চাঁদের নীল চাবি

রাতের ঝিরঝিরে হাওয়ায়, খুদের জানলার পাশে বসে ছিল পাঁচ বছরের ছোট্ট লাবণ্য। হঠাৎ সে দেখল—চাঁদের আলো একটানা একটা দাগ ফেলে চলেছে তার ঘরের মেঝেতে। ওটা কি স্রেফ আলো, না কিছু আরও?

সে ধীরে ধীরে আলোটার পেছনে হাঁটল। আলোটা যেন তাকে টেনে নিচ্ছিল! ঘরের কোণায় রাখা কাঠের পেটিকায় থেমে গেল আলো। পেটিকাটায় খোদাই করা—“কে খুলবে, সে জানবে সত্যি চাঁদের গল্প!”

লাবণ্য জোরে চাপ দিল পেটিকায়, খুলল না। তখন ওর খেয়াল পড়ল ঠাকুমার সেই পুরনো গল্পের—“একটা নীল চাবি আছে, যেটা শুধু স্বপ্ন দেখলে খুঁজে পাওয়া যায়।” লাবণ্য চোখ বন্ধ করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করল।

সে দেখল—একটা সাদা খরগোশ লাফাতে লাফাতে তাকে ডেকে বলছে, “চলো, চাঁদের পাহাড়ে নীল চাবি লুকোনো!” লাবণ্য খরগোশের পেছনে ছুটে চলল, চাঁদের কুঁড়েঘরের দিকে। কিন্তু এক জায়গায় থেমে গেল খরগোশ।

সামনে ছিল এক বিশাল শূন্যতা, নিচে ছড়িয়ে নীল জ্যোৎস্নার গর্ত। গর্তের ঠিক মাঝে জ্বলজ্বল করছে কিছু! খরগোশ ফিসফিস করে বলল, “ওটাই নীল চাবি, কিন্তু তুমি সাহসী তো?” লাবণ্য একটুও না ভেবে ঝাঁপ দিল।

তার চোখ খুলতেই দেখে—ওর হাতে একটা ঠান্ডা ধাতব জিনিস। হ্যাঁ, ওটাই নীল চাবি! সে দৌড়ে গেল কাঠের পেটিকাটার কাছে, চাবি লাগাল, ঘুরিয়ে দিল। পেটিকাটা খুলতেই ভেসে এল এক আশ্চর্য ঘ্রাণ, আর...

পেটিকার ভেতর ছিল চাঁদের এক টুকরো, নরম আলোয় মোড়ানো। সঙ্গে একটা ছোট চিরকুট—“তুমি স্বপ্ন দেখার সাহস রাখো, লাবণ্য। চাঁদ তোমার বন্ধুই।” লাবণ্য হাসল, চোখ বন্ধ করল, আর হারিয়ে গেল এক মিষ্টি ঘুমে।

শেষ ট্রেনটা