কালীঘাটের রহস্য

বৃষ্টিভেজা কলকাতা, পুরনো আমলের এক বাড়ি। লাল ইটের দেওয়াল বেয়ে জল গড়িয়ে পড়ছে। ভেতরে নিস্তব্ধতা, শুধু টিকটিক করে ঘড়ির কাঁটা চলার শব্দ। প্রবীণ গোয়েন্দা রায়চৌধুরী কপালে চিন্তার ভাঁজ নিয়ে বসে। টেবিলের ওপর একটি চিরকুট – "সন্ধ্যা সাতটা, কালীঘাট।" এই রহস্যময় বার্তা কার, আর এর অর্থই বা কী?

কালীঘাটের মন্দিরের বাইরে ভিড়। সন্ধ্যার আবছা আলোয় রহস্য আরও ঘনীভূত। রায়চৌধুরী দেখলেন, এক যুবতী স্তম্ভের পাশে চুপচাপ দাঁড়িয়ে। তার চোখে ভয় আর হতাশা স্পষ্ট। কাছে যেতেই সে ফিসফিস করে বলল, "ওঁরা জানে... ওঁরা আমাকে ছাড়বে না।" তার কণ্ঠস্বর কি আসন্ন বিপদের পূর্বাভাস?

হঠাৎ এক ধাক্কা! মেয়েটি ভিড়ের মধ্যে অদৃশ্য হয়ে গেল। রায়চৌধুরী হতভম্ব। কে ছিল তারা? কেন মেয়েটিকে টেনে নিয়ে গেল? মন্দিরের ঘণ্টা বাজছে, যেন এক অমঙ্গলের সংকেত। গোয়েন্দা রায়চৌধুরী দ্রুত ভিড় ঠেলে এগিয়ে চললেন, প্রতিটি মুখ যেন সন্দেহজনক।

গঙ্গার ঘাটে ভাঙা নৌকার পাশে একটি রক্তাক্ত শাড়ি পাওয়া গেল। রঙ এখনও টাটকা। রায়চৌধুরীর বুক ধক করে উঠলো। মেয়েটি কি...? না, তিনি বিশ্বাস করতে চান না। কিন্তু প্রমাণ ক্রমশ কঠিন সত্যের দিকে ইঙ্গিত করছে। বাতাসে ভেসে আসা ধূপের গন্ধ যেন বিষাদের সুর বাজায়।

তদন্তের সূত্র ধরে রায়চৌধুরী পৌঁছালেন এক অন্ধকার গলিতে। পুরনো তালাবন্ধ একটি গুদামঘর। ভেতর থেকে ভেসে আসছে চাপা কান্নার আওয়াজ। দরজার ফাঁক দিয়ে দেখা গেল আবছা আলোয় বাঁধা অবস্থায় সেই যুবতীকে। কারা তাকে বন্দী করেছে, আর কেন?

রায়চৌধুরী দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকলেন। দেখলেন, দুজন লোক মেয়েটির চারপাশে দাঁড়িয়ে, হাতে ধারালো ছুরি। তাদের চোখ লাল, হিংস্র। মেয়েটি ভয়ে চিৎকার করে উঠলো। রায়চৌধুরী কি পারবেন একা তাদের মোকাবিলা করতে? বিপদ ক্রমশ বাড়ছে।

ঝটিকা গতিতে রায়চৌধুরী ঝাঁপিয়ে পড়লেন। ধস্তাধস্তি, চিৎকার। অবশেষে দুষ্কৃতীরা ধরা পড়ল। মেয়েটি ভয়ে কাঁপছে, তবে তার চোখে কৃতজ্ঞতার ঝিলিক। রহস্যের জাল ভেদ করে সত্য উন্মোচিত হল। কিন্তু এই ঘটনার পেছনের আসল কারণ কী ছিল?

ভুতুড়ে আমগাছ