কলকাতার শহর থেকে একটু দূরে, একটা শহরতলি নিশ্চিন্দিপুর। নিশ্চিন্দিপুরের দু-পাশে গাছে ঢাকা রাস্তার শেষে একটি পুরানো বটগাছের তলায় আছে এক ছোট চায়ের ক্যাফে – ‘আধুনিক কবি’। লেখক আকাশ, খ্যাতি আর টাকার দৌলতে সে পরিপূর্ন্য, ঠিক সেই সময়ই তার জীবনে ঢেউ খেলে ঢুকে পড়ে ঐশী।
এক দুপুরবেলা, ক্যাফে-র এক কোণায় বসে কফি আর লেখার খাতা নিয়ে মগ্ন ছিল আকাশ। ঠিক সেই সময় ঐশী এসে তার পাশেই বসে পড়ে। আকাশ চমকে উঠলো। কিন্তু ঐশী একটু বিচলিত না হয়েই তার হাত থেকে খাতটা টেনে নিয়ে পড়তে শুরু করলো! প্রথমে রাগে গিয়েছিল আকাশ, কিন্তু ঐশীর উজ্জ্বল হাসি আর নিঃশব্দ মুগ্ধতা দেখে থমকে গেল। রোদে ঝলমলে দুটি চোখ, চুলে গাঁথা একটা গোলাপ ফুল – ঐশী ঠিক যেন কোন রূপকথার রাজকুমারী।
যেন প্রাণবন্ত রঙের একটি বৈচিত্র্যদর্শন। হাতের কাকুকার্য করা একটি হালকা সাদা-নীল রঙের চুড়িদার পরে আছে সে, চুড়িদারের প্রতিটি কলায় ঐতিহ্যের নৃত্য। তার চোখ, অন্ধকার আকাশের মত, জ্ঞান এবং স্বপ্নের গভীরতা ধরে রাখে। তার হাতে শোভিত সুন্দর মেহেন্দির অঙ্কন, প্রেম এবং উদযাপনের গল্প বলে। কপালে একটা ছোট কালচে লাল টিপ্, সে যেন শৈল্পিকতার জীবন্ত ক্যানভাস।
সেদিনই, অচেনা মেয়েটির সঙ্গে, কফির কাপ আর কথার ফ্রেমে গড়ে উঠলো এক অদ্ভুত বন্ধন। দিনের পর দিন “আধুনিক কবি” ক্যাফেতে দেখা হতে লাগলো আকাশ আর ঐশী। লেখা নিয়ে আলোচনা, জীবনের গল্প, অদূর ভবিষ্যতের স্বপ্ন – সবকিছুই ভাগ করে নিতেই তাদের সম্পর্ক আরো গভীর হতে লাগলো। চা-এর কাপ আর কেকের টুকরোর সঙ্গে তাদের মধ্যে এক অদ্ভুত সম্পর্ক গড়ে উঠল – লেখা ছাড়াও অনেক কিছুই তাদের এক করে বাঁধতে পারে।
আকাশ রোমান্টিক উপন্যাসের লেখক, কিন্তু তার প্রেমের গল্পগুলো কাগজেই আটকে থাকতো। বাস্তবে তার জীবন ছিল নিঃসঙ্গ, রুক্ষ। ঐশীর আগমনে তার জীবনে এলো নতুন রং। ঐশী ছিল ঝড়ের মতো, প্রচলিত পথে না চলার পক্ষপাতী। সে আকাশকে দেখালো, ভালোবাসা কোনো লেখা নয়, বরং দুটো জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য স্রোত।
একদিন, ক্যাফের চেনা টেবিলে বসে ঐশী হঠাৎ করেই বললো, “আকাশ, তোমার লেখা অনেক ভালো লাগছে। কিন্তু তুমি কি জানো, তোমার সবচেয়ে সুন্দর গল্পটা এখনো লেখা হয়নি?”
আকাশ চমকে উঠলো; “কী গল্প?”
ঐশী তার হাত ধরে মৃদু করে বললো, “আমাদের গল্প। দুইজন অপরিচিত মানুষের প্রেমের গল্প, এক কাপ চা ও একটুকরো কেক দিয়ে শুরু হয়েছিল। এটি উপনাস্যের প্রিমিয়ার কাহিনীকে অতিক্রম করে সত্যতা এবং সৌন্দর্যের সীমানায় পৌঁছে যায়। আমাদের মধ্যে আবেগ ভাগ করা মুহূর্ত এবং আন্তরিক কথোপকথনের সরলতার মধ্যে সম্পর্ক-এর যে গভীরতা রয়েছে তা এই গল্পের মূল বিষয়বস্তু হয়ে উঠবে। এটি একটি অপ্রত্যাশিত কিন্তু অনস্বীকার্য শক্তির প্রমাণ যা আমাদের জীবনকে বেঁধে রাখে।”
আকাশের চোখে জল এলো। হ্যাঁ, ঐশী ঠিকই বলেছে। তার লেখাগুলো হয়তো সবার মন ছুঁয়ে যাবে, কিন্তু ঐশীর কথা শুনে, আকাশের মনে যেন এক ঝড় উঠলো। এতদিন লেখালেখির জগতে খ্যাতি-স্বীকৃতি ও অর্থের পিছনে ছুটে বেড়িয়ে সে ঠিক কোথায় ছিল, নিজেই ভুলেই গিয়েছিল। ঐশীর সঙ্গে প্রতিদিনের এই সহজ সাক্ষাৎ, চায়ের আড্ডা, জীবনের ছোটখাটো গল্পগুলি – এগুলোই ছিল আসল সত্যি। এগুলোই ছিল সেই অনুভূতি, সেই অনুপ্রেরণা যা তার লেখায় ছিল অনুপস্থিত।
ঐশীর কথায় নতুন উদ্বুদ্ধ হয়ে লিখতে বসল আকাশ। কিন্তু কয়েকটা পাতা লিখে সে থেমে গেল। ঐশীর সঙ্গে তার সম্পর্ককে শব্দে বেঁধে দেওয়া যেন অসম্ভব। প্রতিটি দেখা, প্রতিটি কথায় ছিল এক অদ্ভুত গভীরতা, যা লেখার মাধ্যমে প্রকাশ করা কঠিন। হতাশায় লেখা চালিয়ে যেতে পারছিল না সে।
এমন সময় ঐশী এসে দেখলো আকাশকে হতাশাগ্রস্ত মুখে বসে থাকতে। সব শুনে ঐশী হাসলো। “আকাশ, লেখক তুমি, কিন্তু ভালোবাসা লেখা যায় না, বোঝা যায়। প্রেমের গভীরতা নিয়ে চিন্তা করার সময়, আমি বিশ্বাস করি যে প্রেম শব্দের সীমানার বাইরে। প্রেম, আবেগের একটি জটিল সামিয়ানা, যা ভাষার সীমানাকে অস্বীকার করে। পরিবর্তে, এটি ক্রিয়া, অঙ্গভঙ্গি এবং ভাব বিনিময়ের মাধ্যমে নিজেকে প্রকাশ করে। এটি এমন একটি অলিখিত ভাষা যা সহানুভূতি, সম্পর্ক এবং দুর্বলতার মাধ্যমে বোঝা যায়। প্রেমকে লিখিত অভিব্যক্তির গন্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ করার প্রচেষ্টা একটি বৃথা প্রচেষ্টা হবে। বরং, এটি হৃদয়ের মধ্যে নীরব বোঝাপড়ায় বিকাশ লাভ করে, লিখিত শব্দের সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করে।”
কথাটা শেষ করে ঐশী আকাশের হাত ধরে বাইরে নিয়ে গেল। নিশ্চিন্দিপুরের রাস্তায়, গাছতলায় বসে তারা গল্প করতে লাগলো। শহরের কোলাহল থেকে দূরে একটা নির্জন গাছতলায় বসে আকাশের চোখ ছিল শুধু ঐশীর দিকে।
ঐশী কথা বলছিল, হাসছিল। হঠাৎ করেই ঐশী থামলো আর আকাশের দিকে তাকিয়ে বললো, “জানো, আমি কোনোদিন এক জায়গায় থাকতে পারি না। পাখির মতো উড়ে বেড়াতে ভালোবাসি।”
আকাশের মনে একটা দ্বিধা জাগলো। ঐশীর সঙ্গে এই মুহূর্তগুলো ছিল এতটা সুন্দর, সে চাইলো না এই সুখ শেষ হোক। কিন্তু ঐশীর স্বভাব জানে সে।
“আমি কি তোমাকে বাঁধতে চাই না, ঐশী। কিন্তু তোমাকে ছেড়ে দেওয়াও আমার পক্ষে সম্ভব না।” সত্যি কথাটা মুখ ফসকে বেরিয়ে গেল আকাশের।
ঐশী হাসলো। “আমাকে বাঁধার দরকার নেই, আকাশ। ভালোবাসা মানে বাঁধন নয়, বন্ধন।” তারপর সে এগিয়ে এসে আকাশের গালে একটা চুমু খেলো। “আমাদের গল্প এখনো শেষ হয়নি। আমি যেখানে যাব, তুমি আমার মধ্যে থাকবে। তোমার লেখায় থাকব আমি। আর হয়তো, কোনো একদিন, আমাদের আবার দেখা হব।”
ঐশীর কথা শেষ হওয়ার আগেই সে উঠে দাঁড়ালো। একবার শেষবারের মতো আকাশের দিকে তাকিয়ে, ঐশী একটা টেম্পো ধরে চলে গেল, ঠিক যেমন একটা পাখি আকাশে উড়ে যায়।
আকাশ একা হয়ে গেল। কিন্তু ঐশীর ছোঁয়া, তার কথা, চোখের দৃষ্টি – সবকিছুই যেন তার মনে গেঁথে রয়েছে। সে আর লেখার চেষ্টা করলো না। ঐশীর কথা ঠিকই ছিল – ভালোবাসা লেখা যায় না, বোঝা যায়।
দিন কয়েক কাটলো। নিশ্চিন্দিপুরের রাস্তা, আধুনিক কবির চেনা টেবিল – সবকিছুই ঐশীর স্মৃতিতে ভরে উঠলো আকাশের। একদিন, হঠাৎ করেই তার চোখে পড়ল ঐশীর গাঁথা গোলাপ ফুলটা, যেটা সে টেবিলের কোণে ফেলে রেখে গিয়েছিল। ফুলটা এখনো ম্লান হয়ে যায়নি। আলতো করে সেটা হাতে নিল আকাশ।
ফুলটা হাতে নেওয়ার মুহুর্তেই তার মনে পড়ল ঐশীর শেষ কথা – “আমাদের গল্প এখনো শেষ হয়নি।” এই কথাটা যেন আকাশের মধ্যে একটা নতুন জোর জাগিয়ে দিল। সে বুঝল, ঐশী ঠিকই বলেছে। তাদের প্রেমের গল্প হয়তো এই মুহূর্তে থেমেছে, কিন্তু শেষ হয়নি।
ঐশীকে সে ছেড়ে দিতে পারবে না। সে লিখবে, কিন্তু এবার ঐশীর মতো ঝড়ের মতো লেখা লিখবে। সে লিখবে তাদের অদ্ভুত প্রেমের গল্প, লিখবে ঐশীর স্বাধীনতা, লিখবে নিঃশর্ত ভালোবাসা।
আকাশ আবার লেখার টেবিলে বসল। কিন্তু এবার তার কলমে ছিল আগুনের ঝাঁঝ। সে লিখল ঐশীর চোখের ইশারা, তার হাসির সুর, আর তার স্বাধীনচেতা মনের কথা। সে লিখল নিজের ভালোবাসার গভীরতা, ঐশীর জন্য তার মনের অস্থিরতা। দিনের পর দিন লিখে গেল আকাশ। কখনো ঐশীর সঙ্গে কাটানো সুখের মুহূর্তগুলো, কখনো বিচ্ছেদের বেদনা – সবকিছুই সে কাগজে ফুটিয়ে তুলল।
একদিন, যখন তার উপন্যাস শেষ হলো, আকাশ বুঝলো সে বদলে গেছে। ঐশীর স্পর্শে সে নিজেকে নতুন করে খুঁজে পেয়েছে। তার লেখায় এলো নতুন মাত্রা, নতুন গভীরতা।
কয়েক মাস পরে, আকাশের লেখা বইটি প্রকাশিত হল। বইটি ঝড়ের বেগে জনপ্রিয় হয়ে উঠলো। পাঠকরা মুগ্ধ হলো ঐশী আর আকাশের অসাধারণ প্রেমের গল্পে।
বইটির সফলতার অনুষ্ঠানে, মঞ্চের ওপর দাঁড়িয়ে আকাশ দূরের দিকে তাকালো। মনে মনে সে ঐশীকে বললো, “আমাদের গল্প এখনো শেষ হয়নি, ঐশী। হয়তো কোনো একদিন, কোনো এক জায়গায়, আমাদের আবার দেখা হবে।” এরপর আর কখনো ঐশীর দেখা পায়নি আকাশ। কিন্তু সে জানে, তাদের প্রেমের গল্পটা অমর হয়ে থাকবে।
বছর দুয়েক কেটে গেল। আকাশের উপন্যাস এখনো ঝড়ের মতো জনপ্রিয়। বিভিন্ন শহরে বইমেলা, সাহিত্য সন্ধ্যা – সর্বত্রই তার উপস্থিতি। আর প্রতিটি অনুষ্ঠানেই পাঠকদের একই প্রশ্ন – ঐশী, কোথায় ঐশী? ঐশীর গল্প কি সত্যি, নাকি কল্পনা?
আকাশ প্রতিবার একই জবাব দিতেন, “ঐশী আমার জীবনের এক অংশ। আমার লেখার অনুপ্রেরণা। হয়তো সে কাল্পনিক, হয়তো বাস্তব। কিন্তু আমাদের গল্প সত্যি। ভালোবাসার গল্প কখনো মিথ্যে হয় না।”
একদিন, দার্জিলিংয়ের এক সাহিত্য উৎসবে অংশ নেওয়ার আহ্বান এলো আকাশের কাছে। পাহাড়ের কোল ঘেঁষা ছোট্ট শহর, চারপাশে চা বাগানের সবুজ কম্বল – এই পরিবেশ লেখকদের কাছে স্বপ্নের মতো। কিন্তু আকাশের মনে একটা অস্থিরতা ছিল। ঐশীর কথা মনে পড়ে গেল। “আমি কোনোদিন এক জায়গায় থাকতে পারি না। পাখির মতো উড়ে বেড়াতে ভালোবাসি।”
দার্জিলিং পৌঁছেই আকাশ চমকে উঠলেন। মূল রাস্তার এক কোণে, ছোট্ট চায়ের দোকান। দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মেয়েটির চুলে গাঁথা একটা গোলাপ ফুল। দূর থেকে দেখেই মনে হলো ঐশী। কিন্তু কাছে গিয়ে দেখা গেল, মেয়েটির চেহারা আলাদা, তবে ঐশীর মতোই একটা স্বাধীনচেতা দৃষ্টি তার চোখে।
মেয়েটি আকাশকে চিনতে পারলো। “আপনিই কি সেই লেখক, আকাশ? ঐশীর গল্প লেখা লেখক?”
আকাশ স্তম্ভিত হয়ে গেল; “ঐশী! আপনি কি ঐশীকে চেনেন?”
মেয়েটি হাসলো। “না, আমি ঐশী না। তবে তার বোন। ঐশী আপনাকে বলে গিয়েছিল, সে পাখির মতো উড়ে বেড়ায়। এখন সে অনেক দূরে, অন্য কোনো দেশে। কিন্তু আপনার লেখা সে পড়েছে। সে জানে, আপনি তার গল্পকে অমর করে রেখেছেন। দিদি আমাকে আপনার জন্য একটা চিঠি দিয়ে গেছে। বলেছিল যদি কোনোদিন আমাদের দেখা হয় তাহলে আপনাকে এই চিঠিটা দিতে। সেই দিন থেকে আমি এই চিঠিটা নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি।”
এরপর মেয়েটি আকাশকে ঐশীর লেখা একটি চিঠি দিল। ঐশী লিখেছিল,
“আমার প্রিয় আকাশ,
আকাশ, আমি জানতাম আমাদের গল্প শেষ হবে না। হয়তো আমরা আবার দেখা হব, না-হয় হব না। কিন্তু আমাদের ভালোবাসা, আমাদের গল্প – সেটা চিরকাল থাকবে। লেখায়, আর আপনার মনে। আমাদের চলার পথগুলি ভিন্ন হতে পারে, তবুও আমাদের ভালবাসা চিরন্তন। তোমার সঙ্গে কাটানো আমার প্রতিটি মুহূর্ত আমার জীবনে একটি চিরস্থায়ী সাড়া ফেলেছে। সময় এবং স্থান অতিক্রম করার জন্য যদিও এটি একটি গল্প-এর মতো, যদিও দিগন্তে সম্পর্কের অনিশ্চয়তা মেঘ ঘনীভূত, তবুও আমি আমাদের সম্পর্কের অটুট নিশ্চিততায় সান্ত্বনা খুঁজে পাই। ভাগ্যে হয়তো আমাদের পুনর্মিলন লেখা নেই, তবুও তুমি আমার হৃদয়ে একটি স্থায়ী জায়গা করে নিয়েছো। আমাদের ভালবাসা, আবেগ এবং বন্ধুত্বের সুতোয় বোনা সম্পর্ক দূরত্ব এবং সময়ের সীমানা অতিক্রম করবে। স্মৃতি এবং স্বপ্নের রাজ্যে, আমাদের গল্পটি সমৃদ্ধ হবে, জীবনের উত্তাল সমুদ্রের মধ্য দিয়ে আমাদের পথনির্দেশ করবে আশার আলো। যতদিন না আমাদের পথগুলি আরও একবার একত্রিত হবে, ততদিন আমাদের চিরস্থায়ী বন্ধনের প্রতিশ্রুতি অটুট হতে থাকবে।
চিরতরে তোমার,
– ঐশী”
চিঠি পড়ে আকাশের চোখে জল এলো। হয়তো ঐশীর সঙ্গে আর দেখা হবে না, কিন্তু তার প্রতি ভালোবাসা, ঐশীর স্মৃতি – সেগুলোই হয়ে উঠবে তার লেখার নতুন স্রোত। সে লিখবে আরো অনেক গল্প, ভালোবাসার গল্প, বিচ্ছেদের গল্প, পুনর্মিলনের গল্প – কিন্তু প্রতিটি প্রতিটি গল্পেই থাকবে ঐশীর ছোঁয়া। হয়তো সে কোনো এক স্বাধীনচেতা নায়িকা হিসেবে, নয়তো চঞ্চল পাখির মতো স্বপ্নের কষ্টিপাথরে বিছানো কোনো চরিত্র হিসেবে। ঐশী না থাকলেও, তার প্রদত্ত মুক্তির স্বাদ, ভালোবাসার গভীরতা থাকবে আকাশের লেখায়।
দার্জিলিংয়ের পাহাড়ের কোল ঘেঁষা ছোট্ট চায়ের দোকানে বসে আকাশ নতুন উপন্যাসের খাতা খুললেন। কলম চলতে শুরু করলো – “একটি ছোট্ট পাহাড়ি শহর, চারপাশে চা বাগানের বিশাল বিস্তৃতি। আর সেই বাগানের মাঝে, দু’টি চোখ, সকালের সূর্যের মতো ঝলমলে। সেই চোখের দৃষ্টিতে ছিল স্বাধীনতা, ছিল ভালোবাসা…….”