এক ছিল ছোট্ট গ্রাম—নদীর ধারে, মাঠের পাশে। সেখানেই থাকত ছুঁইছুঁই নামে এক সাহসী মেয়ে। রাত হলে সে একা চাঁদের আলোয় বসে গল্প শুনত ঠাকুমার মুখে… কিন্তু একদিন ঠাকুমা হারিয়ে গেল।
“ঠাকুমা কোথায়?” ছুঁইছুঁই জিজ্ঞাসা করল সবাইকে। কেউ জানে না। কেবল পুকুরপাড়ে এক সাদা হাঁস কাঁদছিল। সে বলল, “তোমার ঠাকুমা কুয়াশার জঙ্গলে গেছে... চাঁদের জন্য।” ছুঁইছুঁইর চোখ জ্বলল সাহসে।
ছুঁইছুঁই হাঁসের পিঠে চেপে উড়ে গেল কুয়াশায় ঢাকা অরণ্যের দিকে। গাছেরা যেন কাঁপছে, পাতায় ফিসফাস… “ফিরে যা।” কিন্তু মেয়েটি থামল না। চাঁদের আলো তখন ফিকে হয়ে আসছে।
হঠাৎ দেখা দিল এক বিশাল ধোঁয়ামান ছায়ামূর্তি। “তোমার ঠাকুমা চাঁদকে ফেরাতে গিয়েছে, কিন্তু পথ ভুলেছে,” বলল সে। ছুঁইছুঁই বলল, “আমি চাঁদের পথ চিনে ফেলব!” কুয়াশা আরও ঘন হল।
হাঁসটি এক রহস্যময় দীঘির ধারে নামল। জলটা ছিল ঝকমকে, যেন আকাশে এক ফোঁটা চাঁদ পড়েছে। ছুঁইছুঁই জলে তাকাতেই ঠাকুমার মুখ ভেসে উঠল… সে কি তবে... চাঁদের খোঁজ পেয়েছে?
ঠাকুমা বলল, “চাঁদ হারিয়েছে তার হাসি, তাই আলো মুছে গেছে। যদি তুমি তাকে হাসাও, তবে আমিও ফিরব।” ছুঁইছুঁই চাঁদের দিকে তাকিয়ে ছোটবেলার গল্প গাইতে লাগল। কুয়াশা ধীরে ধীরে সরতে লাগল।
চাঁদের মুখে হাসি ফুটতেই আলো ছড়িয়ে পড়ল চারপাশে। ঠাকুমা ফিরে এল, হাঁস উড়ে গেল আকাশে। ছুঁইছুঁই বুঝল—ভালোবাসা, সাহস আর গল্পেই আলো ফিরে আসে। রাত জেগে তারা আজও সেই গল্প শোনে...