কালের গর্ভ

বৃষ্টিভেজা কলকাতা রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙে একটি ফোন বেজে উঠল। রিসিভারে অচেনা কণ্ঠস্বর, "তোমার মেয়ে বিপদে।" হৃৎস্পন্দন দ্রুত হল শুভ্রর। ফোনের ওপারে শুধু কান্নার আওয়াজ। শহরের বুকে আতঙ্ক ঘনিয়ে এল, পরিচিত রাস্তাগুলোও যেন রহস্যময় হয়ে উঠল। শুভ্র কি পারবে তার মেয়েকে খুঁজে বের করতে?

পরের দিন সকালে, একটি পুরনো ডায়েরি হাতে এল শুভ্রর। পাতাগুলো হলুদ, হাতের লেখা অস্পষ্ট। সেখানে আঁকা একটি অচেনা গ্রামের ছবি, আর একটি নাম – "মালিনী"। কে এই মালিনী? ডায়েরির সূত্র ধরে শুভ্র রওনা হল অজানার পথে। শহরের কোলাহল পিছনে ফেলে, সে প্রবেশ করল এক রহস্যে ঘেরা জগতে।

গ্রামের পথে, শুভ্রর সাথে দেখা হল এক বৃদ্ধার। তাঁর চোখে গভীর বিষাদের ছায়া। বৃদ্ধা জানালেন, বহু বছর আগে এই গ্রামে একটি মেয়ে হারিয়ে গিয়েছিল – মালিনী। তার নিখোঁজ হওয়ার কাহিনি আজও রহস্যে ঢাকা। শুভ্রর মনে প্রশ্ন জাগল, মালিনীর কি কোনো সম্পর্ক আছে তার মেয়ের সাথে?

একটি পুরনো মন্দিরের ধ্বংসস্তূপের কাছে শুভ্র খুঁজে পেল একটি ছোট্ট পায়ের ছাপ – ঠিক তার মেয়ের জুতোর মতো। বুকের ভেতরটা ধক করে উঠল। কাছেই একটি ভাঙা খেলনা, মেয়ের প্রিয় পুতুল। তাহলে কি তার মেয়ে এখানেই কোথাও বন্দি? ভয় আর আশঙ্কার দোলাচলে শুভ্র এগিয়ে চলল।

মন্দিরের ভেতরে, আবছা অন্ধকারে শুভ্র দেখল একটি মূর্তি – দেবী দুর্গার। মূর্তির পায়ের কাছে একটি চিরকুট। তাতে লেখা, "সন্ধ্যা ছয়টা, পুরনো বটগাছ।" হাতের লেখাটা যেন মালিনীর ডায়েরির মতোই। কে অপেক্ষা করছে সেখানে? শুভ্রর মনে একটাই চিন্তা – তার মেয়ে।

ঠিক সন্ধ্যা ছয়টায় শুভ্র পৌঁছাল পুরনো বটগাছের নীচে। সেখানে কেউ নেই। হঠাৎ, পিছন থেকে একটি ঠান্ডা হাতের স্পর্শ। শুভ্র ঘুরে দেখল – এক রহস্যময়ী নারী, যার মুখ ঢাকা। তার হাতে একটি familiar পুতুল। "তোমার মেয়েকে বাঁচাতে চাও?" – শীতল প্রশ্ন ভেসে এল অন্ধকারে।

নারীটি হাসল, সেই হাসি যেন বহু যুগের জমাট বাঁধা কষ্ট। "মালিনীর অসমাপ্ত কাহিনি শেষ করার সময় এসেছে।" শুভ্র স্তম্ভিত। তবে কি মালিনীই ফিরে এসেছে অন্য রূপে? তার মেয়ের ভাগ্য কি সেই পুরনো রহস্যের সাথে বাঁধা? উত্তর খুঁজতে হলে অপেক্ষা করতে হবে...

অমাবস্যার আত্মা