অসম্পূর্ণ ভালোবাসা, বৃষ্টি ভেজা স্মৃতি আর জীবনের নতুন মানে খোঁজার আবেগঘন রোমান্টিক বাংলা ছোট গল্প। মেঘলা ও শান্তনুর হৃদয়ের যাত্রা পাঠককে ছুঁয়ে যাবে গভীরভাবে।

বাংলা ছোট গল্প

Home » বাংলা ছোট গল্প » প্রেমের নতুন ঠিকানা

প্রেমের নতুন ঠিকানা

অসম্পূর্ণ ভালোবাসা, বৃষ্টি ভেজা স্মৃতি আর জীবনের নতুন মানে খোঁজার আবেগঘন রোমান্টিক বাংলা ছোট গল্প। মেঘলা ও শান্তনুর হৃদয়ের যাত্রা পাঠককে ছুঁয়ে যাবে গভীরভাবে।

আমাদের WA চ্যানেল জয়েন করুন

এই মাসের সেরা হাড়হিম করা ভৌতিক বাংলা ছোট গল্প পড়ুন ও অডিও স্টোরির স্বাদ উপভোগ করুন – পেঁতিজ্বলা মাঠের সেই রাত

রচনা - সুরজিৎ রায়   ||   গল্পপাঠে - সুমন নট্ট, অর্পিতা মাইতি   ||   শব্দগ্রহণ এবং আবহ সঙ্গীত - সুমন নট্ট   ||   সঙ্গীত - রুপা বিশ্বাস, বনশ্রী   ||   সমগ্র কারিগরি পরিচালনায় - ষ্টুডিও বাড়ি (বারাসাত)

অধ্যায় ১: সেদিন হটাৎ

বাংলা রোমান্টিক ছোট গল্পটির অডিও স্টোরি শুনতে নিচে প্লে বোতাম টি ক্লিক করুন।

মেঘলা বিকেলটা যেন নিজের ভেতরে হাজারো কথা লুকিয়ে রেখেছিল। কলকাতার পুরনো উত্তর কলকাতার এক গলি, যেখানে দোতলা ভাঙাচোরা বাড়িগুলো এখনো ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সেই গলির কোণে ছোট্ট একটা কফি শপ—‘ক্যাফে শঙ্খনীল’। জায়গাটা পুরনো হলেও ভেতরে ঢুকলেই কেমন যেন আপন গন্ধ পাওয়া যায়—তাজা কফির ধোঁয়া, বইয়ের পাতার হলুদ হয়ে যাওয়া গন্ধ, আর অল্পকিছু ভিজে কাঠের গন্ধ যা বৃষ্টির দিনে আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

জানলার ধারে বসে ছিলাম আমি— মেঘলা। হাতে একটা বই খোলা, তবে চোখ বইয়ের পাতায় নয়। বইয়ের শব্দগুলো যেন আমার কাছে কেবল অক্ষরের সারি, যার ভেতরে ডুবে যেতে মন চাইছে না। জানলার কাঁচ বেয়ে নেমে আসা বৃষ্টির ফোঁটাগুলো যেন আমার অতীতের গল্পগুলোকে আবার জীবন্ত করে তুলছিল। প্রতিটা ফোঁটা গড়িয়ে পড়ছিল ধীরে ধীরে, আর আমি তাকিয়ে থাকছিলাম, মনে হচ্ছিল কোনো অজানা গল্প লিখছে তারা।

হঠাৎই এক চাপা কণ্ঠস্বর কানে এল— “আমাকে চিনতে পারছিস?”

শব্দটা যেন বজ্রপাতের মতো কেঁপে উঠল আমার শরীরের ভেতর। গলা চিনতে ভুল হওয়ার সুযোগ নেই। শিরদাঁড়া দিয়ে এক অচেনা শীতল স্রোত বয়ে গেল। বুকের ভেতরটা হঠাৎই কেঁপে উঠল। ধীরে ধীরে মাথা ঘুরিয়ে তাকালাম।

সামনে দাঁড়িয়ে শান্তনু। হালকা নীল শার্টে ভিজে গেছে সামান্য, কাঁধে বৃষ্টির ফোঁটা মুক্তোর মতো ঝকমক করছে। চুলগুলো সামান্য এলোমেলো, কিন্তু তবুও ওর চিরচেনা দুষ্টু হাসিটা মুখে লেগে আছে। চোখের কোণে কয়েকটা হালকা বলিরেখা এসে গেছে, তবে সেই চোখের দৃষ্টি—অবিকল আগের মতো।

আমার মুখ দিয়ে কোনো শব্দ বেরোল না। মনে হচ্ছিল পুরো কফি শপটা হঠাৎ ছোট হয়ে শুধু আমাদের টেবিলেই সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে। আশেপাশের মানুষজন, কফি বানানোর শব্দ, বৃষ্টির টুপটাপ শব্দ—সবকিছু যেন মিলিয়ে গেছে।

শান্তনু একটু এগিয়ে এল। চেয়ারের পাশে দাঁড়িয়ে হেসে বলল— “তুই তো একটুও বদলাসনি, মেঘলা।”

আমি তাকিয়ে রইলাম। গলার ভেতরটা শুকিয়ে গিয়েছে, কিছু বলতে পারলাম না। কেবল মনে হচ্ছিল, এ কি সত্যিই ঘটছে? নাকি আমি কোনো স্মৃতির জালে আটকে গেছি?

অবশেষে কষ্ট করে বললাম— “শান্তনু… তুই এখানে? এই গলিতে?”

ও হেসে বসে পড়ল আমার সামনে। ভিজে কাপড় থেকে হালকা কাঁচা গন্ধ বেরোচ্ছিল, যা অদ্ভুতভাবে পরিচিত মনে হচ্ছিল।

শান্তনু: “কাজের জন্য এসেছিলাম কলেজ স্ট্রিটের দিকে। বৃষ্টি নামতেই ভাবলাম কফি ছাড়া বাঁচা যায় না। ভেতরে ঢুকে তোর মুখটা দেখে প্রথমে বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না।”
মেঘলা: (মৃদু হাসি) “আমিও অবাক হয়েছি… এত বছর পর হঠাৎ এরকম… যেন সিনেমার দৃশ্য।”
শান্তনু: “হয়তো জীবন মাঝে মাঝে সিনেমাকেও হার মানায়।”

শব্দগুলো শুনে বুকের ভেতরটা ধক করে উঠল। চোখ নামিয়ে কাপের পাশে রাখা ন্যাপকিন নিয়ে অকারণে নাড়াচাড়া করতে লাগলাম। এভাবে মুখোমুখি বসব, এটা কখনো কল্পনাও করিনি।

একটু চুপচাপ থাকার পর ও আবার বলল— “তুই কেমন আছিস? অনেক বছর হয়ে গেল তো।”

আমি গলা পরিষ্কার করে বললাম— “ভালো আছি। মানে… চলেই যাচ্ছে সব।”

শান্তনু আমাকে গভীরভাবে দেখল। সেই দৃষ্টিতে এখনো এক ধরনের অদ্ভুত উষ্ণতা আছে, যা একসময় আমাকে ভেতর থেকে কাঁপিয়ে তুলত।

শান্তনু: “তুই এখনো সেই পুরনো বই নিয়ে বসে থাকিস, তাই না? পুরোনো দিনের মতন…”
মেঘলা: “বইগুলোই তো আমার সঙ্গী। কিন্তু আজ…” (হালকা হাসি) “আজ পড়তে পড়তেই মনটা অন্য কোথাও চলে যাচ্ছিল।”
শান্তনু: “আমার দিকেই?”

আমি থমকে গেলাম। ওর কথায় যেন অজান্তেই আমার লুকোনো সত্যি ধরা পড়ে গেল। চোখ সরিয়ে জানলার দিকে তাকালাম।

মেঘলা: “বৃষ্টি সবসময় পুরনো কথা মনে করিয়ে দেয়। অনেক কিছুই মনে পড়ছিল…”
শান্তনু: “আমাদেরও?”

শব্দগুলো যেন খোলা ক্ষতের ওপর হালকা স্পর্শের মতো লাগল। বুকের ভেতর জমে থাকা দীর্ঘশ্বাস যেন হঠাৎ ভেঙে পড়তে চাইছে।

মেঘলা: (চোখ নামিয়ে) “হয়তো।”
শান্তনু: (নরম গলায়) “আমারও।”

আমাদের দুজনের মধ্যে এক মুহূর্তের জন্য নীরবতা নেমে এল। বাইরে বৃষ্টির শব্দ যেন আরও জোরে শোনা যাচ্ছিল।

কফি ওয়েটার এসে আমাদের দিকে তাকাল। আমি তাড়াতাড়ি অর্ডার দিলাম— “দুটি কফি।”

ওয়েটার চলে গেলে আমি আবার বললাম— “তুই একদম বদলাসনি। এখনো সেই একই হাসি…”

শান্তনু: (হেসে) “হাসিটা আছে, কিন্তু ভেতরের মানুষটা হয়তো বদলে গেছে। তোরও।”
মেঘলা: “হতে পারে। তবে মনে হয় কিছু কিছু জিনিস কখনোই বদলায় না।”

শান্তনু হালকা ঝুঁকে বলল— “তোর চোখ। এখনো একই রকম। আগের মতোই হাজারো কথা বলে ফেলে।”

আমি চমকে তাকালাম। বুকের ভেতর কোথাও যেন এক চাপা ব্যথা জেগে উঠল, আবার তার সঙ্গেই অদ্ভুত উষ্ণতাও।

কফি চলে এলো। ধোঁয়া ওঠা কাপে আমরা দুজনেই নিঃশব্দে চুমুক দিলাম। ধোঁয়ার রেখাগুলো যেন আমাদের মাঝে সেতুর মতো বাঁক খাচ্ছিল।

শান্তনু: “মেঘলা, মনে আছে তোর প্রথম দিনটা অফিসে? নীল শার্ট পরে এসেছিলি।”
মেঘলা: (হেসে) “কীভাবে ভুলব! আর তুই তখন একেবারে সিরিয়াস মুখ করে বসেছিলি।”
শান্তনু: “আরে, আমি তো চেষ্টা করছিলাম যেন পেটটা কম দেখা যায়।”

আমরা দুজনেই হেসে উঠলাম। হাসির ভেতরে অদ্ভুত এক স্বস্তি ছিল, আবার সেই পুরনো দিনের গন্ধও।

কিছুক্ষণ পরে হাসি মিলিয়ে গিয়ে আবার নীরবতা নেমে এল। আমি সাহস করে বললাম— “শান্তনু, কখনো কি ভেবেছিস—যদি অন্যরকম হতো আমাদের গল্পটা?”

ও আমার দিকে তাকাল, অনেকক্ষণ চুপ করে রইল। তারপর ধীরে ধীরে বলল— “ভেবেছি। অসংখ্যবার ভেবেছি। কিন্তু তখন আমরা দুজনেই খুব ছোট ছিলাম, জানতাম না কী চাই।”

আমার চোখ ভিজে এল। আমি চট করে মুখ ঘুরিয়ে জানলার দিকে তাকালাম। বাইরে এখনো ঝরছে বৃষ্টি, কিন্তু মনে হচ্ছিল সেই ফোঁটাগুলো আমার চোখ দিয়েই গড়িয়ে পড়ছে।

মেঘলা: “হয়তো ঠিকই বলছিস… তখন বুঝিনি, তাই হয়তো হারিয়েছি।”
শান্তনু: “হারানো সবসময় খারাপ নয়, মেঘলা। কখনো কখনো সেটা আমাদের নতুন কিছু খুঁজে পেতে সাহায্য করে।”

ওর কথাগুলো শুনে বুকের ভেতরটা অদ্ভুতভাবে হালকা লাগল। যেন এতদিনের অজানা বোঝা কিছুটা কমে গেল।

আমরা আবার চুপচাপ কফি শেষ করলাম। বাইরে রাস্তার ভিজে বাতাস ভেতরে ঢুকছিল, সঙ্গে নিয়ে আসছিল নস্টালজিয়ার সুবাস।

সেদিন হঠাৎ এই দেখা, এই কয়েকটা সংলাপ, এই বৃষ্টিভেজা কফির কাপে যেন আমার বহুদিনের জমে থাকা স্মৃতিগুলোকে এক ঝলকে ফিরিয়ে দিল। মনে হচ্ছিল, সময়টা থেমে গেছে, কেবল আমরা দুজনই আছি—আমি আর শান্তনু, সেই পুরনো দিনের মতো।

ডি. বি. কুপার হাইজ্যাকিং - সত্য ঘটনা: ডি.বি. কুপার: এক রহস্যময় সত্য ঘটনা। ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে অমীমাংসিত এক হাইজ্যাকিংয়ের রোমাঞ্চকর গল্প। তার নিখোঁজ হওয়ার পরের কাহিনী জানুন। সম্পূর্ণ বাংলা ছোট গল্পটি পড়তে ও অডিও স্টোরির স্বাদ উপভোগ করতে এই লিংকটি ক্লিক করুন।

অধ্যায় ২: প্রথম পরিচয়

বাংলা রোমান্টিক ছোট গল্পটির অডিও স্টোরি শুনতে নিচে প্লে বোতাম টি ক্লিক করুন।

প্রথম দিন অফিসে ঢোকার সময় আমার বুকের ভেতরটা যেন ঢাক বাজাচ্ছিল। নতুন জায়গা, নতুন মানুষ, নতুন নিয়ম—সবকিছুই অচেনা। করিডোর দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে মনে হচ্ছিল, সবাই আমার দিকে তাকিয়ে আছে, বিচার করছে প্রতিটি পদক্ষেপ, প্রতিটি নিশ্বাস।

অফিসটা একেবারে চকচকে। নতুন ল্যামিনেটের গন্ধ, দেয়ালে টাঙানো রঙিন পোস্টার, কোথাও কোথাও গাছপালা সাজানো। তবুও সবকিছুর মধ্যে একটা শূন্যতা, যেন এই কোলাহল আমাকে গিলে খেতে চাইছে। একটা মৃদু কফির গন্ধ ভেসে আসছিল—সম্ভবত কফি মেশিন থেকে—যেটা সামান্য সাহস দিচ্ছিল।

আমি হালকা নীল শার্ট পরেছিলাম। মনে হচ্ছিল এটাই আমার একমাত্র বর্ম, অফিসের নিরস ড্রেস কোডের বিরুদ্ধে আমার ছোট্ট বিদ্রোহ। আমার নির্দিষ্ট ডেস্কে এসে বসতেই চোখ পড়ল উল্টো দিকে বসা ছেলেটার দিকে। সে তখন সোজা হয়ে বসেছে, যেন পেট লুকোতে চাইছে। এক মুহূর্তের জন্য মনে হল হাসব, কিন্তু হাসিটা গিলে ফেললাম। চশমার আড়াল থেকে সে আমার দিকে তাকাল।

সে শান্তনু।

প্রথম দেখায় সাধারণ চেহারা, কিছুটা নির্লিপ্ত, কিন্তু চোখে অদ্ভুত শান্তি। সে খুব বেশি কথা বলছিল না, তবে যখন কারও প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিল, বাকিরা মন দিয়ে শুনছিল।

আমি জানতাম—এমন ছেলেদের কাছ থেকে দূরে থাকাই ভালো। মনে মনে বললাম, “ও তোর যোগ্য নয়।” আর তাই সিদ্ধান্ত নিলাম—দূরত্ব রাখব।

প্রথম সপ্তাহেই সবাইকে আইডেন্টিটি কার্ডের জন্য ছবি তুলতে হল। ক্যামেরা ফ্ল্যাশ হতেই মনে হচ্ছিল—আমার মুখে ক্লান্তি, চোখে ভয়ের ছাপ। ছবি হাতে পেতেই বুকটা ভেঙে পড়ল। আমি কালো হয়ে গেছি, অগোছালো লাগছে। অফিসে সবাই হাসাহাসি করছিল নিজের ছবি দেখে। আমি হেসেছিলাম, কিন্তু পরে ওয়াশরুমে গিয়ে কান্না চেপে রাখতে পারিনি।

ছোটবেলা থেকেই শিখেছি, এই দেশে ফর্সা মানেই সুন্দর। আমার ত্বকের রঙ বারবার আমাকে মনে করিয়ে দিয়েছে, আমি পিছিয়ে আছি। সেই ছবিটা যেন আবার সেই কষ্টটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। সেদিনই শান্তনুর দিকে আর তাকাইনি।

কয়েকদিন পর, অফিসে ক্লায়েন্টদের ইমেইল ইউজারনেম এলো। অদ্ভুত নামগুলো দেখে সবাই মজা করছিল।

শান্তনু আমার দিকে তাকিয়ে হেসে বলল— “মেঘলা, তোর ইউজারনেমটা তো একেবারে সিনেমার নামের মতো!”
আমি ভুরু কুঁচকে বললাম— “তোরটা তো আরও ভালো, পুরো বাচ্চাদের গেমের নামের মতো।”

চারপাশে হাসির রোল উঠল। প্রথমবার মনে হল, এই ছেলেটার সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনে আমি হারিনি। সেদিন থেকেই আমাদের মাঝে বরফ একটু একটু করে গলতে শুরু করল। তবুও আমি দূরে থাকার ভান করতাম। কেউ জিজ্ঞেস করলে বলতাম— “না, আমি একা লাঞ্চ করব।” “কফি মেশিনে যাব না।”

কিন্তু ভেতরে ভেতরে অনুভব করতাম, শান্তনুর চোখ আমাকে খুঁজে বেড়ায়। ওর দৃষ্টি সাধারণ নয়, যেন প্রশ্ন করছে—“তুই আসলে কে?”

এই দৃষ্টি আমাকে একসাথে নিরাপদ আর অস্থির করে তুলত। একদিন বিকেলে অফিসের কাজের ফাঁকে কফি মেশিনে গিয়েছিলাম। তখনই শান্তনু এল।

শান্তনু: “কফি খাস?”
মেঘলা: “হ্যাঁ, তবে চিনি ছাড়া।”
শান্তনু: “একেবারে হেলদি লুক!” (হাসি)
মেঘলা: “আর তুই?”
শান্তনু: “চিনি ছাড়া কফি মানে হলো বৃষ্টি ছাড়া কলকাতা।”

আমি হেসে ফেললাম।

কিছুক্ষণ নীরব থাকার পর শান্তনু জিজ্ঞেস করল— “তুই কী ধরনের বই পড়িস?”
আমি অবাক হয়ে তাকালাম – “তুই পড়িস বই?”
শান্তনু: “অবশ্যই। তবে এখন অফিসের রিপোর্ট পড়েই সময় কেটে যায়।”

আমরা দুজনেই হেসে উঠলাম।

তারপর ধীরে ধীরে কথা এগোল। আমার প্রিয় লেখক—বুদ্ধদেব বসু। ওর প্রিয়—সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়। দুজনেরই প্রিয় ঋতু—বৃষ্টি।

এই অদ্ভুত মিলগুলো অচেনা দেয়ালটাকে নরম করতে শুরু করল।

তবুও আমি নিজেকে আটকাতে চাইতাম। মনে মনে বলতাম—“না, এভাবে ভেসে যাওয়া যাবে না।”  আমার ভেতরে একটা অদ্ভুত ভয় ছিল—যদি আবার ভেঙে পড়ি? যদি আবার মনে হয় আমি যথেষ্ট নই?

কিন্তু প্রতিদিন সকালে অফিসে ঢোকার সময় প্রথমেই চোখ খুঁজে বেড়াত শান্তনুকে। সে যদি চুপচাপ থাকে, আমার দিনও মলিন হয়ে যেত। সে যদি হালকা হাসত, আমার মন আলোকিত হয়ে উঠত।

এক বিকেলে রিপোর্ট জমা দিতে গিয়ে আমার হাত ফসকে কিছু কাগজ মেঝেতে পড়ে গেল। আমি ঝুঁকে তুলছিলাম, তখন শান্তনু পাশে দাঁড়িয়ে বলল— “আমি তোকে ধরতে পারি?”

আমি তাকালাম। ওর দৃষ্টিতে কোনো মজা ছিল না, ছিল কেবল সত্যি কেয়ার। সেদিন প্রথমবার স্বীকার করলাম—এই ছেলেটা আলাদা।

তবুও মুখে বললাম— “না, আমি নিজেই পারব।”

আমি নিজেকে বাঁচাতে চেয়েছিলাম, কিন্তু অন্তরে অদৃশ্য সেতু তৈরি হয়ে গিয়েছিল।

সেই প্রথম পরিচয়ের দিনগুলোতে আমরা দুজনেই দূরত্ব রেখে চলার চেষ্টা করছিলাম। তবুও কথার আড়ালে, দৃষ্টির ভেতরে, হাসির ফাঁকে অদৃশ্য কিছু গড়ে উঠছিল।

আমি নিজেকে বোঝাচ্ছিলাম— “এটা কিছু না, কেবল সহকর্মীদের স্বাভাবিক মিথস্ক্রিয়া।”

কিন্তু ভেতরে ভেতরে জানতাম—শান্তনুর উপস্থিতি আমার দিনগুলোকে অন্যরকম করে তুলছে।

এভাবেই অজান্তে, নিঃশব্দে, আমাদের গল্পটা শুরু হয়ে গেল।

অধ্যায় ৩: কাছে আসা

বাংলা রোমান্টিক ছোট গল্পটির অডিও স্টোরি শুনতে নিচে প্লে বোতাম টি ক্লিক করুন।

সল্ট লেক টেকনো হাবে আমাদের নতুন অফিসে যখন কাজ শুরু হল, পরিবেশটাই বদলে গেল। বিশাল বিল্ডিং, চকচকে কাঁচের দেয়াল, এয়ারকন্ডিশনের ঠান্ডা হাওয়া—সবকিছুই আগের ছোট্ট অফিস থেকে একেবারে আলাদা। কিন্তু কাজের চাপও অনেক বেশি হয়ে গেল। রাত অবধি মিটিং, নির্দিষ্ট সময়ের ডেডলাইন, আর একঘেয়ে লাঞ্চের বিরতি।

এই ব্যস্ততার মাঝেই ধীরে ধীরে আমি আর শান্তনু একে অপরের দিকে এগোতে শুরু করলাম।

মিটিংয়ের টেবিলে বসলে ও সবসময় আমার পাশে চেয়ার খালি রাখত। “এখানে বস, তোকে নোটস নিতে সুবিধা হবে,” বলে একদিন চেয়ারের দিকে ইঙ্গিত করেছিল। আমি বসেছিলাম, কিন্তু মনে হয়েছিল অন্য কোনো কারণও আছে ওর।

ক্যান্টিনে একসাথে হাঁটতে হাঁটতে আমরা নানা বিষয় নিয়ে কথা বলতাম—বই, সিনেমা, রাজনীতি, এমনকি অফিসের রটনাও। শান্তনু সবসময় এমনভাবে আমার কথা শুনত যেন আমি পৃথিবীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মানুষ।

আমার মনের ভেতরে তখন অদ্ভুত এক পরিবর্তন হচ্ছিল। আমি আর কেবল একা নই। কারও চোখ, কারও হাসি, কারও মৃদু উপস্থিতি আমার দিনগুলোকে অন্যরকম করে তুলছিল।

একদিন দুপুরে হঠাৎই ও আমাকে ডাকল— “এই অমল, কফি খাবি?”

আমি অবাক হয়ে তাকালাম। “অমল?”
শান্তনু: “হ্যাঁ, অমলধন… সবসময় সিরিয়াস মুখ করে ঘুরিস, কিন্তু ভেতরে আলোর মতো কিছু লুকিয়ে রাখিস।”

আমি হেসে ফেললাম; “তাহলে শান্তনু, তুই কি শান্তির প্রতীক?”

সেদিন থেকে ও আমাকে “অমল” ডাকত, আর আমি ওকে “শান্তনু”—যদিও নাম তো আগেই জানতাম। ডাকনামগুলোর ভেতরে যেন অদৃশ্য এক স্নেহ জমা হচ্ছিল।

একদিন ক্যান্টিনে বসে হঠাৎ শান্তনু মজা করে বলল— “আমাকে বিয়ে করবি?”

আমি চমকে গেলাম। তারপর হাসতে হাসতে বললাম— “যাদের গার্লফ্রেন্ড আছে তাদের আমি বিয়ে করি না।”

শান্তনু: “আমি তো ভার্জিন। আমাকে বিয়ে করতে পারিস।”

আমরা দুজনেই হেসে গড়াগড়ি খেয়েছিলাম। কিন্তু সেই হাসির ভেতরে অদৃশ্য এক সত্যি লুকিয়ে ছিল। রাতে বিছানায় শুয়ে আমি বারবার সেই কথাটা মনে করছিলাম। মজা ছিল, তবুও ওর গলায় কিছু একটার কম্পন ছিল, যা মিথ্যে নয়।

ধীরে ধীরে আমরা এমন কিছু মুহূর্ত তৈরি করতে লাগলাম যেগুলো শুধু আমাদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। স্টেপলার নিতে গিয়ে হঠাৎ হাত ছুঁয়ে যাওয়া। গাড়ির কাঁচে চোখে চোখ পড়া। অন্য কেউ চেয়ার ছেড়ে দিলে আমি গিয়ে শান্তনুর পাশে বসা। এই সব স্পর্শগুলো কথার চেয়ে অনেক বেশি বলত।

অফিস থেকে টিম আউটিংয়ের আয়োজন করা হল। জায়গা—একটা গো-কার্টিং ট্র্যাক।

আমি আগে কখনো এভাবে গাড়ি চালাইনি। শান্তনু তখন একেবারে পাগলের মতো গাড়ি চালাচ্ছিল, বাঁক ঘোরাচ্ছিল যেন ওর জীবনের একমাত্র কাজ এই মুহূর্তে আমাকে ভয় দেখানো। আমি ভয়ে চিৎকার করছিলাম— “শান্তনু, ধীরে! থাম, আমি নামব!”

কিন্তু ও কেবল হেসে যাচ্ছিল, সেই ছোট ছেলেদের মতো হাসি, যাদের কোনো দুশ্চিন্তা নেই। সেদিন বুঝলাম—ওর পাশে থাকলে ভয়ও কখনো কখনো আনন্দে পরিণত হয়।

তারপর এল দুর্গাপূজা। আমি লাল শাড়ি পরেছিলাম, সোনার কাজ করা। সেদিন অফিসের গ্রুপ ফটো তোলা হচ্ছিল। শান্তনু আমার পাশে দাঁড়াল।

পরে যখন ছবিটা সোশ্যাল মিডিয়ায় উঠল, তখন এক অচেনা কেউ ওর বাবা-মাকে ট্যাগ করে মজা করল— “এরা তো একেবারে বিয়ের জন্য তৈরি।”

আমি প্রথমে লজ্জায় লাল হয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু অদ্ভুতভাবে সেই মুহূর্তেই আমার ভেতরে কিছু ভেঙে পড়ল, আবার কিছু গড়ে উঠল। আমি উপলব্ধি করলাম—শান্তনুকে আমি ভালোবেসে ফেলেছি।

এটা কোনো ছোট্ট খুনসুটি নয়, কোনো মজার ছল নয়। এটা সত্যি। আমাদের দৃষ্টির ভেতরে, হাসির আড়ালে, ছোট ছোট স্পর্শের মধ্যে—অদৃশ্যভাবে এক ভালোবাসা জন্ম নিয়েছে।

দুর্গাপূজার ছবির পর থেকে আমি আর লুকোতে পারিনি। পৃথিবী যদি আমাদের দেখে, তাতে কী আসে যায়?
বরং ভালোবাসা যে কতটা সত্যি, সেটা তখনই বোঝা গেল। শান্তনুর সঙ্গে থাকা মানেই এক অদ্ভুত নিরাপত্তা, এক অজানা টান, আর এক অপূর্ব আনন্দ। তখনো আমরা দুজনেই মুখে কিছু বলিনি, কিন্তু নিঃশব্দে একে অপরকে স্বীকার করে নিয়েছিলাম। আমাদের গল্পের সেই প্রথম স্বীকৃতি এসেছিল পৃথিবীর চোখে—কিন্তু সবচেয়ে বেশি এসেছিল আমার নিজের মনে।

অধ্যায় ৪: বিচ্ছেদ

বাংলা রোমান্টিক ছোট গল্পটির অডিও স্টোরি শুনতে নিচে প্লে বোতাম টি ক্লিক করুন।

এক শনিবার বিকেল। অফিস ফাঁকা, কেবল আমি আর শান্তনু কাজ করছিলাম। টেবিলের এক পাশে শান্তনুর হালকা উপস্থিতি আমাকে শান্তি দিচ্ছিল। বাইরে তখন বৃষ্টি পড়ছিল।

হঠাৎ আমার ফোনটা বেজে উঠল—বিদেশে থাকা আমার এক পুরনো বন্ধুর ভিডিও কল; “হেই মেঘলা! দেখ, আমি নতুন শহরে চলে এসেছি।” ওকে দেখে আমি খুশি হয়ে মজা করছিলাম, শহরের ছবি নিয়ে হাসাহাসি করছিলাম।

যখন ঘুরে তাকালাম, দেখলাম শান্তনু একটু দূরে সরে গেছে। ওর মুখে কোনো অভিব্যক্তি নেই, কিন্তু নীরবতাটা যেন আমার বুকের ওপর পাথরের মতো চেপে বসেছে। আমি কিছু বলিনি। শুধু মনে হচ্ছিল, এই নীরবতা অনেক কিছু বলে দিল।

পরের সোমবার ঠিক করেছিলাম—আজ ওর চোখের দিকে তাকাব, যদি সাহস পাই।

মিটিংয়ে বসে শান্তনু হালকা করে আমার দিকে তাকাল। আমি চোখ নামালাম না। কয়েক সেকেন্ড আমাদের দৃষ্টি আটকে রইল। বুকের ভেতর যেন কেঁপে উঠল।

হঠাৎ শান্তনু নিচু গলায় বলল— “তোর কি লজ্জা লাগছে না?”

শব্দগুলো যেন ধারালো ছুরির মতো বিঁধল। আমি কেঁপে উঠলাম, চোখ নামিয়ে নিলাম। সেদিন থেকেই আমাদের হাসি, মজা, খুনসুটি সব থেমে গেল। এরপর অফিসে নতুন সহকর্মী এল—অরিত্র।  হালকা প্রাণবন্ত স্বভাবের ছেলে। আমি তার সঙ্গে সহজেই কথা বলতাম, ছোটখাটো বিষয় নিয়ে হেসে উঠতাম।

একদিন ক্যান্টিনে অরিত্রর সঙ্গে হাসছিলাম, শান্তনুকে দেখলাম পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে। ওর মুখে কোনো অভিব্যক্তি ছিল না, কিন্তু সেই মুহূর্তে বুঝে গিয়েছিলাম—ওর উষ্ণতা উবে গেছে। আমরা আর আগের মতো ছিলাম না। মিটিংয়ের টেবিলে বসলে আমাদের মধ্যে আর কোনো আলাপ হত না। অফিসের করিডোরে দেখা হলে কেবল ভদ্র হাসি বিনিময় করতাম।

একদিন সাহস করে আমি ওকে একটি মেসেজ পাঠালাম। “তুই কেমন আছিস?”

উত্তর এল— “ভালো। ব্যস্ত।”

শব্দগুলো ছিল এমন শুষ্ক, যেন রাস্তায় চলতে চলতে অচেনা কারও সাথে অল্প কথোপকথন। আমার ভেতরটা ভেঙে পড়ল। সেই রাতে ওয়াশরুমে গিয়ে চুপচাপ বসে পড়েছিলাম। চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ছিল।  ক্লান্তিটাকে দোষ দিলাম, কিন্তু ভেতরে জানতাম—আমি কাঁদছি এমন এক সম্পর্কের জন্য, যেটা আমার কখনোই ছিল না। শান্তনুর সাথে কাটানো প্রতিটি মুহূর্ত যেন এখন ছিন্নবিচ্ছিন্ন স্মৃতি হয়ে আমাকে তাড়া করছিল।

ভালোবাসা যতই নীরব হোক, সে তোমাকে ভেঙে দেয়। অথচ অদ্ভুতভাবে, সেই ভাঙনকেই আবার আঁকড়ে থাকতে ইচ্ছে করে। কিছুদিন পর শান্তনু একেবারে দূরত্ব তৈরি করে ফেলল। ওর কথাগুলো ছিল সংক্ষিপ্ত, কণ্ঠে শীতলতা। আমি ভেবেছিলাম—একদিন যদি আবার ওর চোখে সেই পুরনো দৃষ্টি ফিরে আসে, আমি সব কিছু ক্ষমা করে দেব।

কিন্তু সেই দিন আর এল না। আমাদের সম্পর্কটা যেন শব্দহীন, অথচ ভারী এক বিদায় হয়ে গেল। একসময় যে টেবিলে আমরা একসাথে বসতাম, এখন সেই টেবিলে আমরা অচেনা দুই মানুষ। আমাদের মাঝে যে নীরব ভালোবাসা ছিল, সেটাই আমাদের ভেঙে দিল।

আমি উপলব্ধি করলাম—সব ভালোবাসা পূর্ণতা পায় না। কিছু ভালোবাসা কেবল স্মৃতি হয়ে বেঁচে থাকে।

ললিপপের জন্য লড়াই - ছোটদের রূপকথার গল্প: একটি মনোমুগ্ধকর ছোটদের গল্প যেখানে পিঁপড়ে, মাছি আর মাকড়শার মধ্যে খাবার ভাগাভাগি নিয়ে রূপকথার গল্পের মতো মজার লড়াই ঘটে। মায়াবী বনের অভিযানে আনন্দ আর শিক্ষা মিশে আছে। সম্পূর্ণ বাংলা ছোট গল্পটি পড়তে ও অডিও স্টোরির স্বাদ উপভোগ করতে এই লিংকটি ক্লিক করুন।

অধ্যায় ৫: বিদায়

বাংলা রোমান্টিক ছোট গল্পটির অডিও স্টোরি শুনতে নিচে প্লে বোতাম টি ক্লিক করুন।

একদিন টিম আউটিংয়ের আয়োজন হলো। আগেরবার যেমন উচ্ছ্বাস নিয়ে শান্তনু আমাকে ডেকেছিল, এবার ও একবারও জিজ্ঞেস করল না—আমি যাচ্ছি কিনা। এই নীরবতাটাই ছিল সবচেয়ে বড় উত্তর।

ওই দিনটাই আমি বুঝলাম—আমাদের গল্প শেষ হয়ে গেছে।

ফেরার পথে আমি একটা ছোট দোকানে ঢুকলাম। দোকানে সারি সারি রঙিন শুভেচ্ছা কার্ড সাজানো। আমি এক এক করে বেছে নিলাম— বিয়ের শুভেচ্ছা, নতুন বাড়ির শুভেচ্ছা, প্রথম সন্তানের শুভেচ্ছা, জন্মদিনের শুভেচ্ছা – একটা কার্ডে আমি নিজের হাতে ছোট ছোট বার্তা লিখলাম;

 “তোর জীবনটা আলোয় ভরে উঠুক।”
“তুই সবসময় সুখে থাক।”
“তোর হাসিটা কখনো ফিকে না হোক।”

কার্ডগুলো এমনভাবে ওর ডেস্কে রেখে দিলাম, যেন ও নিজে খুঁজে পায়। সেই রাতে ওর কাছ থেকে একটা ছোট্ট মেসেজ এলো—  “পেয়েছি।”

কিছুই বাড়তি লিখল না। অথচ আমার কাছে সেই দুটি শব্দই যথেষ্ট ছিল।

কয়েকদিন পর অফিস থেকে বেরোবার সময় শান্তনু হঠাৎই বলল—  “মেঘলা, আমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে।”

শব্দগুলো এমনভাবে বলল যেন আবহাওয়ার খবর দিচ্ছে। আমি এক মুহূর্তের জন্য স্থির হয়ে গেলাম। বুকের ভেতরটা ফাঁকা হয়ে গেল, কিন্তু মুখে কেবল হাসি ফুটিয়ে বললাম— “অভিনন্দন।”

তারপর ঘুরে চলে গেলাম। ওয়াশরুমে ঢুকে মেঝেতে বসে পড়লাম। চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ছিল, থামাতে পারছিলাম না। মেঝে যেন আমার সমস্ত কান্না শুষে নিচ্ছিল।

কিছুদিন পর শান্তনু তার হবু স্ত্রীর ছবি দেখাল। সঞ্চিতা—অত্যন্ত সুন্দরী, শান্ত, এমন একজন যিনি গাছপালা ভালোবাসেন। ছবিটা দেখে বুক কেঁপে উঠল।

আমি মনে মনে বললাম— “একদম সঠিক। এটাই তো হওয়ার কথা ছিল।”

আমার ভেতরে কোনো অভিযোগ রইল না। কেবল এক অদ্ভুত শূন্যতা, যা আমাকে গ্রাস করছিল।

আমি অন্য প্রজেক্টে ট্রান্সফার হওয়ার জন্য আবেদন করলাম। অবশেষে সেই দিন এলো—আমার শেষ দিন এই অফিসে।

শান্তনু আমার ডেস্কের কাছে এসে দাঁড়াল। চোখে এক অদ্ভুত অনুতাপ। “সব ভুলে যাস, মেঘলা। আমি দুঃখিত।”

আমি তাকিয়ে শান্ত গলায় বললাম— “আমি পারব না, শান্তনু।”

তারপর উঠে চলে গেলাম। কিছুদিন পর আমার কাছেও বিয়ের প্রস্তাব এলো। আমি হ্যাঁ বললাম। ভালোবাসার জন্য নয়—বরং একা হয়ে যাওয়ার ভয়ে। আমার বিয়ের দিনেও মনে হচ্ছিল, আমি অন্য কাউকে মনে করছি।
যে আমাকে ভেঙেছিল তার কথা নয়, বরং সেই ছেলেটার কথা—যে একসময় আমাকে এমনভাবে দেখেছিল যেন আমি গুরুত্বপূর্ণ।

বিদায় সবসময় শব্দ দিয়ে হয় না। কখনো কখনো বিদায় কেবল নীরবতায় হয়। আমাদের গল্পও ঠিক তেমনই।

আমি আর শান্তনুর মধ্যে কোনো ঝগড়া, কোনো নাটকীয়তা হয়নি। হয়েছিল কেবল নীরবতা, আর সেই নীরবতার মধ্যেই লুকিয়ে ছিল আমাদের অসম্পূর্ণ ভালোবাসা।

অধ্যায় ৬: কয়েক বছর পর

বাংলা রোমান্টিক ছোট গল্পটির অডিও স্টোরি শুনতে নিচে প্লে বোতাম টি ক্লিক করুন।

সময় কেমন করে বয়ে যায়, তা বুঝতেই পারিনি। জীবন আমাকে অন্য এক রাস্তায় নিয়ে গেছে। আমি এখন স্ত্রী, আমি মা। সকালে বাচ্চাদের স্কুলে পাঠানো, দুপুরে সংসার সামলানো, রাতে ক্লান্ত শরীর নিয়ে রান্নাঘরে দাঁড়ানো—এই একঘেয়ে কিন্তু নিরাপদ জীবনের ভেতরেই কেটে যাচ্ছিল দিনগুলো।

আমার ভেতরে সেই কুড়ির কোঠার অস্থির আবেগগুলো ধীরে ধীরে মিইয়ে গিয়েছিল। আগের মতো দমকা ঝড় আর ঢেউ আসত না। বরং ছোট ছোট অনুভূতিগুলোই আমার পৃথিবী হয়ে দাঁড়াল—ছেলের প্রথম আঁকা ছবি, মেয়ের মিষ্টি হাসি, বা ঋত্বিকের (আমার স্বামী) নীরব সমর্থন।

তবুও, মাঝে মাঝে মনে হত—কোনো একটা অংশ আমার ভেতরে এখনো অপূর্ণ রয়ে গেছে।

কখনো সখনো আমি কোনো ছবি পোস্ট করতাম সোশ্যাল মিডিয়ায়। অদ্ভুতভাবে দেখতাম—ভিউ কাউন্ট সবসময় ‘১’। আমি জানতাম, সেটা শান্তনু। আমাদের মধ্যে আর কোনো কথা হয়নি। তবুও এই নীরব যোগাযোগটা আমার কাছে অনেক কিছু ছিল। যেন প্রমাণ, আমরা এখনও একই পৃথিবীতে আছি।

আমি কখনো কোনো সংকেত পাঠাইনি। কারণ বুঝেছিলাম—কিছু নীরবতা মানুষকে সৎ থাকতে সাহায্য করে। কখনো কখনো আমি ভাবতাম—আবার যদি দেখা হয়, কী হবে?  মনে মনে দৃশ্য কল্পনা করতাম— আমি শান্ত থাকব, সঠিক কথাগুলো বলব। হয়তো কিছুই বলব না। হয়তো দিনের আলো ফুরিয়ে যাবে, আমরা কিছু না বলেই চলে আসব।

এসব ভেবে একধরনের শান্তি পেতাম। যেন বাস্তবে কিছু ঘটার আগেই কল্পনার ভেতরে একবার বিদায় বলে ফেলছি।

কিন্তু জীবন তো পরিকল্পনা মেনে চলে না। সেই অপ্রত্যাশিত সন্ধ্যায়, বৃষ্টিভেজা গলির কফি শপে আমি আবার ওকে দেখলাম। ও কিছু না জিজ্ঞেস করেই আমার সামনে বসে পড়ল। মুখে শান্ত হাসি। আমরা খুব সাধারণ কিছু কথা বললাম—
“কাজ কেমন চলছে?”
“শহর তো খুব পাল্টে গেছে।”
“বাচ্চারা?”

সবকিছু যেন জীবনের একটা ক্লাসে রোল কলের মতো। কিন্তু সেই সাধারণ কথার ভেতরেও লুকিয়ে ছিল আমাদের অসমাপ্ত অতীত।

একসময় শান্তনু হেসে বলল— “আমি ভাবছিলাম, কথা বলব না। কিন্তু তারপর মনে হল—আমাদের স্মৃতিগুলোকে সম্মান জানানোর জন্য পৃথিবী আর কটা সুযোগ দেয়?”

আমি অবাক হয়ে তাকালাম; “আমরা কি সত্যিই সেটা করছি?”

ও নরম গলায় বলল— “তুই বদলাসনি। অন্তত চোখে।”

আমি হাসলাম; “আমি বদলেছি। শুধু সেই অংশগুলোয়, যা দেখা যায় না।”

কাপ থেকে ধোঁয়া উঠছিল, আর সেই ধোঁয়াটা আমাদের মাঝে অদৃশ্য এক সেতুর মতো বাঁক খাচ্ছিল।

শান্তনু হঠাৎ বলল— “আমি তোর কার্ডগুলো দেখেছি। সবগুলো এখনো রেখেছি।”

আমার বুকটা ভরে উঠল; “ধন্যবাদ, সেগুলোকে নিয়ে মজা না করার জন্য।”

ও কিছুক্ষণ চুপ করে রইল, তারপর বলল— “আমি সবসময় তোর প্রতি ভালো ছিলাম না। দূরত্ব বজায় রাখাটা নিরাপদ মনে হয়েছিল।”

আমি মাথা নেড়ে বললাম— “আমিও নিজের প্রতি ভালো ছিলাম না। আমি তোর চোখের দেখাগুলোকে একটা গল্প বানিয়েছিলাম আর তাকে বাড়ি বলেছিলাম। তারপর ছাদহীন সেই বাড়িতে দাঁড়িয়ে বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করেছিলাম।”

শান্তনু একটু হেসে জিজ্ঞেস করল— “তুই কি আমাকে ঘৃণা করিস?”

আমি সহজভাবে বললাম— “না। আমরা তখন খুব ছোট ছিলাম। জানতাম না কী চাই।”

বাইরে বাস থামছিল, ভিজে মানুষজন ভেতরে ঢুকছিল, আবার বেরিয়ে যাচ্ছিল। বৃষ্টির ফোঁটা জানলার কাঁচে লেগে শব্দ তুলছিল।

শান্তনু আমার বাচ্চাদের কথা জিজ্ঞেস করল, আমি তার শহরের খবর নিলাম। যে ঈর্ষাকে আমি এতদিন ভয় পেয়েছিলাম, সেটা আর এল না। বরং মনে হচ্ছিল—এটাই ভালোবাসার পরিণতি, যা কৃতজ্ঞতায় রূপ নেয়।

হঠাৎ শান্তনু বলল— “কখনও কখনও আমি সেই পূজার ছবির কথা ভাবি। ইশ, তখন যদি আরেকটু সাহসী হতাম।”

আমি নিঃশ্বাস ফেলে বললাম— “আমিও তাই ভাবি। কিন্তু যদি আমরা তা হতাম, তাহলে আমরা এখন অন্য মানুষ হতাম। আর আমি যে আমি, তাকে আমি মেনে নিয়েছি।”

ও মাথা নেড়ে চুপ করে রইল।

চা শেষ হওয়ার পর শান্তনু হঠাৎ জিজ্ঞেস করল— “যোগাযোগ রাখবি?”

প্রশ্নটা এমনভাবে বলল যেন ছোট্ট এক রেইনকোট পরিয়ে দিয়েছে কথাটাকে—অতি ভঙ্গুর, অতি সতর্ক।

আমি হেসে উত্তর দিলাম— “আমরা তো রাখিই।”

ও বুঝে গেল। দরজার কাছে এসে শান্তনু আমার কাঁধে হালকা হাত রাখল। তারপর বৃষ্টিতে বেরিয়ে গেল। মাথা সামান্য উঁচু করে তাকাল আকাশের দিকে, যেন কোনো পুরনো বন্ধুকে স্বাগত জানাচ্ছে। আমি জানালার ভেতর থেকে তাকিয়ে রইলাম। আমার ভেতরে যে ব্যথার আশঙ্কা ছিল, সেটা আর এল না। বরং এক ধরনের স্বস্তি এলো।

আমাদের অসম্পূর্ণ গল্পকে আর অস্বীকার করার দরকার নেই। সেটা ছিল, আছে—কিন্তু এখন আর তার ভার বয়ে বেড়াতে হবে না। আমি বুঝলাম, ভালোবাসা সবসময় মেলে না। কিন্তু ভালোবাসা আমাদের বদলে দেয়।  কখনো আমরা মানুষটাকে মিস করি না—বরং সেই নিজেকে মিস করি, যাকে ভালোবাসার জন্য একসময় ত্যাগ করেছিলাম।

বৃষ্টি থেমে যাচ্ছিল। আমার একমাত্র বিদায়টা ফিসফিস করে বলা হল—কোনো শব্দ নয়, কেবল শান্তি।

পেঁতিজ্বলা মাঠের সেই রাত - ভুতের বাংলা ছোট গল্প: পেঁতিজ্বলা মাঠে ঘটে যাওয়া এক রহস্যময় ঘটনার উপর ভিত্তি করে রচিত এই বাংলা ছোট গল্প একটি ভুতের গল্প, যেখানে অতীত ও বর্তমান মিলে সৃষ্টি করে শিউরে ওঠার এক অভিজ্ঞতা। সম্পূর্ণ বাংলা ছোট গল্পটি পড়তে ও অডিও স্টোরির স্বাদ উপভোগ করতে এই লিংকটি ক্লিক করুন।

অধ্যায় ৭:এরপরের কথা

বাংলা রোমান্টিক ছোট গল্পটির অডিও স্টোরি শুনতে নিচে প্লে বোতাম টি ক্লিক করুন।

কফি শপে বসে থাকতে থাকতে যখন শান্তনু বৃষ্টির ভেতরে মিলিয়ে গেল, আমি কিছুক্ষণ জানালার ধারে স্থির হয়ে রইলাম। কাপটা তখন খালি, তবুও তার ভেতর থেকে অল্প ধোঁয়া উঠছিল। ধোঁয়াটাই যেন আমাকে মনে করিয়ে দিচ্ছিল—একটা গল্প শেষ হল, কিন্তু তার উষ্ণতা থেকে যাবে অনেকদিন।

অদ্ভুতভাবে, সেই ভয়ঙ্কর ব্যথা—যেটার জন্য এত বছর প্রস্তুত ছিলাম—সেটা এল না। বরং ভেতরে এক অদ্ভুত স্বস্তি এসে ভর করল। মনে হল, যে গল্প আমি এতদিন ধরে বুকের ভেতরে বহন করেছি, তাকে আর মুছে দেওয়ার দরকার নেই। তাকে ভুল প্রমাণ করারও দরকার নেই। তাকে কেবল ভাঁজ করে রেখে দেওয়া যায়—একটা পুরনো শাড়ির মতো, যেটা একসময় পরতে ভালো লাগত, কিন্তু এখন আর দরকার নেই।

বাড়ি ফেরার পথে রাস্তার ভিজে পিচগুলোতে আলো পড়ছিল। স্ট্রিটলাইট আর দোকানের আলো জলে প্রতিফলিত হয়ে যেন ক্ষুদ্র গ্যালাক্সির মতো লাগছিল। প্রতিটা আলো আমার চোখে মনে হচ্ছিল জীবনের নতুন সম্ভাবনা।

আমি ফোনটা বের করে সোশ্যাল মিডিয়ার অ্যাপ খুললাম। একটা ছবি পোস্ট করার ইচ্ছে হচ্ছিল। কিন্তু হঠাৎই আবার বন্ধ করে দিলাম। আজ অন্য জানলা দিয়ে পৃথিবীকে দেখতে ইচ্ছে করছিল—যেটা স্ক্রিনে নয়, সত্যিই চোখের সামনে।

বাড়িতে ফিরে দেখি—অর্পণ আর ঋতিকা চেয়ার আর কম্বল দিয়ে ছোট্ট একটা ঘর বানিয়েছে। সেই ঘরটা ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই ভেঙে যাবে, তবুও ওদের চোখে সেটা বিশাল এক প্রাসাদ।

ওরা আমাকে টেনে নিয়ে গেল ভেতরে— “মা, তুই আমাদের একটা গল্প বল!”

আমি হেসে শুয়ে পড়লাম। গল্প শুরু করলাম— একটা জাহাজডুবির গল্প, যেখানে নায়িকা সমুদ্রে হারিয়ে গিয়ে আবার বেঁচে ফিরেছিল। একটা দানবের গল্প, যে আসলে কেবল আলোর খেলা।

ওরা মুগ্ধ হয়ে শুনছিল। সেই মুহূর্তে আমি বুঝলাম—এটাই আমার সত্যিকারের পৃথিবী।

রাতের খাওয়ার পর রান্নাঘরে দাঁড়িয়ে আমি নিজের প্রতিচ্ছবি দেখছিলাম জানলার কাঁচে। সেখানে তিনটি মেয়েকে দেখতে পেলাম—

সেই মেঘলাকে, যে প্রথম দিনে নীল শার্ট পরে এসেছিল, প্রত্যাখ্যানের আড়ালে নিজেকে লুকিয়ে রেখেছিল।
সেই মেঘলাকে, যে অদৃশ্য কার্ড লিখেছিল এমন জীবনের জন্য, যা তার নিজের ছিল না।
আর এখনকার মেঘলাকে—একজন মা, যে শান্ত নিঃশ্বাসে শান্তি খুঁজে পায়।

সবগুলোই আমি, আর সবগুলোই সত্যি।

আমি তখন উপলব্ধি করলাম—কখনও কখনও আমরা যেটা ধরে রাখি, সেটা আসলে ভালোবাসা নয়। সেটা সাহস—ভালোবাসা একদিন আমাদের যে সাহস দিয়েছিল, সেই সাহসই আবার আমাদের নতুন করে ভালোবাসতে শেখায়।

কখনও কখনও আমরা মানুষটাকে মিস করি না, বরং মিস করি সেই নিজেকে, যাকে একসময় ভালোবাসার জন্য ত্যাগ করেছিলাম।

বাইরে বৃষ্টি থেমে গেছে। রাতের হাওয়া শান্ত হয়ে এসেছে। আমি নিঃশব্দে এক বিদায় বললাম—শব্দে নয়, কেবল মনে।

শান্তনুর কথা মনে পড়ল— “তুই বদলাসনি।”

আমার উত্তর মনে পড়ল— “আমি বদলেছি—শুধু সেই অংশগুলোয়, যা দেখা যায় না।”

হ্যাঁ, সেটাই যথেষ্ট।

জীবনের গল্পে সব প্রশ্নের উত্তর হয় না। কিছু অধ্যায় অসম্পূর্ণ থেকে যায়। কিন্তু অসম্পূর্ণতা মানেই শেষ নয়। কখনও কখনও অসম্পূর্ণতাই আমাদের সম্পূর্ণ করে।

এই রকম মনমুগ্ধকর অডিও স্টোরির সহযোগে বাংলা ছোট গল্প -এর আপডেট পেতে আমাদের WhatsApp চ্যানেল জয়েন করুন।

আমরা কারা

নতুন বাংলা ছোট গল্প

প্রেমের নতুন ঠিকানা

অসম্পূর্ণ ভালোবাসা, বৃষ্টি ভেজা স্মৃতি আর জীবনের নতুন মানে খোঁজার আবেগঘন রোমান্টিক বাংলা ছোট গল্প। মেঘলা ও শান্তনুর হৃদয়ের যাত্রা পাঠককে ছুঁয়ে যাবে গভীরভাবে।

অসম্পূর্ণ ভালোবাসা, বৃষ্টি ভেজা স্মৃতি আর জীবনের নতুন মানে খোঁজার আবেগঘন রোমান্টিক বাংলা ছোট গল্প। মেঘলা ও শান্তনুর হৃদয়ের যাত্রা পাঠককে ছুঁয়ে যাবে গভীরভাবে।

সম্পুর্ন্য গল্পটি পড়ুন: প্রেমের নতুন ঠিকানা

ডি. বি. কুপার হাইজ্যাকিং

ডি.বি. কুপার: এক রহস্যময় সত্য ঘটনা। ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে অমীমাংসিত এক হাইজ্যাকিংয়ের রোমাঞ্চকর গল্প। তার নিখোঁজ হওয়ার পরের কাহিনী জানুন।

ডি.বি. কুপার: এক রহস্যময় সত্য ঘটনা। ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে অমীমাংসিত এক হাইজ্যাকিংয়ের রোমাঞ্চকর গল্প। তার নিখোঁজ হওয়ার পরের কাহিনী জানুন।

সম্পুর্ন্য গল্পটি পড়ুন: ডি. বি. কুপার হাইজ্যাকিং

ললিপপের জন্য লড়াই

একটি মনোমুগ্ধকর ছোটদের গল্প যেখানে পিঁপড়ে, মাছি আর মাকড়শার মধ্যে খাবার ভাগাভাগি নিয়ে রূপকথার গল্পের মতো মজার লড়াই ঘটে। মায়াবী বনের অভিযানে আনন্দ আর শিক্ষা মিশে আছে।

একটি মনোমুগ্ধকর ছোটদের গল্প যেখানে পিঁপড়ে, মাছি আর মাকড়শার মধ্যে খাবার ভাগাভাগি নিয়ে রূপকথার গল্পের মতো মজার লড়াই ঘটে। মায়াবী বনের অভিযানে আনন্দ আর শিক্ষা মিশে আছে।

সম্পুর্ন্য গল্পটি পড়ুন: ললিপপের জন্য লড়াই

Leave a Comment

অনুলিপি নিষিদ্ধ!

🔔 সাবস্ক্রাইব করুন! রিয়েল টাইমে মন্ত্রমুগ্ধকর অডিও স্টোরি সহযোগে নতুন নতুন বাংলা ছোট গল্পের আপডেট পেতে এখনই সাবস্ক্রাইব করুন! সাবস্ক্রাইব
শিকড়ের ডাক – ভুতের বাংলা ছোট গল্প জোনাকি রাতের পুতুল রহস্য – ছোটদের রূপকথার গল্প বারান্দার শেষ চিঠি – বাংলা রোমান্টিক ছোট গল্প অসম্ভব সম্ভব হলো – অনুপ্রেরণামূলক বাংলা ছোট গল্প ছায়ার ঘর – রহস্য-রোমাঞ্চ বাংলা ছোট গল্প