রাত দশটা। হাওড়া স্টেশন শুনশান। শুভ দাঁড়িয়ে, কাঁধে ব্যাগ, চোখে ক্লান্তি আর বুকভরা স্বপ্ন। আজই তার ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্টারভিউ দিল। কিন্তু মনের মধ্যে কাঁপুনি—ভুল হয়ে গেছে কী?
ইন্টারভিউ বোর্ডে একজন বলেছিলেন, “তোমার ইংরেজি দুর্বল।” সেই কথাগুলো ঘুরছে শুভর মনে। নিজেকে অপদার্থ মনে হচ্ছে। প্ল্যাটফর্মে বসে, মায়ের মুখটা ভেসে উঠল—“হেরে যাস না, মা তোর পাশে আছে।”
হঠাৎ ফোন বেজে উঠল। মায়ের নম্বর! ধরতেই গলা ভেসে এল—“বাবা, জ্যোতিষী বলেছে আজ রাতেই কিছু বড় হবে তোর জীবনে।” শুভ হাসল, কিন্তু বিশ্বাস করল না। ঠিক তখনই একটা ঘোষণা হল…
“শেষ ট্রেনটি প্ল্যাটফর্ম ৫-এ আসছে,” ঘোষণা হতেই শুভ ব্যাগ কাঁধে নিয়ে দৌড়ল। হোঁচট খেল, তবু উঠল। এটাই তো জীবন, পড়ে গেলে দাঁড়াতে হয়! কিন্তু ট্রেন ধরতে পারবে তো?
শেষ কামরার দরজা বন্ধ হচ্ছিল। শুভ ঝাঁপ দিল, ধাক্কা খেল, আর ঠিক তখনই এক যাত্রী হাত বাড়িয়ে টান দিল ওকে ভিতরে! হাপাচ্ছে শুভ, কিন্তু চোখে একরাশ সাহস। হাল ছেড়ে দিলে কী হতো?
সামনের সিটে বসে থাকা মানুষটা চেনা লাগছে। হ্যাঁ! ইন্টারভিউ বোর্ডের সেই অফিসার! শুভকে দেখে মুচকি হাসলেন—“তোমার জেদটাই তো আলাদা। কাল সকালে অফিসে আসো।” শুভ স্তব্ধ।
শুভ জানালার পাশে বসে, অন্ধকার ছেঁচে যাচ্ছে ট্রেনটা। চোখে জল, ঠোঁটে হাসি। মা বলেছিল, “আজ রাতেই কিছু বড় হবে”—হয়েছে। কখনো হাল না ছেড়ে, শেষ ট্রেনটাও জীবন বদলে দিতে পারে।