ভুতুড়ে আমগাছ

গ্রামের প্রাচীন আমগাছের নিচে বিকেল বেলায় হঠাৎ অজানা গানের সুর ভেসে আসতে লাগল। সবার চোখ তখন আমগাছের দিকে; কেউ শুনতে পায়নি কখন কারা বাজাচ্ছে বেহালা। মেয়েরা কেঁপে উঠল, কেউ কেউ চুপ করে বসে রইল।

রাত নামতেই গোধূলির আলো ছিটিয়ে পড়ল পাড়ার মাটিতে। এক বুড়ো কাকুরানী বলল, “এই আমগাছের তলে হারিয়ে গেছে অনেক প্রাণ। আজও কেউ ফিরেনি।” সবার মুখে যেন অজানা ভয় জমে গেলো, রাতের অন্ধকার যেন আরও ঘনিয়ে এল।

তবে সেই রাতে ছোট্ট রাজুর দৃষ্টি একবার আমগাছের গা থেকে সরল না। কঠিন ছায়ার ভেতর অদ্ভুত একটা মুখ দেখে সে হু হু করে চেঁচিয়ে উঠল। সবাই ছুটে এলো, কিন্তু রাজু কোথাও পাওয়া গেলো না।

পরের দিন সকালে রাজুর খোঁজে গ্রামবাসী আমগাছ ঘিরে দাঁড়াল। ছুটে গেলো সেই অন্ধকার গহ্বরের দিকে—কিন্তু গহ্বরটা ছিলো কোথাও না। সবার মনে ধরা দিলো, রাজুর নিখোঁজের রহস্য এখানেই লুকিয়ে।

শোনাল গ্রামের বুড়ো এক মহিলা, “যখনই কেউ আমগাছের ছায়ায় ছাপিয়ে যায়, সে আর ফিরতে পারে না।” গ্রামের সবাই ভাবতে লাগল, আমগাছটা কি প্রকৃতপক্ষে অভিশপ্ত? রাতের নীরবতা যেন এক একরাশ ভয়ের গল্প খুলে দিচ্ছে।

রাত নামতেই আমগাছের নিচে আবার সেই বেহালা সুর ভেসে এলো। এইবার সবাই গিয়ে দেখল, সেই মুখটাই আসছে গাছের ছায়া থেকে, যেন কেউ আসছে তাদের ডেকে। গ্রামবাসী বুঝতে পারল—এটা আর কোনো গান নয়, কোনো ডাকা।

সেই রাত থেকে কেউ আর আমগাছের নিচে যেতে সাহস পায়নি। রাজু কখনো ফিরে আসেনি, শুধু গাছের ছায়ায় আজও যেন একটা আত্মার কান্না বাজে। গ্রামবাসীরা এখনও বলে, “সেখানে হারিয়ে যায় সে, যার সুর কখনো শেষ হয় না।”

চাঁদের দুলুনিটা