শ্রীনিবাস বেশ কিছুদিন ধরে অনুভব করছিলেন যে তার জীবনটা ঠিক যেমন থাকা উচিত, তেমন নয়। তার জীবনে একটি অস্বচ্ছ ক্লান্ত বা মেহের ব্যবস্থা অনুভব করছিলেন, যেটা তাকে অবাক করছিল। শ্রীনিবাস বেদানন্দের জীবনের এই রাতটি ছিল একটু আলাদা। সামনে এক অজানা রহস্য অপেক্ষা করছিল। সেদিন রাতে শ্রীনিবাস তার ছোট্ট ফ্ল্যাটের ব্যালকনি-তে বসে আকাশের দিকে তাকিয়ে ছিল। আসলে এই রাতে শ্রীনিবাস কোন একটা গোপন চিন্তা নিয়ে চিন্তিত ছিল। তার মনে অনেকদিন ধরে একটা অশান্তির বাদল ঘনীভূত হচ্ছিল, যা মনের মধ্যে তুমুল আলোড়ণের সৃষ্টি করছিল। তার মধ্যে একটি অজানা ভয়ের সন্দেহও ছিল, যা শুরু হয়েছিল তার ব্যক্তিগত সামগ্রিক জীবনের প্রথম দিন থেকে।
কিন্তু এই সন্দেহ কী ছিল, সে জানতে পারেননি; সে বলতে পারেননি। কারন এই সন্দেহ মনের অবচেতন মনে গোপন রেখে দেওয়া ছিল। কিন্তু আজকের রাতটা আর অনেক বেশি মিষ্টি ছিল। এক ধরণের অবাক অশ্চর্যের আশ্চর্যের মিশ্রণে ভরা ছিল। সে জানতে চাইতেছিল, সে নিজে কোন কথা নিয়ে এত চিন্তিত, এত অনিশ্চয়তা অনুভব করছে। এই অজানা ভয়ের অনুভূতি তার মনে দাঁড়াচ্ছিল, তার কাছে জীবন একটি অবিশ্বাস্য রহস্য হতে উত্থান করছিল। সে নিজেকে জোরে ধরে একটি সাধারণ মানুষ হিসেবে অনুভব করতে চেষ্টা করল। তার চেহারায় বড় একটা সংশয় ও অবিশ্বাসের ছাপ থাকতেই শুরু হয়ে গেছিল।
তারপর কিছুদিন কেটে গেছে। একদিন হঠাৎ করেই তার জীবনে আসে এক অজানা ই-মেইল, যা তাকে চমকে দেয়। সেই ই-মেইলটা পাঠানো হয়েছে একটা নাম থেকে, যা তার নিজের নামের এক আদ্যাক্ষর যুক্ত রয়েছে – শ্রীনিবাস-বি। ই-মেইলটা পড়তে গিয়ে শ্রীনিবাসের মুখে কৌতূহল আর বিভ্রান্তির ছায়া পড়ল। মেইলে লিখা ছিল, “হ্যালো শ্রীনিবাস, আমি তোমার জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বার্তা রেখেছি। আমি আশা করছি তুমি এটা সঠিক ভাবে গ্রহণ করবে। সতর্কতার সাথে পারবে এবং যদি তোমার কোনো প্রশ্ন থাকে, তাহলে আমি চাই সেই প্রশ্নগুলি তোমার মুখে আসুক। আশা করি তুমি আমার এই বার্তার গুরুত্ব সম্পর্কে চিন্তা করবে এবং যথাযথ পদক্ষেপ নেবে। ধন্যবাদ, শ্রীনিবাস-বি।”
বাংলা রোমান্টিক ছোট গল্প - ভাঙা মন, নতুন দিগন্ত : এই রোমান্টিক বাংলা ছোট গল্পটি ১৯৩০-এর দশকের কলকাতায় এক চিত্রশিল্পী ও সাংবাদিকের প্রেম, প্রতারণা, এবং সমাজের দ্বন্দ্ব নিয়ে। স্নিগ্ধা ও অনিরুদ্ধের জীবনের সংকট ও পরিবর্তনের এক হৃদয়স্পর্শী কাহিনী। সম্পুর্ন্য রোমান্টিক বাংলা ছোট গল্পটি পড়তে এই লিংকটি ক্লিক করুন।
এই ই-মেইল পড়ার পর শ্রীনিবাসের মাথার ভেতরে একটি ঘোর অন্ধকার ছড়িয়ে পড়ল। কে ছিলেন এই শ্রীনিবাস-বি? কীভাবে তার নাম এই ই-মেইলে আসে? এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন – এই বার্তার গুরুত্ব কী? এই ই-মেইলের পরিধির মধ্যে কী রহস্য লুকিয়ে রয়েছে?
কিছুদিন পর সেই একই ই-মেইল আই-ডি থেকে আবার একটা ই-মেইল আসে। ই-মেইলে লিখা ছিল, “তুমি কি জানো, শ্রীনিবাস, যে তুমি একা নও? তোমার মতো দেখতে আরেকজন আছে, যিনি তোমার মতই সবকিছু করেন, কিন্তু তার উদ্দেশ্য ভিন্ন। সে তোমার জীবনটাকে একটু একটু করে নষ্ট করে দিচ্ছে। তুমি যদি সত্যটা জানতে চাও, তবে পিজি রোডের তোমার সেই পুরনো বাড়িতে এসো। সময় হল আগামীকাল রাত বারোটা।”
শ্রীনিবাসের মাথায় হাজারো প্রশ্ন ঘুরপাক খেতে লাগল। কে এই শ্রীনিবাস-বি? আর কেনই বা তাকে এভাবে সতর্ক করছে? সে ঠিক করল যে এই গোলকধাঁধার সমাধান তাকেই করতে হবে; এই রহস্যের পিছনে যা-ই থাকুক না কিনা, তাকে জানতেই হবে। তার মনের ভেতরে একটি জ্বালা জাগাতে থাকছিল, এই সব ঘটনা শ্রীনিবাস-কে তার নিজের কাছে ক্রমশ পরাধীন করছিল। পরদিন রাতে, শ্রীনিবাস পিজি রোডের সেই পুরনো বাড়ির দিকে রওনা দিল। বাড়িটা অনেক দিন ধরে পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে আছে, লোকমুখে শোনা যায় সেখানে নাকি অদ্ভুত সব ঘটনা ঘটে। ভেতরে ঢুকতেই, এক অদ্ভুত শীতল বাতাসের ঝাপটা লাগল। সবকিছুই যেন একটা রহস্যময় অনুভূতি এনে দিচ্ছিল। একেবারে সব আসলেই অদ্ভুত ছিল। বাড়ির কোণে একটি ছোট আলমারির মধ্যে কিছু অজানা রহস্য লুকিয়ে রয়েছিল। শ্রীনিবাস মনে মনে বিচার করতে থাকল, কী হতে পারে এই সবের পিছনের রহস্য? এই বাড়ির ভেতরের রহস্যটি কী কিছু মোকাবিলা করতে পারে শ্রীনিবাসের মনে তা জানা দরকার। তার চোখে একটি অন্ধকার এলো বিকিরণের মতো ঝলসানো। তিনি তার জীবনের এই অদ্ভুত রহস্যের সনাক্ত করা আরম্ভ করতে চাইলেন।
বাংলা ছোট গল্প - ছত্রিশ বছর পর : ৩৬ বছর পর বৃদ্ধাশ্রমে দেখা স্বামীর! ক্ষমা চাইল না সে, কিন্তু শেষ নিঃশ্বাসে হাতটা ধরেছিল। জেনে নিন এই মর্মস্পর্শী বাংলা গল্পের মাধ্যমে। সম্পুর্ন্য বাংলা ছোট গল্পটি পড়তে এই লিংকটি ক্লিক করুন।
হঠাৎ করেই, একজন লোকের ছায়ামূর্তি দেখা গেল। শ্রীনিবাস চমকে উঠল। সেই ছায়ামূর্তি আস্তে আস্তে তার সামনে এসে দাঁড়াল। তার চেহারাটা অবিকল শ্রীনিবাসের মত, শুধু চোখে একটা অদ্ভুত শীতলতা ছিল।
“তুমি কে?” শ্রীনিবাস জিজ্ঞেস করল।
“আমি শ্রীনিবাস-বি,” সেই ছায়ামূর্তি বলল, “তোমার মতোই একজন, কিন্তু আমি তোমার মতই সরল নই। আমি তোমার জীবনটা ধ্বংস করার জন্য এসেছি। আমি তোমার পরিচয় নিয়ে এমন সব কাজ করেছি, যার ফলে তুমি আর নিরাপদ নও।”
শ্রীনিবাস বিভ্রান্ত হয়ে পড়ল। “কিন্তু কেন? তুমি কেন আমার জীবনটা নষ্ট করতে চাইছো?”
শ্রীনিবাস-বি হাসতে হাসতে বলল, “কারণ এটা মজা লাগে। মানুষের জীবন নিয়ে খেলা করা আমার শখ। তুমি জানো না, কিন্তু আমি তোমার নামে অনেক খারাপ কাজ করেছি। তুমি জানো, সেই টমি নামের কুকুরটাকে আমি মেরেছি। তার মালিক তোমার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে। তুমি জানো না, আমি আরও কত কিছু করেছি, যার ফলে তুমি বিপদে পড়বে।”
শ্রীনিবাসের মনে অনেক উত্তেজনা ও সন্দেহ জাগতে লাগল। এই অজানা ছায়ামূর্তির পেছনের রহস্যের খোঁজ করতে হবে তার।
শ্রীনিবাসের মন ভেঙে গেল। তার নিজের চেহারার কেউ এমন করে তার জীবনটা নষ্ট করছে, এটা ভাবতেও তার মনটা কেঁপে উঠল। সে ঠিক করল, এই খেলা শেষ করতেই হবে। সে শক্তভাবে বলল, “আমি তোমার এই খেলা শেষ করব। তুমি যতই চেষ্টা কর, আমি আমার জীবনের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাব।”
শ্রীনিবাস-বি হেসে বলল, “দেখা যাক, তুমি কতটা সাহসী।”
শ্রীনিবাস নিজের জীবনের নিয়ন্ত্রণ ফেরানোর জন্য সমস্ত চেষ্টা শুরু করল। সে পুলিশে গিয়ে সব কিছু খুলে বলল, কিন্তু পুলিশ প্রথমে তার কথা বিশ্বাস করল না। শ্রীনিবাস নিজে প্রমাণ সংগ্রহ করতে লাগল। সে লক্ষ্য করল, শ্রীনিবাস-বি তার নামে বিভিন্ন জায়গায় ভুয়া পরিচয় ব্যবহার করছে। শ্রীনিবাস অনেক উত্তেজিত এবং নিরাশ মনে অনুভব করছিল, তার কোনো সহায়তা নেই, কেবল তার নিজের ইচ্ছা এবং সাহসের মাধ্যমে তিনি এই প্রতিকূল পরিস্থিতিতে সম্মুখিত হতে চেষ্টা করছিলেন।
ঐতিহাসিক কথাসাহিত্য বাংলা ছোট গল্প - ষড়যন্ত্রের জালে : এই বাংলা ছোট গল্পে 1930-এর দশকের কলকাতার পটভূমিতে এক তরুণী, সোনালিনী, এবং তার প্রেমিক, বসন্তলালের জীবনের দ্বন্দ্ব ও ষড়যন্ত্রের কাহিনী বর্ণনা করা হয়েছে। বসন্তলাল একজন বিপ্লবী, এবং সোনালিনী তাকে সতর্ক করার পর, তাদের জীবন এক নতুন মোড় নেয়। সম্পুর্ন্য বাংলা ঐতিহাসিক ছোট গল্পটি পড়তে এই লিংকটি ক্লিক করুন।
কিছুদিন পর, শ্রীনিবাস তার এক বন্ধু অরুণের সাহায্যে একটা গোপন ক্যামেরা বসাল, যা দিয়ে সে শ্রীনিবাস-বি-এর কার্যকলাপ ধরার চেষ্টা করল। একদিন, সে ধরা পড়ল। শ্রীনিবাস-বি যখন তার নামে আরেকটা খারাপ কাজ করতে যাচ্ছিল, তখন শ্রীনিবাস আর অরুণ সেই ঘটনার ভিডিও তুলে ফেলল। ভিডিওতে প্রত্যক্ষদর্শীরা স্পষ্টভাবে দেখতে পেলেন কীভাবে শ্রীনিবাস-বি তার ভুয়া পরিচয় ব্যবহার করে বিভিন্ন অসাধারণ অপরাধ প্রতারিত করছেন।
পুলিশ সেই ভিডিও দেখে অবাক হয়ে গেল। অবশেষে, তারা শ্রীনিবাস-বি-কে গ্রেপ্তার করল। শ্রীনিবাসের জীবনে একটু স্বস্তি ফিরে এল। তবে, তার মনে সবসময় একটা প্রশ্ন রয়ে গেল – কি করে তার মতো আরেকজন তৈরি হল? এই রহস্যের উত্তর সে কখনও পেল না।
তবে শ্রীনিবাস ঠিক করল, তার জীবনে যে অভিজ্ঞতা সে পেয়েছে, সেটা নিয়ে একটা বই লিখবে। সেই বইয়ের নাম হবে “দ্য ডে শ্রীনিবাস গুগলড হিমসেলফ”। এই বইয়ে সে তার জীবনের সেই অদ্ভুত রহস্যময় অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরবে। পাঠকরা আবার তার লেখা পড়ে মুগ্ধ হবে, আর তার জীবনের সেই অদ্ভুত ঘটনাটাও সবার সামনে আসবে।
শ্রীনিবাস জানত, তার জীবনের এই অভিজ্ঞতা তাকে আরও শক্তিশালী করে তুলেছে। তার জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু হল, আর তার লেখার মধ্য দিয়ে সে সবসময় মানুষের জীবনের রহস্যময় দিকটা তুলে ধরতে থাকবে।