ডঃ সোনাক্ষী সেন, কলকাতার স্বনামধন্যা মনোবিজ্ঞানী, অবাক হয়ে গেলেন ডাক পত্রটি পড়ে। দার্জিলিং এর পাহাড়ের কোলে, এক বাংলোয় একটি আলোচনা সভায় আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে তাকে। আয়োজকের নাম – মিস্টার ভট্টাচার্য, এক রহস্যময় ব্যক্তিত্ব, যার সম্পর্কে খুব বেশি জানা যায় না। আলোচনা সভায় অংশগ্রহণকারীরা হলেন এমন কয়েকজন মানুষ্য, যাদের জীবনে ঘটেছে গভীর আঘাত। তাদের এই অন্ধকারাচ্ছন্ন অতীতকে মোকাবিলা করতে এবং সুস্থতা ফিরে পেতে সাহায্য করতেই এই আয়োজন।
সোনাক্ষী কিছুটা সন্দিহবান ছিলেন। এ ধরণের আলোচনা সভা কতটা কার্যকর, তা নিয়ে তার মনে সর্বদাই প্রশ্ন থাকত। তবে, নিজের রোগীদের সুস্থতার কথা চিন্তা করে তিনি এই আমন্ত্রণ গ্রহণ করতে রাজি হলেন।
দার্জিলিং পৌঁছে, বাংলোটি দেখে সোনাক্ষী আরো একবার চমকে উঠলেন। বিশাল, দ্বিতল বাড়িটি পুরোনো ঔপনিবেশিক আমলের স্থাপত্যের নিদর্শন। চারপাশে ঘন জঙ্গল, যা বাড়ির রহস্য আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে। বাড়ির ভিতরে ঢুকে তিনি দেখা করলেন মিস্টার ভট্টাচার্যের সাথে। লম্বা, চুপচাপ চেহারা, চোখ দুটি অস্বাভাবিকভাবে ঝলমল করছে। তিনি সোনাক্ষীকে স্বাগত জানালেন এবং আলোচনা সভা-এর বিষয় আউটলাইন করলেন।
অনুপ্রেরণামূলক বাংলা ছোট গল্প - সবুজের স্বপ্ন : মোটিভেশনাল বাংলা ছোট গল্প: শাওলির সবুজ স্বপ্ন; জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অনুপ্রেরণাদায়ক গল্প। শাওলি কীভাবে একটা গাছ থেকে শুরু করে সারা শহরকে সবুজে ছেয়ে ফেলে? সম্পূর্ণ বাংলা ছোট গল্পটি পড়তে এই লিংকটি ক্লিক করুন।
পাঁচজন অংশগ্রহণকারী – অবিনাশ, একটি দুর্ঘটনায় স্ত্রী-সন্তান হারানো সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার; জয়া, এক প্রতিষ্টিত উকিল, যে তার ক্যারিয়ারের শীর্ষে থাকাকালীন হঠাৎ করেই সব ছেড়ে ফেলে দেয়; ঋষি, এক অবসর আইপিএস অফিসার, যার অতীত জীবনে এক ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা লুকিয়ে আছে; মীরা, একটি বিখ্যাত অভিনেত্রী, যার ওপর হয়েছে ভয়ঙ্কর অ্যাসিড এটাক; এবং শান্তনু, একটি নিঃসন্তান দম্পতি, যাদের জীবনে ঘটেছে এক অবর্ণনীয় দুঃখ্যের ঘটনা।
প্রথম দিকে সবকিছুই ঠিকঠাক চলছিল। সোনাক্ষী তাঁর সাইকোথেরাপি সেশন চালিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু কয়েকদিন পরে, অদ্ভুত ঘটনাগুলি ঘটতে শুরু করল। রাতের অন্ধকারে কারো পা ফঁৎফঁটে চলার শব্দ, হঠাৎ হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে যাওয়া, আর অজানা কোনো ফিসফিসানি। সোনাক্ষী মনে মনে ভাবতে লাগলেন, এ কি কোনো হালুসিনেশন না কি আসল ঘটনা?
অবিনাশ হঠাৎ করে জানাল, তার ঘরে কে যেনো রাতে ঢুকে পড়েছিল। সোনাক্ষীর চোখ কপালে উঠে গেল। অবিনাশের ঘর তো তালাবদ্ধই ছিল! তিনি আরও চমকে উঠলেন যখন জানলেন, জয়াও একই অভিজ্ঞতা পেয়েছেন। ঘরে কেউ ঢুকেছিল ঠিকই, কিন্তু কোনো চিহ্ন, কোনো খোঁটাধরা নেই! এই ঘটনায় সবার মধ্যে একটা অস্বস্তি, একটা সন্দেহের জাল সৃষ্টি হল। ঋষি, সাবেক পুলিশ অফিসার হিসেবে, পরিস্থিতিটা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করলেন। তিনি মিস্টার ভট্টাচার্যের কাছে গিয়ে জানতে চাইলেন, বাড়িতে কোনো গোপন কামরা বা পথ আছে কি না। মিস্টার ভট্টাচার্য অস্বীকার করলেন, কিন্তু তার চোখের ফাঁকে একটা অস্বস্তি ধরা পড়ল সোনাক্ষীর নজরে।
বাংলা রোমান্টিক ছোট গল্প - ঝড়ো প্রেমের গল্প : এই রোমান্টিক বাংলা ছোট গল্পে লেখিকা ঐশী এবং সাংবাদিক অগ্নির প্রেমের অসাধারণ কাহিনী ফুটে উঠেছে। যুদ্ধক্ষেত্রের বীভৎসতা আর লেখিকার শান্ত জীবনের মিলনস্থলে তৈরি হয় এক অসাধারণ বন্ধন। ঝড়ো দিনেও টিকে থাকে তাদের ভালোবাসা, প্রমাণ করে যে সত্যিকারের প্রেম সব বাধা পার করে। সম্পূর্ণ বাংলা ছোট গল্পটি পড়তে এই লিংকটি ক্লিক করুন।
পরের দিন, সকালে জঙ্গলের মধ্যে মিলল মীরার ছেঁড়া টানাটানি। সবার মধ্যে আতঙ্ক আরও বেড়ে গেল। পুলিশকে খবর দেওয়ার জন্য ঋষি বাংলোর বাইরে যেতে চাইলেন কিন্তু তিনি দেখলেন, গেটের তালা ভাঙা। ল্যান্ডলাইন ফোনও কাজ করছে না। মিস্টার ভট্টাচার্য বোঝালেন, হয়তো কোনো গাছের डाल পড়ে লাইন কেটে গেছে। কিন্তু এই সব ঘটনায় সোনাক্ষী আর কিছু বিশ্বাস করতে পারছিলেন না।
রাতে, সেশনের পর, সোনাক্ষী মিস্টার ভট্টাচার্যের সঙ্গে একান্তে কথা বলার সুযোগ পেলেন। তিনি সোজাসাপ্টা জিজ্ঞাসা করলেন, “এই সব কি হচ্ছে মিস্টার ভট্টাচার্য? আপনি কি কিছু লুকাচ্ছেন না?” মিস্টার ভট্টাচার্যের মুখে একটা বিষণ্ন হাসি ফুটে উঠল। “ডাক্তার সেন,” বললেন তিনি, “আপনি কি জানেন, কখনও কখনও সত্যিটা এতটা ভয়ঙ্কর হয় যে, মিথ্যে বলাই ভালো লাগে।” আর কিছু না বলে তিনি চলে গেলেন, কথার মধ্যে রেখে গেলেন একটা গভীর রহস্যের ইঙ্গিত।
পরের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে সোনাক্ষী দেখলেন, শান্তনু নিখোঁজ। খোঁজাখুঁজি শুরু হল। ঠিক সেই সময়, ঋষি বাড়ির লাইব্রেরির এক গোপন দালান খুঁজে পেলেন। ভিতরে ঢুকে তারা যে দৃশ্য দেখলেন, তাতে সবার রক্ত জমাট বেঁধে গেল।
দালানটি ছিল ছোট্ট, জীর্ণ আর ধুলিময়। দেওয়ালে ঝুলছিল অসংখ্য পুরনো ফটো। প্রতিটি ফটোতেই ছিল এই আলোচনা সভা -এর অংশগ্রহণকারীরা, কিন্তু কয়েক বছর আগের। আরও চমকে লাগল সোনাক্ষীকে, যখন দেখলেন, প্রতিটি ফটোর পাশেই লেখা আছে একটি করে তারিখ – সেই তারিখগুলি ঠিক যখন তাদের জীবনে সেই ভয়ঙ্কর ঘটনাগুলি ঘটেছিল! অবিনাশের স্ত্রী-সন্তানের মৃত্যুর তারিখ, জয়ার ক্যারিয়ার ছেড়ে দেওয়ার তারিখ, ঋষির ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার তারিখ, মীরার অ্যাসিড এটাক হওয়ার তারিখ, আর শান্তনুর… শান্তনুর ছবির পাশে কোনো তারিখ ছিল না, তবে ছবির নিচে লেখা ছিল – ‘অসমাপ্ত’।
এই আবিষ্কারে সবার মাথায় একই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছিল – মিস্টার ভট্টাচার্য কি তাদের অতীতের ট্রাজেডিগুলোর সাথে কোনোভাবে জড়িত? আর শান্তনুর অদৃশ্য হওয়ার সাথে এই রহস্যের কি সম্পর্ক?
আচমকা চিৎকারের শব্দে সবার চমক লাগল। ঋষি ছুটে গিয়ে দেখলেন, মীরা দরজার কাছে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে আছেন। তার হাতে ছিল একটি পুরনো ডায়েরি।
ডায়েরিটি খুললেন সোনাক্ষী। কয়েক পাতা পড়েই তার চোখ কপালে উঠে গেল। ডায়েরিটি লিখেছিলেন মিস্টার ভট্টাচার্য।
ডায়েরিতে লেখা ছিল মিস্টার ভট্টাচার্যের নিজের অতীতের কথা। তিনি ছিলেন একজন বিখ্যাত মনোবিজ্ঞানী, যিনি মানুষের অন্ধকার দিক নিয়ে গবেষণা করতেন। একদিন তিনি একটি তত্ত্ব নিয়ে কাজ শুরু করেন – মানুষের চরম অতীতের ঘটনা কিভাবে তাদের বর্তমানকে প্রভাবিত করে। এই গবেষণার জন্য তিনি কয়েকজন লোককে নির্বাচন করেন, যাদের জীবনে ঘটেছে ভয়ঙ্কর ট্রাজেডি। তিনি তাদের অজান্তেই বিভিন্ন পরিস্থিতির সৃষ্টি করে তাদের অতীতের স্মৃতি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেন। কিন্তু পরীক্ষাটি ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করে। একের পর এক অংশগ্রহণকারী মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। একজন এমনকী আত্মহत्या করেন। এই ঘটনার পর ভট্টাচার্য গবেষণা বন্ধ করে দেন এবং লোকচক্ষুর আড়ালে গায়েব হয়ে যান।
অনুপ্রেরণামূলক বাংলা ছোট গল্প - স্মৃতির তালা খুলে : মোটিভেশনাল বাংলা ছোট গল্প: "স্মৃতির তাল খুলে" শোকের অন্ধকারে মেয়ে খুঁজে পেল বাবার গোপন শিল্পী মন ও নিজের হারিয়ে ফেলা স্বপ্ন। এই গল্পে আছে: স্বপ্ন পুনরুদ্ধার, আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি, সৃজনশীলতার আহ্বান, পরিবারের ভালোবাসা, জীবনের নতুন শুরু আজই পড়ুন! সম্পূর্ণ বাংলা ছোট গল্পটি পড়তে এই লিংকটি ক্লিক করুন।
কিন্তু তিনি গবেষণাটি পুরোপুরি ভুলতে পারেননি। বছরের পর বছর ধরে তার মনে একটা অপরাধ बोध জেঁকে বসে। সেই অপরাধ বোধ থেকেই তিনি এই আলোচনা সভা-এর আয়োজন করেন। তিনি আগের অংশগ্রহণকারীদেরই আবার ডাকেন, তবে এবার তাদের সাহায্য করার জন্য। তিনি তাদের অতীতের স্মৃতি ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবেন, কিন্তু এবার তা করবেন সঠিক পদ্ধতিতে, চিকিৎসা বিজ্ঞানের সাহায্য নিয়ে। কিন্তু মনে হয়, পরিস্থিতি আবারও তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। শান্তনু কোথায়? আর মীরার হাতে পাওয়া ডায়েরিটির কী সিগ্নিফিকেন্স?
সোনাক্ষী জানতেন, তাকে দ্রুত কাজ করতে হবে। তিনি ঋষিকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ির ভিতরে আরও খোঁজাখুঁজি শুরু করলেন। কিছুক্ষণ পর, বাড়ির নীচের তলায় একটি ছেঁকা ঘরের সন্ধান পেলেন তারা। ভিতরে ঢুকে তারা চমকে উঠলেন।
ঘরটি ছিল অন্ধকার আর ধুলিময়। একমাত্র আলোক রশ্মি ঢুকেছিল একটি ফাটোক খড়কি জানালার ফাঁক দিয়ে। ঘরের মাঝখানে বাঁধা ছিল শান্তনু। তার চোখ বন্ধ, মুখ থামা। কিন্তু চোখের কোণে একটা ভীতির ছায়া ফুটে আছে।
“শান্তনু!” চিৎকার করে উঠলেন সোনাক্ষী। শান্তনুর চোখ খুলল। চোখে অসম্ভব বিস্ময়।
“আপনারা এখানে? কীভাবে?” কাঁটা গলায় বলল শান্তনু।
“এরপরের গল্পটা পরে শোনা যাবে,” বললেন ঋষি, শান্তনুকে খুলতে ব্যস্ত হয়ে। “আগে আপনাকে এখান থেকে বের করতে হবে।”
কিন্তু ঠিক সেই সময়, দরজার আড়াল থেকে একটা গাঢ়, ঠাণ্ডা হাসি ভেসে এল। সোনাক্ষী ও ঋষি চমকে তাকালেন। দরজার ফাঁক দিয়ে দেখা গেল, মিস্টার ভট্টাচার্য দাঁড়িয়ে আছেন, তার হাতে একটি পুরনো রিভলবার। চোখ দুটি জ্বলজ্বল করছে, মনে হয় যেন সম্পূর্ণ পাগল হয়ে গেছেন।
“খেলা শেষ হল না, ডাক্তার সেন,” বললেন মিস্টার ভট্টাচার্য, রিভলবারটা সোনাক্ষীর দিকে তাক করে। “আপনি সবটা জেনে ফেলেছেন। এখন আপনাকেও এই গেমের অংশ হতে হবে।”
সোনাক্ষী চোখ বড় বড় করে তাকালেন। পরিস্থিতি একেবারেই ভালো লাগছে না। নিজের মনকে শান্ত রাখার চেষ্টা করে বললেন, “মিস্টার ভট্টাচার্য, আপনি কি করছেন? আপনি যে সাহায্য করতে চেয়েছিলেন, আমি তো সেটাই করছিলাম।”
মিস্টার ভট্টাচার্য হাসলেন, একটা বিষণ্ন হাসি। “সাহায্য? না, ডাক্তার সেন, আমি সাহায্য করতে চাইনি। আমি তাদের শাস্তি দিতে চেয়েছিলাম। সেই সব মানুষের, যাদের অবহেলায় আমার গবেষণা নষ্ট হয়ে গিয়েছিল।”
এই কথা শুনে সোনাক্ষী বুঝতে পারলেন, মিস্টার ভট্টাচার্য সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছেন। তিনি আর কোনো যুক্তিবাদ শুনতে রাজি নেই। এখন তাকে থামানোর একমাত্র উপায় – কৌশল।
“আচ্ছা, ঠিক আছে,” বললেন সোনাক্ষী, হাত উঁচু করে আত্মসমর্পণের ভঙ্গি করে। “আমি গেম খেলব। কিন্তু তার আগে, একটা কথা শুনুন, মিস্টার ভট্টাচার্য। আসল শাস্তি আসে না শাস্তি দেওয়ার মধ্য দিয়ে। আসে না কারো অতীতের সাথে খেলা করে। আসল শাস্তি আসে নিজের ভুল স্বীকার করে, আর নিজেকে শোধরানোর মধ্য দিয়ে।”
মিস্টার ভট্টাচার্যের চোখ দুটি সরু হয়ে গেল। সোনাক্ষীর কথাগুলো তার মনে একটা ফাটল ধরল যেন।
“আপনি ঠিক বলছেন, ডাক্তার সেন,” কাঁটা গলায় বললেন মিস্টার ভট্টাচার্য, রিভলবারটা একটু নিচে নামিয়ে। কিন্তু তার চোখে এখনও একটা পাগলামি ঝলমল করছে।
“আমি ভুল করেছি। আমি নিজের অহংবোধে অন্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। মানুষের মনের সাথে খেলা যায় না, সেটা আমি বুঝতে পারিনি।”
মিস্টার ভট্টাচার্যের এই পরিবর্তনে কিছুটা স্বস্তি পেলেন সোনাক্ষী। তিনি ঋষিকে ইশারা করলেন। ঋষি বুঝে গেলেন। দ্রুত এগিয়ে গিয়ে তিনি মিস্টার ভট্টাচার্যের হাত থেকে রিভলবারটা কেড়ে নিলেন। মিস্টার ভট্টাচার্য কোনো প্রতিবাদ করলেন না। তিনি হা হা করে ফেললেন, একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললেন, যেন একরাশ অপরাধ বোধ বেরিয়ে এল।
পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে নিল। মিস্টার ভট্টাচার্যকে গ্রেফতার করা হল। শান্তনুকে উদ্ধার করা হল। অন্য অংশগ্রহণকারীরাও বাড়ি ফিরে গেলেন, তবে তাদের মনের গভীরে একটা ভীতি থেকে গেল এই অদ্ভুত অভিজ্ঞতার।
সোনাক্ষী কলকাতায় ফিরে এলেন। কিন্তু দার্জিলিং এর সেই আলোচনা সভা-এর ঘটনা তাকে মুছে ফেলা কঠিন হয়ে গেল। এই ঘটনা তাকে শিখিয়ে দিল, মানুষের মন কতটা জটিল জায়গা। অতীতের ক্ষত সহজে সারে না, কখনও কখনও সেই ক্ষতই হয়ে ওঠে মানুষের বর্তমানকে নিয়ন্ত্রণকারী শক্তি।
এই অভিজ্ঞতা থেকে সোনাক্ষী নিজের চিকিৎসা পদ্ধতিতেও কিছু পরিবর্তন আনলেন। রোগীদের অতীতের কাহিনী আরও মনোযোগ দিয়ে শোনা শুরু করলেন। তিনি বুঝতে পারলেন, কখনও কখনও মানুষের সুস্থতার চাবিকাঠি লুকিয়ে থাকে তারই অতীতের কোনো অন্ধকার কোণে।