বৃষ্টিভেজা বিদায়

বৈশাখের গরম দুপুরে, কলকাতার ভিড়ে তারা দু’জন প্রথমবার দেখা করল। তার চোখে একটা অস্পষ্ট দুঃখ, আর তার হাসিতে অনাবৃত স্বপ্নের আভাস। এক ঝলকেই মনে হলো, এ দেখা মনের এক অজানা যাত্রার শুরু। কিন্তু সে কী জানত, সময় ছিল তাদের বিরুদ্ধে।

তারা রাতের রেশমি বাতাসে মিশে গিয়ে গল্প করল, স্বপ্নের শহর কলকাতার অজানা কোণে। মিষ্টি কথা আর অপ্রকাশিত ভালবাসার ঝলক। একে অপরের চোখে হারিয়ে যাওয়ার চেষ্টা, যেন সময় থেমে থাকুক। কিন্তু পথ চলা তখনো অনেক দূরে।

মহেন্দ্রপুরের সোনালী মাঠের কাছে, এক সন্ধ্যায় তারা বেদনার সীমায় দাঁড়াল। পারিবারিক বাধা, সামাজিক বাধা, সব মিলিয়ে দু’হৃদয়ের দুরত্ব বাড়তে লাগল। হৃদয়ে জেগে উঠল ছায়া, ভালোবাসার মাঝেই ছিল ব্যথার আগুন।

তারিখ বদলাতে লাগল, মিলনের স্বপ্ন যেন ধীরে ধীরে মুছে যেতে লাগল। কিন্তু মনের গভীরে এখনও সেই প্রথম দেখা, সেই প্রথম কথা। প্রেম যেন একটা অদেখা গহ্বর, যেখানে তাদের ছায়া ধীরে ধীরে মিলেছিলো না।

একদিন, কলকাতার বৃষ্টিতে সে এসে গেল অন্য কারো হাত ধরে। চোখের আর্দ্রতা লুকিয়ে, হৃদয় ভেঙে, সে একাকী হাঁটল ভাঙা সেতুর নিচে। ভালোবাসা ছিলো, কিন্তু তারা বুঝতে পারল, সময় কখনো তাদের ছিল না।

মাঝরাতে সে তার লেখা চিঠি পাঠালো — ‘তুমি ছিলে আমার জীবনের সবচেয়ে সুন্দর ভুল। আমি তোমাকে হারাইনি, কেবল ভুল সময়ে হারিয়েছি।’ পড়তে পড়তে চোখ ভিজে গেলো, আর ভালোবাসার গল্প যেন শেষ হয়ে গেলো।

সে চিঠি নিয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিল সে মানুষ, যে জানত— ভালোবাসা ছিল সত্যি, কিন্তু গল্পটা ছিল ভুল সময়ের।

ছায়ার নীচে