নীল পরী

রাত গভীর। গ্রামের সব আলো নিভে গেছে। ছোট্ট টোপা চুপচাপ খাটে শুয়ে ছিল। হঠাৎ জানালার পাশে এক নীল আলো ঝলমলিয়ে উঠল। সে দেখল—এক পরী উড়ছে! টোপা চোখ মেলল বিস্ময়ে...

নীল পরী বলল, “টোপা, সাহসী হলে চলো, তোমায় জাদু লাঠি দেখাব।” টোপার বুক ঢিপঢিপ করছে, কিন্তু কৌতূহলও তীব্র। “আমি আসছি,” সে ফিসফিস করে বলে। জানালা দিয়ে দুজন উড়ে চলল...

তারা এল এক রহস্যময় জাদু বনে। গাছে ঝুলছে আলো, ফুল গায় গান। পরী বলল, “এই বনে আছে এক হারানো স্বপ্ন, যেটা শুধু একজন সাহসী শিশু খুঁজে পেতে পারে।” টোপার চোখ জ্বলজ্বল..

হঠাৎ বনের গভীরে থেকে কালো ছায়া বেরিয়ে এল। পরী ফিসফিসিয়ে বলল, “ওরা স্বপ্ন চোর!” টোপা লাঠি খুঁজে নিতে ছুটল। কিন্তু ছায়ারা পিছনে পিছনে ধেয়ে আসছে! টোপা দৌড়াতে লাগল প্রাণপণে...

টোপা পড়ে যায়, লাঠিটা ছিটকে পড়ে। ঠিক তখন তার বুকের ভেতর থেকে আলো ঝলসে ওঠে—সে ভাবল মায়ের মুখ, দাদুর গল্প, গ্রামের গান। সেই আলোয় ছায়ারা মিলিয়ে গেল। পরী হেসে উঠল...

পরী বলল, “সত্যিকারের জাদু লাঠি তো তোমার সাহস আর ভালোবাসা।” তারা উড়ে চলে এল টোপার জানালায়। নিচে চেনা বাড়ি, অন্ধকারে মায়ের নিঃশব্দ প্রহর। টোপা তাকিয়ে বলল, “আমি আবার আসব?”

টোপা বিছানায় ফিরে এল। চোখে এখন ঘুমের ছায়া, মনে এক অনন্ত বনে হারানো-প্রাপ্তির গন্ধ। জানালার বাইরে রাত হাসে। পরীর আলো মিলিয়ে যায় ধীরে ধীরে... স্বপ্নে বাজে এক নরম মন্ত্র—“শুভ রাত্রি...”

স্মৃতির শেষ আলো