ছায়ার ঘর

একটা বৃষ্টি ভেজা সন্ধ্যে। দক্ষিণ কলকাতার পুরনো একবিংশ শতকের বনেদি বাড়ি। এসআই রুদ্র পালের ফোনে অজানা নম্বর থেকে একটা মেসেজ— "ঘরের আয়নাটা খেয়াল করো। মৃতরা সব দেখে।" রুদ্র থমকে যায়।

বাড়ির নাম 'ছায়ার ঘর' পাঁচ বছর আগে এখানেই খুন হয়েছিল বিখ্যাত লেখক শ্রীজাত মিত্র। আজ ফের সেই ঘরে গিয়ে আয়নার সামনে দাঁড়ায় রুদ্র। আয়নাতে তার নিজের চোখের পেছনে দেখা যায় কারো ছায়া।

ঘরটা ধুলোয় ঢাকা, কিন্তু আয়নাটা ঝকঝকে পরিষ্কার। হঠাৎ আয়নার ফ্রেমে হাত দিয়ে রুদ্র টের পায়—একটা খাঁজ! ভিতরে লুকানো পুরনো চিঠি:"আমি জানি কে আমায় মারবে। নামটা আয়নার পেছনে লেখা আছে।"

আয়নার পেছনে লেখা—"D. S." রুদ্র ভাবতে থাকে, এ কার নামের আদ্যক্ষর? হঠাৎ পেছনে দরজা খোলে। প্রবেশ করেন দীপালি সেন—শ্রীজাতের পুরোনো ব্যক্তিগত সম্পাদক। রুদ্র বলেন, “আপনি তো 'D. S.'?”

দীপালির ঠোঁটে অদ্ভুত হাসি। “সব লেখক খুন হয় না, কেউ কেউ নিজেকে মুছে ফেলে—নিজের গল্পের মধ্যে।” রুদ্র চিনে নেয়—এই হাসি আগেও কোথাও দেখেছে। কিন্তু কোথায়?

রুদ্র ব্যাগ থেকে বের করে সেইদিনের রিপোর্ট। শ্রীজাতের মৃত্যুর একদিন আগেই দীপালি দেশ ছেড়েছিলেন। কিন্তু মৃতদেহে থাকা আঙুলের ছাপ ছিল তাঁর! রুদ্র জিজ্ঞেস করে, “আপনি কীভাবে ফিরে এলেন?”

দীপালি ধীরে বলে, “আমি ফিরিনি রুদ্র, কখনও যাইনি। আমি এখানেই ছিলাম, গল্পের প্রতিটি ছায়ায়।” আলো ঝাপসা হয়, আয়নায় এখন রুদ্র নেই—শুধু দীপালি আর এক অন্ধকার ছায়া।

নীল ফুলের মুখ