রোহন ছিল অদ্ভুত রকমের মেধাবী—একজন নিঃশব্দ কোডার, রাত জেগে সিস্টেম গড়ত, কাউকে স্পর্শ না করেই। অফিসে কেউ তাকে ভালো করে চিনত না। দায়িত্ব থেকে সবসময় নিজেকে সরিয়ে রাখত। কিন্তু একদিন… সব পাল্টে গেল।
প্রজেক্ট লিড হঠাৎ অসুস্থ, বড় ক্লায়েন্ট ডেডলাইন সামনেই। টিম ছড়াচ্ছে দিশেহারা ভাবে। ম্যানেজার তাকিয়ে রইল রোহনের দিকে—“তুই ছাড়া আর কেউ পারবে না।” রোহনের মুখ ফ্যাকাশে। সে প্রস্তুত ছিল না… তবুও ‘হ্যাঁ’ বলে ফেলল।
প্রথম মিটিংয়ে কথা আটকে গেল, চোখে চোখ পড়াতে কষ্ট। কেউ কেউ মুখ টিপে হাসল। রোহনের মনে হলো, সে একটা ভুল করেছে। তবু হার মানল না। চোখে অনিদ্রার ছাপ নিয়েই পরের সকালে ফিরল সে।
প্রথম কয়েকটা দিন শুধুই ভুল—ডেলিগেশন ব্যর্থ, টিম বিভক্ত, ইমেইলগুলো উত্তেজনাপূর্ণ। এক রাতে রোহন কফি হাতে চুপচাপ টিমের কাজ দেখছিল। হঠাৎ এক সহকর্মীর আইডিয়া তার মনে ঝড় তোলে… তখনই বদলে যেতে শুরু করে সব।
রোহন শিখে গেল, সবাইকে সুযোগ দিলে জাদু ঘটে। সে কথা বলতে শিখল, শুনত আরও ভালো করে। টিম ধীরে ধীরে এক হয়ে উঠল। ঠিক তখনই এল চূড়ান্ত চ্যালেঞ্জ—একটা বড় ক্র্যাশ, সময় একেবারে নেই। সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত তখনই নিতে হলো।
রোহন নিঃশব্দে নেতৃত্ব দিল—রাত জেগে সবাইকে একতাবদ্ধ রাখল। সে কাউকে বলল না কীভাবে কাজ করবে, বরং সবাইকে শুনে চালাল গেমপ্ল্যান। শেষরাতে সার্ভার লাইভ, ক্লায়েন্ট খুশি, টিম উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে। রোহন? সে শুধু চুপচাপ হাসল।
অফিস করিডোরে এখন রোহনের নাম সবাই জানে। কেউ বলে “স্যার”, কেউ কাঁধে চাপড়ায়। সে এখনো শান্ত, কিন্তু ভেতরে জানে—তাকে দরকার, তার নেতৃত্ব বদল আনে। এক সময়ের একাকী ছেলেটি আজ অনেকের প্রেরণা।