চাঁদের দুলুনিটা

পূর্ণিমার রাতে, ছোট্ট গ্রাম ধনিপুরে মেঘে ঢাকা আকাশের নিচে বসে কাঁদছিল লাবণী। তার খেলার দুলুনিটা ভেঙে গেছে। কিন্তু সে জানত না—এই রাতে এক আশ্চর্য অতিথি আসবে...

বাতাসে ভেসে এল মিষ্টি মধুর সুর। দূর আকাশে ঝলমলে রুপালি আলো! “কে?” চমকে উঠল লাবণী। চাঁদের আলোতে নামল সোনালি পাখার এক পরি—তার চোখে ছিল দুঃখের ছায়া।

পরিটি বলল, “আমার দুলুনি হারিয়ে গেছে, ঠিক তোমারটার মতো। দুলুনি ছাড়া আমি স্বপ্নে যেতে পারি না।” লাবণীর চোখ বড় বড় হয়ে গেল। দুজনেই হারিয়েছে, কিন্তু দুজনেই খুঁজছে কিছু গভীর...

পরিটি হাত ধরল লাবণীর। তারা উড়ল আকাশে, পেরোল মেঘ-পাহাড়, নদীর উপর দিয়ে। “তোমার দুলুনি চাঁদের পেছনে লুকানো,” বলল পরি। হঠাৎই এক গর্জন! কে ওখানে পাহারা দিচ্ছে?

এক বিশাল বাদুড় দাঁড়িয়ে চাঁদের গুহার দ্বারে! লাবণীর বুক কাঁপে, কিন্তু সে পরিকে দেখে সাহস পায়। সে বলল, “আমরা একসাথে আছি, ভয় কিসের?” তখন বাদুড়টা ধীরে ধীরে হেসে উঠল...

“তোমরা ভয় পেও না,” বলল বাদুড়, “আমি দুলুনিগুলোর রক্ষক। যারা হৃদয়ে ভালোবাসা রাখে, তাদের দুলুনি ফেরত পাই।” সে খুলে দিল গুহা—ভেতরে ঝুলছে রঙিন স্বপ্নের দুলুনি, দুটোই ঝলমল করছে!

পরি আর লাবণী আবার ফিরে এল ধনিপুরে। রাতে দুলুনিতে দুলে দুলে ঘুমিয়ে পড়ল লাবণী। আকাশে চাঁদ হাসল, বাতাসে ভেসে এল ফিসফিস স্বপ্নের গল্প... হয়তো কাল আবার দেখা হবে।

চোখের জল