এক রহস্যময় মৃত্যু, এক নির্জন সেতু, এবং বন্ধুত্বের টান। রহস্য রোমাঞ্চে ভরা এই বাংলা গল্পে শিউলি তার বন্ধু সোনার মৃত্যুর রহস্য উন্মোচনের চেষ্টা করে।কীভাবে মারা গেল সোনা?কে তার মৃত্যুর পিছনে দায়ী?শিউলি রহস্যের সমাধান খুঁজে বের করতে নেমে পড়ে।

বাংলা ছোট গল্প

Home » বাংলা ছোট গল্প » নির্জন সেতু

নির্জন সেতু

এক রহস্যময় মৃত্যু, এক নির্জন সেতু, এবং বন্ধুত্বের টান। রহস্য রোমাঞ্চে ভরা এই বাংলা গল্পে শিউলি তার বন্ধু সোনার মৃত্যুর রহস্য উন্মোচনের চেষ্টা করে।কীভাবে মারা গেল সোনা?কে তার মৃত্যুর পিছনে দায়ী?শিউলি রহস্যের সমাধান খুঁজে বের করতে নেমে পড়ে।

রাতের আঁধার কালি মেঘে ঢাকা, কখনও ঝাপসা তারার ঝলকানি দেখা যায়, আবার কখনও চোখের পলকে সেটাও নিভে যায়। হাওয়া ঝোঁকা দিয়ে বয়ে চলেছে, বিশ্রাম নেওয়ার কোনো ইচ্ছে নেই। দূরে নদীর স্রোতের গর্জন শোনা যায়, ঠিক যেন কেউ বিষণ্ণ সুরে গান গাইছে। শহরের আলোকবাতি দূর থেকে ঝাপসা ঝলকানি দিচ্ছে, কিন্তু সেই আলো এখানে পৌঁছতে পারছে না।

শিউলি নিজেকে আরও শাড়ির আঁচলে জড়িয়ে নিল। সে একা দাঁড়িয়ে আছে সেই পুরোনো, জীর্ণশীর্ণ সেতুর উপরে, যেটা কখনো ঢেউ খেতে পারে মনে হচ্ছে। নীচে নদীর কালো জল অস্থির, যেন কিছু গোপন কথা লুকিয়ে আছে তার গভীরে।

শব্দটা শুনেই শিউলি চমকে উঠল। সে ঘুরে দেখল, একজন মহিলা তার পেছনে দাঁড়িয়ে আছে। মহিলার বয়স পঞ্চাশের কাছাকাছি হবে, চোখে এক ধরণের সজাগ দৃষ্টি। সে শিউলির দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করল, “এত রাতে এখানে একা কেন?”

শিউলি একটু ইতস্তত বোধ করল। এই জনবহুল শহরে এমন নির্জন জায়গায় একা থাকাটা ঠিক ছিল না, সেটা সে জানে। কিন্তু সে মনের মধ্যে একটা অস্থিরতা নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিল, আর এই সেতুটা কোন এক অদৃশ্য শক্তিতে তাকে টেনে এনেছিল। সে মহিলাকে বলল, “কিছু একটা ভাবছিলাম।”

মহিলাটা একটু এগিয়ে এল। “এই সেতুটা একটু ঝুঁকিপূর্ণ। রাতে একা থাকা ঠিক না।”

শিউলির মনে হল মহিলাটা চিন্তিত। সে জানতে চাইল, “আপনি কে?”

“আমি এই পাড়ারই থাকি।” মহিলা জবাব দিল, “আপনাকে এই রাস্তায় একা ঘুরতে দেখে ভাবলাম একটু খেয়াল রাখি।”

শিউলি একটু স্বস্তি বোধ করল। সে মহিলাকে তার সমস্যাটা বলতে পারবে কিনা ভাবল। কিন্তু মহিলাটাকে সে খুব একটা চেনে না। তাছাড়া, গোটা বিষয়টা এত জটিল যে, কাউকে বলতেও ইতস্তত বোধ হচ্ছে।

মহিলাটা যেন তার চিন্তাভাবনা বুঝতে পারল। সে শিউলির কাছে এসে দাঁড়াল। “কিছু একটা চিন্তায় আছেন, তাই না?”

শিউলি চুপ করে রইল।

“যদি বলতে চান, বলতে পারেন।” মহিলাটা আরও একটু নরম গলায় বলল, “কখনও কখনও অপরিচিত মানুষ্যের কাছে মন খুলে বললে মনের অশান্তি কমে।”

শিউলি চোখ দুটো বন্ধ করল। সে জানে না কেন, মহিলাটার কথায় একটা বিশ্বাস জন্মালো তার মনে।

একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস নিয়ে শিউলি বলতে শুরু করল, “আমার একটা বন্ধু ছিল… সোনা। আমরা দু’জনে ছোটবেলা থেকেই একে অপরের সবচেয়ে কাছের বন্ধু। কিন্তু কয়েকদিন আগে সে…” শিউলির গলা আটকে গেল।

মহিলাটা সান্ত্বনার স্বরে বলল, “শান্ত হোন। ধীরে ধীরে বলুন।”

শিউলি একটু শান্ত হয়ে নিজেকে সামলে নেওয়ার চেষ্টা করল। তারপর সে বলতে শুরু করল, “সোনা কয়েকদিন আগে এই সেতু থেকে 뛰য়ে নদীতে পড়ে গিয়ে মারা যায়। পুলিশ বলছে আত্মহत्या। কিন্তু আমি বিশ্বাস করতে পারছি না। সোনা এমন মেয়ে ছিল না। তার আত্মহত্যা করার কোনো কারণ ছিল না।”

মহিলাটি মনোযোগ দিয়ে শুনছিল। শিউলি আরও বলল, “আমার কিছু সন্দে আছে। সোনার মৃত্যুর আগে কয়েকদিন, সে একটা অদ্ভুত মানুষের কথা বলছিল। একজন বৃদ্ধ লোক, যে এই এলাকায় থাকে। সেই লোক নাকি সোনাকে কিছু একটা ভয় দেখাচ্ছিল। আমি খুঁজে বের করতে চাই, সেই লোকটা কে, এবং সোনার মৃত্যুর সাথে তার কোনো সম্পর্ক আছে কিনা।”

মহিলার চোখ দুটি চিন্তায় গভীর হল। সে শিউলির দিকে তাকিয়ে বলল, “আপনি ঠিক বলেছেন, এটা আত্মহত্যা মনে হচ্ছে না। কিন্তু একা একা খোঁজাখুঁজির চেষ্টা না করাই ভালো। এই এলাকাটা একটু খারাপ।”

“কিন্তু আমি আর কাউকে বলতে পারছি না।” শিউলি হতাশার স্বরে বলল।

মহিলাটা একটু ক্ষণ চুপ করে রইল, তারপর সে বলল, “আপনাকে সাহায্য করতে পারি। আমি এই এলাকায় অনেকদিন ধরে থাকি। অনেক লোককে চিনি। আমি খোঁজাখুঁজি করে দেখতে পারি সেই বৃদ্ধ লোকের খোঁজ।”

শিউলি অবাক হয়ে গেল। “কিন্তু আপনি কেন?”

মহিলাটা হাসল, একটা দুঃখের ছায়া মিশে। “আমারও একটা বন্ধু ছিল। ঠিক আপনার মতোই সে একটা রহস্যের খোঁজে বেরিয়েছিল, আর ফিরে আসেনি। হয়তো আপনাকে সাহায্য করার মধ্যে তার একটুখানি শান্তি খুঁজে পাব।”

শিউলির চোখ ভিজে এল। সে মনে মনে সোনাকে স্মরণ করল, তারপর মহিলার দিকে তাকিয়ে বলল, “আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আপনি আমার অনেক বড়ো সাহায্য করলেন।”

মহিলাটা হাত বাড়িয়ে শিউলির কাঁধে একটু টিপ দিল। “চলুন, আগে বাড়ি ফিরি। কাল সকালে আমরা খোঁজাখুঁজি শুরু করব।”

রাতের আঁধারে দু’টি চেহারা দূর থেকে মিলিয়ে গেল। সেতুর উপর দিয়ে বাতাস ঝোঁকা দিয়ে বয়ে চলেছে। পরের সকালে শিউলি মহিলার বাড়িতে গেল। মহিলার নাম ছিল রেখা। রেখা একটা ছোট্ট, পরিচ্ছন্ন বাড়িতে থাকতেন। এক কাপ চা দিয়ে শিউলির কাছে সোনার সম্পর্কে আরও কিছু জানতে চাইলেন। শিউলি রেখাকে সোনার সাথে তার সম্পর্ক, সোনার চেহারা, ও সেই বৃদ্ধ লোকের সম্পর্কে যতটুকু জানে, সব খুলে বলল। রেখা মনোযোগ দিয়ে শুনলেন।

শেষে রেখা বললেন, “এই এলাকায় একজন বৃদ্ধ লোক থাকেন, নাম তার হরিদাস মিস্ত্রি। লোকজন তাকে একটু খ্যাপা বলে। কিন্তু খারাপ মানুষ্য বলে কারো মনে হয় না।”

রেখা আর শিউলি সিদ্ধান্ত নিল হরিদাস মিস্ত্রির সঙ্গে দেখা করবে। রেখা জানতেন হরিদাস থাকেন নদীর ধারেই একটা পুরোনো, জীর্ণশীর্ণ বাড়িতে। সেই বাড়িটা দেখতেই একটু ভয় লাগে। তারা দু’জনে সেই বাড়ির দিকে হাঁটা শুরু করলেন

বাড়ির কাছে গিয়ে দেখলেন, দরজাটা খোলা। রেখা ডাক দিলেন, “হরিদাসবাবু, আছেন?”

ভিতর থেকে একটা কাঁপা কাঁপা গলা শোনা গেল, “কে?”

রেখা বললেন, “আমি রেখা, পাড়ার লোক। আমার সাথে একজন আছেন।”

একটু দেরি করে দরজাটা খুলে গেল। দরজায় দাঁড়িয়ে ছিলেন একজন বৃদ্ধ লোক। বয়স অনেক, চুলগুলো সাদা, চোখ দুটি গভীর। দেখেই বোঝা যায় একটু আনমনা।

রেখা তাকে অভিবাদন জানিয়ে বললেন, “এই শিউলি। সোনার বন্ধু।”

হরিদাস শিউলির দিকে তাকালেন। তার চোখে একটা অদ্ভুত দৃষ্টি ভাসল। সে জিজ্ঞেস করল, “সোনা? সেই মেয়েটি? সে আর নেই?”

শিউলি অবাক হয়ে গেল। হরিদাস কিভাবে জানে সোনা আর নেই?

রেখা ব্যাখ্যা করলেন, “হ্যাঁ, কয়েকদিন আগে এই সেতুর কাছ থেকে নদীতে পড়ে গিয়ে মারা যায়। পুলিশ বলছে আত্মহত্যা। কিন্তু শিউলি বিশ্বাস করতে পারছে না।”

হরিদাস একটু চুপ করে রইলেন। তারপর সে আস্তে আস্তে বললেন, “সোনা… সে ভয় পেয়েছিল। সে আমাকে বলেছিল, কেউ তাকে খুন করবে।”

শিউলির হৃৎপিণ্ডটা হিম হয়ে গেল। হরিদাসের কথায় একটা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য লুকিয়ে আছে। কিন্তু এর মানে কি?

রেখা আরও জানতে চাইলেন, “কে খুন করবে? আপনি কি জানেন?”

হরিদাস মাথা নাড়লেন। “না, জানি না। কিন্তু সে ভয় পেয়েছিল। আমাকে বলেছিল সেই সেতুর কাছে।”

রেখা আর শিউলি একে অপরের দিকে তাকালেন। হরিদাসের কথা তাদের আরও সন্দেহ জাগ

রেখা ও শিউলি হরিদাসের বাসা থেকে বেরিয়ে এলেন। হরিদাসের কথা তাদের আরও দ্বিধায় ফেলে দিল। সোনা যদি হরিদাসকে বলে থাকে কেউ তাকে খুন করবে, তাহলে কি আসলেই আত্মহত্যা ঘটেনি? কিন্তু হরিদাস কি জানত কে খুন করবে? আর সে জানলেও কেন পুলিশকে কিছু বলেনি?

রেখা শিউলিকে বললেন, “এই বিষয়টা আমার একটু অদ্ভুত লাগছে। হরিদাস হয়তো সব জানে না, কিন্তু তার কথার মধ্যে কিছু একটা গোপন কথা লুকিয়ে আছে।”

শিউলি তার সঙ্গে একমত হল। সে বলল, “আমাদের আরও খোঁজাখুঁজি করতে হবে। হরিদাসের কাছে যা জানা গেছে, সেটা নিয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা বলা দরকার।”

রেখা একটু দ্বিধায় পড়লেন। সে বললেন, “পুলিশকে জানালে হয়তো সমস্যা হতে পারে। হরিদাসকে পাগল বলেই সবাই জানে। তার কথায় পুলিশ কান দেবে কিনা সন্দেহ আছে।”

শিউলি জানত রেখার কথা ঠিকই আছে। তবু সে হাল ছেড়ে দেওয়ার পক্ষপাতী ছিল না। সে বলল, “আমরা চেষ্টা করে দেখতে পারি। না হয়, নিজেরাই খোঁজাখুঁজি চালিয়ে যাব।”

রেখা শিউলির দৃঢ়তা দেখে আর কিছু বললেন না। তারা দু’জনে সিদ্ধান্ত নিলেন, সোনার কাছের বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলবে। হয়তো সোনা তাদের কোনো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানিয়েছে, যা তাদের খোঁজাখুঁজিতে সাহায্য করবে।

দিনের বাকিটা সময় শিউলি ও রেখা সোনার বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলল। কিন্তু কেউই কোনো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিতে পারল না। সবাই জানতো সোনা একটু চুপচাপ মেয়ে ছিল, কিন্তু কারো কাছেই তার কোনো সমস্যা ছিল না, এমন কোনো ইঙ্গিত পাওয়া গেল না।

রাতে শিউলি নিজের ফ্ল্যাটে ফিরে এল। সে খুব হতাশ লাগছিল। কোনো ক্লু পাওয়া যাচ্ছে না। হঠাৎ তার চোখ পড়ল সোনা দিয়ে যাওয়া একটা ছবির উপর। ছবিতে সোনা আর একজন মেয়ের সঙ্গে দাঁড়িয়ে আছে। মেয়েটির চেহারা একটু অচেন, তবে মনে হচ্ছে কোথাও দেখেছে।

শিউলি ছবিটা হাতে নিয়ে ভাবতে লাগল। সেই মেয়েটা কে? ঠিক সেই সময় তার ফোনে একটা মেসেজ এল। রেখা পাঠিয়েছেন। মেসেজে লেখা, “আমি একটা জিনিস খুঁজে পেয়েছি, হয়তো এটা আমাদের কাজে লাগতে পারে।”

শিউলির মুখে একটা আশার আলো জ্বলে উঠল। সে রেখাকে ফোন করল। রেখা বললেন, “আমি হরিদাসের বাড়ির কাছের একটা দোকানদারের সঙ্গে কথা বললাম। সে জানিয়েছে, “সোনা মাঝে মাঝে একজন বাইরের লোকের সঙ্গে দেখা করত। সেই লোকটা নাকি হরিদাসের বাড়ির কাছাকাছি থাকত। দোকানদার ঠিক মনে করতে পারেনি লোকটার নাম, কিন্তু মনে আছে লোকটার একটা চোখ খারাপ ছিল।”

শিউলির কাছে মনে হল এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। সে রেখাকে জানাল সেই ছবির কথা, যেখানে সোনা এক অচেন মেয়ের সঙ্গে আছে।

“আপনি কি সেই মেয়েটাকে চেনেন?” শিউলি জিজ্ঞেস করল।

রেখা একটু চুপ করে থেকে বলল, “না, চিনি না। কিন্তু হয়তো চেনা যাবে। কাল সকালে আমি সেই ছবিটা দেখে এলাকায় কয়েকজনকে দেখাব।”

পরের দিন সকালে রেখা শিউলির ফ্ল্যাটে এল। তার হাতে একটা খাতা ছিল। খাতায় লেখা ছিল এলাকায় থাকা সবার নাম, ঠিকানা আর পেশা। রেখা শিউলির হাতে ছবিটা দিয়ে বলল, “দেখো, এই লোকগুলোকে দেখাও। হয়তো কেউ চিনতে পারবে।”

শিউলি ছবিটা নিয়ে এক এক করে দেখাতে লাগল। কিন্তু কেউ চিনতে পারল না। হঠাৎ একটা নামের কাছে এসে একজন বৃদ্ধা থমকে গেলেন। সে বলল, “এই মেয়েটাকে মনে আছে। সে অনিমা দত্ত। এক মাস আগে এ এলাকা ছেড়ে চলে গেছে।”

শিউলি আর রেখা একে অপরের দিকে তাকাল। অনিমা দত্ত! সেই মেয়েটির একটা চোখ খারাপ ছিল বলে দোকানদার বলেছিল। সব কিছু যেন জোড়া লাগছে।

তারা সোনার ফোনে অনিমার নাম্বার খুঁজে পেল। নাম্বারটা বন্ধ ছিল। কিন্তু শিউলি হাল ছেড়ে দেয়ার পক্ষপাতী ছিল না। সে পুলিশের কাছে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল।

রেখার সাহায্যে সে পুলিশ স্টেশনে গিয়ে সব খুলে বলল। পুলিশ আগ্রহী হল। তারা হরিদাসকে জিজ্ঞাসাবাদ করল। হরিদাস স্বীকার করল সোনা তার কাছে এসে বলেছিল কেউ তাকে খুন করবে। কিন্তু সে সোনাকে চিনত না, আর কে তাকে খুনের ভয় দেখিয়েছিল, সেটাও জানত না।

পুলিশ অনিমার খোঁজে তল্লাশি শুরু করল। কয়েকদিন পর তারা জানতে পারল অনিমা অন্য শহরে গিয়ে আত্মগোপন করে আছে। পুলিশ তাকে গ্রেফতার করল।

জিজ্ঞাসাবাদে অনিমা সব স্বীকার করল। সে জানাল, তার বাবা একজন জমি জালিয়াত। সোনার বাবার জমি নিয়ে তার বাবার মামলা চলছিল। অনিমার বাবা সোনাকে ভয় দেখিয়ে জমি ছেড়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু সোনা রাজি হয়নি। হতাশায় অনিমা সোনাকে সেই সেতুর কাছে ডেকে হুমকি দিয়েছিল। সোনা ভয় পেয়ে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল।

পুলিশের তদন্তে প্রমাণিত হল যে সোনা আত্মহত্যা করেনি, বরং দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিলেন। অনিমাকে খুনের চেষ্টার অভিযোগে গ্রেফতার করা হল।

এই ঘটনার ফলে শিউলির মনে এক অন্য ধরণের শূন্যতা থেকে গেল। সোনাকে ফিরিয়ে আনা যাবে না জেনে একটা গভীর দুঃখ তার বুকে জমা হয়েছিল। কিন্তু সেই সাথে একটা প্রশান্তিও এল। সোনার মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন হয়েছে, তার বন্ধুকে আর অপবাদ সহ্য করতে হবে না। রেখাকেও কৃতজ্ঞতা জানাল শিউলি। রেখা ছাড়া হয়তো সে কখনোই সত্যিটা জানতে পারত না।

একদিন সন্ধেবেলায় শিউলি সেই সেতুর কাছে এল। নদীর স্রোতের গর্জন তার কানে বিষণ্ণ লাগছিল না। সে জানত, সোনা হয়তো আর ফিরে আসবে না, কিন্তু তার মৃত্যু এখন আর অজানা নেই। সে দূরে তাকাল, যেন সোনাকে বিদায় জানাচ্ছে। হাওয়া এক ঝাপসা স্পর্শ দিয়ে তার গালে লাগল, যেন সোনার এক বিদায়ী স্পর্শ। সেই সেতু, যেটা একসময় অন্ধকারের প্রতীক ছিল, এখন মনে হল আলোর পথ, যে পথ ধরে সোনা এখন শান্তিতে আছে।

এই রকম চিত্তাকর্ষক বাংলা ছোট গল্প -এর আপডেট পেতে আমাদের WhatsApp চ্যানেল জয়েন করুন।

About The Author

নতুন বাংলা ছোট গল্প

মিরার মায়া

"মিরার মায়া" এক হৃদয়ছোঁয়া ছোটদের গল্প যেখানে মিরা নামের এক মেয়ে তার জাদুকরী ক্ষমতা দিয়ে প্রাণীদের সাহায্য করে। এই রূপকথার গল্প ভালোবাসা, দয়া ও প্রকৃত সুখের সন্ধানে রচিত।

"মিরার মায়া" এক হৃদয়ছোঁয়া ছোটদের গল্প যেখানে মিরা নামের এক মেয়ে তার জাদুকরী ক্ষমতা দিয়ে প্রাণীদের সাহায্য করে। এই রূপকথার গল্প ভালোবাসা, দয়া ও প্রকৃত সুখের সন্ধানে রচিত।

সম্পুর্ন্য গল্পটি পড়ুন: মিরার মায়া

অন্তিম যাত্রা

"অন্তিম যাত্রা" একটি হৃদয়স্পর্শী ঐতিহাসিক কথাসাহিত্য গল্প, যেখানে যুদ্ধের অন্ধকার পেরিয়ে আশার খোঁজে এগিয়ে চলে। বাংলা ছোট গল্পের ভক্তদের জন্য অনুপ্রেরণায় ভরপুর এক অনন্য সৃষ্টি।

"অন্তিম যাত্রা" একটি হৃদয়স্পর্শী ঐতিহাসিক কথাসাহিত্য গল্প, যেখানে যুদ্ধের অন্ধকার পেরিয়ে আশার খোঁজে এগিয়ে চলে। বাংলা ছোট গল্পের ভক্তদের জন্য অনুপ্রেরণায় ভরপুর এক অনন্য সৃষ্টি।

সম্পুর্ন্য গল্পটি পড়ুন: অন্তিম যাত্রা

ক্লারার রাজ্য

"ক্লারার রাজ্য" একটি মায়াবী রূপকথার গল্প যেখানে ক্লারা ও প্রাণীরা একসাথে তৈরি করে বন্ধুত্বের রাজ্য। ছোটদের গল্পে জাদু, বন্ধুত্ব, ও ভালোবাসার স্পর্শে গড়ে ওঠা এক অনবদ্য রূপকথার দুনিয়া।

"ক্লারার রাজ্য" একটি মায়াবী রূপকথার গল্প যেখানে ক্লারা ও প্রাণীরা একসাথে তৈরি করে বন্ধুত্বের রাজ্য। ছোটদের গল্পে জাদু, বন্ধুত্ব, ও ভালোবাসার স্পর্শে গড়ে ওঠা এক অনবদ্য রূপকথার দুনিয়া।

সম্পুর্ন্য গল্পটি পড়ুন: ক্লারার রাজ্য

Leave a Comment

অনুলিপি নিষিদ্ধ!