গলায় বলল, “চিঠির শেষ লাইনটা পড়েছিস?” মেঘলা চোখের জল মুছল — “না, পড়া হয়নি।” আর্য বলল, “আমি আজও তোকে ভালোবাসি — যদি ফিরিস, আমি এখানেই থাকব।”

মেঘলা এক পা এগিয়ে বলল, “তাহলে আমি ফিরে এসেছি, আর্য।” আকাশে হালকা বৃষ্টি পড়ছিল, কিন্তু দুজনের মধ্যে তখন একটাই ঋতু — ভালোবাসার নীরব বর্ষা।

নতুন নতুন বাংলা ছোট গল্প পড়তে এবং মনমুগ্ধকর অডিও স্টোরির স্বাদ উপভোগ করতে আমাদের হোয়াটস্যাপ চ্যানেল জয়েন করুন!