অধ্যায় ১: চুরি এবং অপ্রত্যাশিত বার্তা
কলকাতার দেওয়ানজি গ্যালারি, যা তার দৃষ্টিনন্দন শিল্পকর্ম ও চিত্র প্রদর্শনীর জন্য সুপরিচিত, রবিবারটিকে বরাবরই একটি বিশেষ দিন হিসেবে চিহ্নিত করে। এই দিন, শহরের শিল্পপ্রেমী এবং পর্যটকদের ভিড় জমে গ্যালারির দরজায়। ‘মেঘদূত’—রাজা রবি বর্মার অমর সৃষ্টি—গ্যালারির সবচেয়ে আকর্ষণীয় প্রদর্শনী। এ চিত্রকর্ম কেবলমাত্র তার শিল্পগত বৈচিত্র্যের জন্য নয়, বরং ইতিহাসে তার গভীর গুরুত্বের জন্যও সম্মানিত। কিন্তু এ রবিবার, এই গ্যালারি উৎসবের আনন্দে নয়, বরং আতঙ্ক ও অশান্তির ছায়ায় ঢাকা পড়ে গেল।
সকাল ১১টা বাজে, যখন গ্যালারির প্রথম পর্যটকেরা প্রবেশ করতে শুরু করে। স্থানীয় কিউরেটর সোমেশ মৈত্র, যিনি প্রতিদিনের মতোই গ্যালারির প্রদর্শনী তদারকি করছিলেন, হঠাৎ করেই চিত্রকর্মটির প্রদর্শনী ঘরে কিছু অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করেন। ‘মেঘদূত’-এর জায়গাটি ফাঁকা! প্রথমে ভেবেছিলেন, হয়তো রক্ষণাবেক্ষণের জন্য চিত্রকর্মটি সরানো হয়েছে। কিন্তু অন্যান্য কর্মচারীদের সাথে কথা বলে নিশ্চিত হন, চিত্রকর্মটি সেখানেই থাকার কথা। অ্যালার্ম বাজানো হয়, এবং সঙ্গে সঙ্গেই কর্তৃপক্ষকে খবর পাঠানো হয়।
কর্মচারীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। প্রতিটি কোণ চেক করা হয়, কিন্তু কোনো খোঁজ পাওয়া যায় না। গ্যালারির প্রধান, অরূপ চ্যাটার্জি, দ্রুত পুলিশকে খবর দেন। তিনি গ্যালারির কন্ট্রোল রুমে কর্মচারীদের নিয়ে জড়ো হন। সিসিটিভি ফুটেজ চালু করা হয়। প্রত্যেকেই স্ক্রিনের দিকে একমনে তাকিয়ে ছিলেন। কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার—সিসিটিভি ফুটেজে কিছুই ধরা পড়েনি!
অরূপ: “এটা কীভাবে সম্ভব? ফুটেজে তো কেউ চিত্রকর্ম সরানোর দৃশ্যই নেই!”
সোমেশ: “সারারাত আমি এখানে ছিলাম, স্যার। সিকিউরিটি সিস্টেম সক্রিয় ছিল। কেউ আসতে পারেনি।”
অরূপ: “কিন্তু ‘মেঘদূত’ গেল কোথায়? এমনকি তার ফ্রেমের কোনো চিহ্নও নেই!”
এই অস্বাভাবিক পরিস্থিতি পুরো ঘটনাটিকে আরও রহস্যময় করে তোলে। কর্তৃপক্ষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
দুপুর নাগাদ লালবাজার থেকে ইন্সপেক্টর সত্যজিৎ সেন এসে উপস্থিত হন। সত্যজিৎ তার বুদ্ধিমত্তা ও অদম্য ধৈর্যের জন্য পরিচিত। শহরের অনেক জটিল রহস্য তার হাতে সমাধান পেয়েছে। দেওয়ানজি গ্যালারির এই অদ্ভুত চুরি নিয়ে তিনি দ্রুত কাজ শুরু করেন।
সত্যজিৎ: “আমি প্রথমেই ফুটেজগুলো আবার দেখতে চাই। হয় কিছু একটা বাদ পড়েছে, নয়তো এটা খুবই পরিকল্পিত একটি চুরি।”
তিনি দীর্ঘ সময় ধরে ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করেন। গ্যালারির মূল প্রবেশদ্বার থেকে শুরু করে চিত্রকর্মের প্রদর্শনী ঘর পর্যন্ত, প্রতিটি মুহূর্ত তিনি খুঁটিয়ে দেখেন। কিন্তু কিছুই সন্দেহজনক মনে হয় না।
সত্যজিৎ: “এটা অত্যন্ত চতুর কোনো চোরের কাজ। চিত্রকর্মটি এমনভাবে সরানো হয়েছে যেন কেউ কিছু বুঝতে না পারে। আমার মনে হয়, চোর গ্যালারির ভেতরের কেউ। অথবা, এর পেছনে কেউ খুব ভালোভাবে পরিকল্পনা করেছে।”
গ্যালারির কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করার সময়, সত্যজিৎ একটি অদ্ভুত জিনিস আবিষ্কার করেন। চিত্রকর্মটির প্রদর্শনী ঘরের এক কোণে একটি হলুদ কাগজ পড়ে ছিল। কাগজে একটি কবিতার মতো কিছু লেখা:
“মেঘের গহনে মিশেছে রূপ,
খুঁজে দেখো, হবে সময়ের প্রণয়সূত্র।”
সত্যজিৎ কাগজটি হাতে নিয়ে কয়েক মুহূর্ত ধরে ভাবলেন। এই বার্তা কি কোনো সংকেত? নাকি শুধু দৃষ্টি বিভ্রান্ত করার জন্য রেখে যাওয়া হয়েছে?
সত্যজিৎ: “এই কাগজটি নিশ্চয়ই চোরের কোনো বার্তা। গ্যালারির কেউ কি এটি আগে দেখেছেন?”
কেউই এ কাগজ সম্পর্কে কিছু বলতে পারল না।
গ্যালারির কর্মীদের মধ্যে সন্দেহ বাড়তে থাকে। একজন কর্মী জানান, গত সপ্তাহে একটি মধ্যবয়সী মহিলা বারবার ‘মেঘদূত’-এর সামনে দীর্ঘ সময় ধরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তার আচরণ কিছুটা অস্বাভাবিক ছিল। কিন্তু তিনি কে ছিলেন বা কেন এসেছিলেন, কেউ বলতে পারেনি।
সত্যজিৎ এর পর গ্যালারির নিরাপত্তা দলের সাথে কথা বলেন। তারা জানান, গ্যালারির বাইরে একটি সাদা গাড়ি প্রায় ঘণ্টাখানেক দাঁড়িয়েছিল, তবে সেটি কোনো সন্দেহজনক কার্যকলাপ করেনি।
সত্যজিৎ বুঝতে পারেন, এই চুরি কেবল অর্থলিপ্সার জন্য নয়; এটি আরও গভীর কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে করা হয়েছে। ‘মেঘদূত’-এর গুরুত্ব শুধু আর্ট গ্যালারিতে সীমাবদ্ধ নয়। এটি একটি ঐতিহাসিক সম্পদ, এবং এই চিত্রকর্ম চুরি করে হয়তো কেউ এক বিশেষ বার্তা দিতে চায়।
এভাবে রহস্য আরও গভীর হতে থাকে, এবং সত্যজিৎ তার পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, তা নিয়ে গভীর চিন্তায় ডুবে যান। এই চুরি শুধুমাত্র একটি চিত্রকর্মের নয়; এটি সময়ের সঙ্গে মিশে থাকা এক রহস্যময় ইতিহাসের দরজা খুলে দিয়েছে।
রহস্য-রোমাঞ্চ বাংলা ছোট গল্প - রতুলের রহস্য: রহস্য রোমাঞ্চে ভরা এক বাংলা গল্প!শিলিগুড়িতে বিখ্যাত ব্যবসায়ী সূর্যকান্ত মিত্র খুন!ইন্সপেক্টর সোমনাথ মজুমদারের তদন্তে উঠে আসে নানা রহস্য।নাতনী অদিতি কি খুনের মূল চক্রী?চুরি যাওয়া মূল্যবান পেইন্টিংয়ের সাথে কী সম্পর্ক?একের পর এক রহস্যের সমাধানে সোমনাথ পৌঁছান সত্যের কাছে।রহস্য রোমাঞ্চ পছন্দ করলে এই বাংলা গল্প আপনার জন্যই! সম্পুর্ন্য বাংলা ছোট গল্পটি পড়তে এই লিংকটি ক্লিক করুন।
অধ্যায় ২: গোপন বার্তা এবং সন্দেহের দিক
কলকাতা শহরের ব্যস্ত গলির মধ্যে দেওয়ানজি গ্যালারি এখন যেন এক তীর্থস্থান, যেখানে শুধুই উত্তেজনা আর উদ্বেগের ছায়া। সত্যজিৎ গ্যালারির মূল কক্ষে দাঁড়িয়ে চারপাশের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি গভীর মনোযোগে পর্যবেক্ষণ করছিলেন। কর্মীরা বিভ্রান্ত, গ্যালারির মালিক প্রবাল দেওয়ানজি প্রায় কাঁপতে কাঁপতে বললেন, “ইন্সপেক্টর, আপনি এই রহস্য সমাধান করতে না পারলে, আমাদের পরিবারের নাম মাটিতে মিশে যাবে। এই গ্যালারি আমাদের গর্ব, আর ‘মেঘদূত’ আমাদের ঐতিহ্যের প্রতীক।”
সত্যজিৎ তার শান্ত স্বরেই উত্তর দিলেন, “আপনার উদ্বেগ বুঝতে পারছি, মিঃ দেওয়ানজি। তবে আমাকে একটু সময় দিন। আমি এই রহস্যের সূত্র ঠিক খুঁজে বার করব।”
প্রথম ধাপে, সত্যজিৎ গ্যালারির কর্মীদের ডেকে এক এক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। প্রত্যেকের কথায় যেন কোনো গোপনীয়তার আভাস নেই। তবে এক কর্মী, রমেন, জানান, “একটি মহিলা প্রায়ই গ্যালারিতে আসতেন। তিনি ‘মেঘদূত’-এর সামনে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকতেন, যেন ছবিটির প্রতিটি অংশ মন দিয়ে পর্যবেক্ষণ করতেন। শেষবার যখন তিনি এসেছিলেন, সেদিনই ছবিটি চুরি হয়।”
সত্যজিৎ উৎসাহী হয়ে জানতে চান, “তাহলে কি মহিলার কোনো নাম বা ঠিকানা জানা গেছে?”
রমেন মাথা নাড়লেন, “না, স্যার। তবে তিনি সাধারণত নীল শাড়ি পরতেন, আর সব সময় একটি কালো হ্যান্ডব্যাগ সঙ্গে রাখতেন। তার চেহারা বেশ স্মার্ট, কিন্তু চোখে একটা অদ্ভুত শূন্যতা ছিল।”
এই তথ্য সত্যজিৎকে আরও ভাবতে বাধ্য করে। তিনি গ্যালারির সিসিটিভি ফুটেজ আবার পর্যবেক্ষণ করেন। মহিলার গতিবিধি স্পষ্ট দেখা যায়, তবে তাঁর চেহারায় কোনো অস্বাভাবিক কিছু ধরা পড়ে না। যদিও, তাঁর গ্যালারি ছাড়ার সময়ের পরই ‘মেঘদূত’ নিখোঁজ হয়।
এরই মধ্যে, আরেকটি নতুন তথ্য উঠে আসে। দেওয়ানজি পরিবারের এক সদস্য, রোহিত, যিনি আর্থিক সমস্যায় জড়িয়ে পড়েছেন, তাকে নিয়ে সন্দেহ বাড়ে। রোহিত নিজে এসে বলেন, “ইন্সপেক্টর, আমি জানি আপনারা আমাকে সন্দেহ করছেন। কিন্তু আমি এই চুরির সঙ্গে যুক্ত নই। আমি মানছি, আমার আর্থিক অবস্থা খারাপ, তবে আমাদের পরিবারের গর্ব নষ্ট করার কথা আমি ভাবতেও পারি না।”
সত্যজিৎ শান্তভাবে উত্তর দেন, “আমার কাজ সন্দেহ করা। সত্য উদঘাটন করার আগে আমি কাউকে দোষী বা নির্দোষ বলতে পারব না। তবে, আপনার কিছু গতিবিধি সম্পর্কে আমাকে বিস্তারিত বলতে হবে।”
সন্দেহ ক্রমে গাঢ় হতে থাকে যখন অরিন্দম মিত্র, একজন শিল্প সমালোচক, যিনি ‘মেঘদূত’-এর উপর গবেষণা করছিলেন, তার বাড়ি থেকে কিছু স্কেচ উদ্ধার করা হয়। সেই স্কেচগুলি ‘মেঘদূত’ চিত্রকর্মের বিভিন্ন অংশের হুবহু কপি।
অরিন্দম প্রথমে অস্বীকার করেন, “ইন্সপেক্টর, এই স্কেচগুলি আমার গবেষণার জন্যই তৈরি করা। আমার কোনো চুরির প্রয়োজন নেই।”
সত্যজিৎ তাকে প্রশ্ন করেন, “আপনার গবেষণার জন্য ঠিক ‘মেঘদূত’ কেন এত গুরুত্বপূর্ণ?”
অরিন্দম কিছুটা থেমে উত্তর দেন, “এই চিত্রকর্মটি রাজা রবি বর্মার একটি অসাধারণ সৃষ্টি। এর মধ্যে এমন কিছু লুকানো বার্তা আছে যা বোঝা যায় না। আমি সেই রহস্য উদ্ঘাটন করতে চাইছিলাম।”
এই কথাগুলি শুনে সত্যজিৎ বুঝতে পারেন, ‘মেঘদূত’-এর পিছনে শুধু শিল্পের ঐতিহ্যই নয়, কোনো গভীর রহস্য লুকিয়ে থাকতে পারে। কিন্তু কী সেই রহস্য?
গ্যালারির সিসিটিভি, অরিন্দমের স্কেচ, রহস্যময় মহিলা এবং রোহিতের আর্থিক সমস্যার মধ্য দিয়ে সত্যজিৎ এক জটিল জালের মুখোমুখি হন। হঠাৎ, তার মনে পড়ে হলুদ কাগজের সেই অদ্ভুত বার্তাটি: “মেঘের গহনে মিশেছে রূপ।”
তিনি আবার বার্তাটি হাতে নিয়ে বলেন, “এই রহস্যের উত্তর কোথাও না কোথাও আছে। কেবল সঠিক সুতো খুঁজে বের করতে হবে।”
তদন্তের প্রতিটি ধাপ তাকে এক অদ্ভুত রহস্যময় দুনিয়ার দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। তিনি জানেন, প্রতিটি পাজলের টুকরো একত্র করতে না পারলে ‘মেঘদূত’-এর সন্ধান পাওয়া অসম্ভব। কিন্তু একটাই প্রশ্ন বারবার মনে উঁকি দিচ্ছে—এই রহস্যের কেন্দ্রে কে আছে?
তাঁর ভাবনার মাঝে প্রবাল দেওয়ানজি এসে বলেন, “ইন্সপেক্টর, আমি বুঝতে পারছি না, আমরা কোথায় ভুল করেছি। কীভাবে ছবিটি চুরি গেল?”
সত্যজিৎ তার শান্ত গলায় বলেন, “কিছু চুরি করার জন্য দোষীকে কখনো প্রথমে ছবি চুরি করতে হয় না, বরং সেই জায়গাটা বোঝার জন্যই সময় লাগে। আমাকে আরও কিছু সময় দিন। রহস্যের পর্দা তোলার কাজ শুরু করেছি। এবার শুধু দেখুন।”
এই কথার মাধ্যমে তদন্তের পরবর্তী পর্যায়ে সত্যজিৎ তার পরিকল্পনা তৈরি করেন। রহস্যের জট খুলতে তিনি এবার নতুন পথে পা বাড়ান।
অধ্যায় ৩: চিত্রকর্মের সন্ধানে
সত্যজিৎ এবং তার দল তিন দিনের নিবিড় অনুসন্ধানের পর চুরি হওয়া ‘মেঘদূত’ চিত্রকর্মের অবস্থান চিহ্নিত করতে সক্ষম হন। একটি জঙ্গলের গভীরে, পরিত্যক্ত একটি ঝোপঝাড়ের মধ্যে, চিত্রকর্মটি উদ্ধার করা হয়। কিন্তু চিত্রকর্মটির অবস্থা দেখে সত্যজিৎ ভ্রূকুঞ্চিত করলেন। ছবির অনেক অংশ মুছে ফেলা হয়েছে, এবং রঙের ওপর স্পষ্ট রাসায়নিক প্রভাব রয়েছে। চিত্রকর্মটি হাতিয়ারে মোড়ানো অবস্থায় পাওয়া যায়, যেন কোনো তাড়াহুড়ো করে সেটি গোপন করার চেষ্টা করা হয়েছে।
দলটি স্থানীয় ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ ডাঃ সোমনার সঙ্গে যোগাযোগ করে। চিত্রকর্মটি পরীক্ষা করার সময়, ডাঃ সোমনা বলেন, “ইন্সপেক্টর, এটি স্পষ্ট যে কেউ চিত্রকর্মটি নষ্ট করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু অবাক করার মতো বিষয় হলো, মুছে ফেলা অংশের পেছনে কিছু গোপন বার্তা থাকতে পারে।”
সত্যজিৎ আগ্রহী হয়ে জিজ্ঞাসা করেন, “গোপন বার্তা মানে? আপনি কি একটু ব্যাখ্যা করতে পারবেন?”
ডাঃ সোমনা তার মাইক্রোস্কোপের নিচে চিত্রকর্মটি রেখে ব্যাখ্যা করতে শুরু করলেন। “দেখুন, চিত্রকর্মটির মুছে ফেলা অংশে আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি ব্যবহার করে আমরা কিছু সংখ্যা এবং জ্যামিতিক আকৃতি আবিষ্কার করেছি। এগুলো কেবল সাধারণ কোনো চিহ্ন নয়। এগুলো দেখে মনে হচ্ছে, এটি একধরনের কোড, যা সম্ভবত চিত্রকর্মটির আসল রহস্যের দিকে ইঙ্গিত করে।”
সত্যজিৎ একটি কপি তৈরির নির্দেশ দেন এবং কোডগুলি ডিকোড করার জন্য তার দলের কোড বিশেষজ্ঞ সুমিত্র সেনের কাছে পাঠান। সুমিত্র ছিলেন একজন চিত্রশিল্পের ইতিহাস বিশেষজ্ঞ এবং গোপন কোড বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে দক্ষ।
সুমিত্র ছবি দেখে বলেন, “ইন্সপেক্টর, এই কোডটি শিল্পীদের এক বিশেষ গোপন ভাষা। ১৮শ শতাব্দীতে অনেক শিল্পী নিজেদের কাজের মধ্যে গোপন বার্তা লুকিয়ে রাখতেন, যা শুধুমাত্র নির্দিষ্ট কেউই বুঝতে পারত। এই কোডটি সেই ঐতিহ্যের একটি অংশ বলে মনে হচ্ছে। আমাকে কিছু সময় দিন, আমি এটা খোলার চেষ্টা করছি।”
পরবর্তী কয়েক ঘণ্টা ধরে সুমিত্র এবং তার দল কোডটি বিশ্লেষণ করতে থাকেন। সত্যজিৎ অধীর অপেক্ষায় বসে ছিলেন, কখন এই কোডের রহস্য উদ্ঘাটন হবে। অবশেষে, সুমিত্র উত্তেজিত কণ্ঠে বলেন, “ইন্সপেক্টর, আমরা কোডটি খুলতে সক্ষম হয়েছি! এটি একটি ঠিকানা নির্দেশ করছে।”
সত্যজিৎ তৎক্ষণাৎ উঠে দাঁড়ালেন। “ঠিকানা কোথায়?”
সুমিত্র একটি নোটবুক থেকে ঠিকানাটি পড়ে শোনালেন, “বসিরহাটের একটি পুরনো গ্রামে। ঠিকানা অনুযায়ী, এটি গ্রামের এক প্রাচীন মন্দিরের কাছাকাছি। কিন্তু এই ঠিকানার সঙ্গে চিত্রকর্মটির কী সম্পর্ক, তা এখনও পরিষ্কার নয়।”
সত্যজিৎ বলেন, “তাহলে আর দেরি নয়। আমরা ওই গ্রামে রওনা দিচ্ছি। কিন্তু সতর্ক থাকুন। যদি এটি একটি পরিকল্পিত চুরির অংশ হয়, তবে অপরাধীরা এই কোডের বিষয়েও জানে এবং তারা আমাদের বাধা দিতে পারে।”
দলটি দ্রুত বসিরহাটের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। প্রাচীন মন্দিরের কাছাকাছি পৌঁছে, তারা দেখতে পান এলাকাটি সম্পূর্ণ পরিত্যক্ত। সেখানে কোনো মানুষের চিহ্ন নেই, কেবলমাত্র বাতাসের শব্দ আর মন্দিরের ধ্বংসস্তূপ। সত্যজিৎ তার দলের সঙ্গে মন্দিরের চারপাশ খুঁজতে থাকেন।
একটি পরিত্যক্ত ঘরের দরজা খুলতেই তারা একটি পুরনো সিন্দুক আবিষ্কার করেন। সিন্দুকটি মোটা তালায় বন্ধ ছিল। সত্যজিৎ তালাটি ভাঙার নির্দেশ দেন। ভিতরে একটি পুরনো পুঁথি এবং কিছু কাগজপত্র পাওয়া যায়। পুঁথির ভাঁজে একটি ছোট খামে মুড়ে রাখা ছিল আরেকটি নোট।
সত্যজিৎ সেটি পড়ে শোনালেন, “চিত্রকর্মটি কেবল শিল্প নয়, এটি আমাদের ঐতিহ্যের চাবিকাঠি। যা কিছু সত্য, তা মেঘের আড়ালে লুকিয়ে থাকে।”
এই কথাগুলি শুনে দলটি হতবাক হয়ে পড়ে। চিত্রকর্মটির আসল রহস্য কী? কে এটি লুকিয়ে রেখেছিল? এবং এই বার্তাটি কেন এত জটিল? সত্যজিৎ বুঝলেন, রহস্য এখনও শেষ হয়নি। বরং এটি একটি বড় পরিকল্পনার সূচনা মাত্র।
তিনি দৃঢ়ভাবে ঘোষণা করলেন, “আমরা এই বার্তার অর্থ উদ্ঘাটন করব। এই রহস্যের পর্দা পুরোপুরি ফাঁস না হওয়া পর্যন্ত আমরা থামব না।”
রহস্য-রোমাঞ্চ বাংলা ছোট গল্প - রহস্যের রঙ: ষাট বছরের পুরনো রহস্য উন্মোচন! এক অসাধারণ “অবলম্বন” চিত্রকর্ম, এক লেখক, এবং এক গ্রামের লুকানো রহস্য। এই বাংলা গল্পের লেখনীতে ফুটে উঠেছে রহস্য, রোমাঞ্চ, এবং শিল্পের গভীরতা। সম্পুর্ন্য বাংলা ছোট গল্পটি পড়তে এই লিংকটি ক্লিক করুন।
অধ্যায় ৪: গোপন সত্য উদঘাটন
পুরনো গ্রামে পৌঁছানোর পর, সত্যজিৎ এবং তার দল সোজা গ্রামের ছোট্ট বাজারের দিকে রওনা দেন। সেখানে একটি চা দোকানের সামনে কয়েকজন বৃদ্ধ বসে গল্প করছিলেন। চা দোকানের মালিক, সুধাময়, ছিল গ্রামের সবচেয়ে তথ্যপূর্ণ ব্যক্তি। সত্যজিৎ তার কাছে গিয়ে বললেন,
“কাকাবাবুর বাড়ি কোন দিকে? শুনেছি তিনি পুরনো জিনিসপত্র সংগ্রহ করেন। তার সঙ্গে কথা বলতে চাই।”
সুধাময় কিছুক্ষণ ভাবলেন, তারপর বললেন, “কাকাবাবু তো বেশ নামকরা মানুষ ছিলেন। তবে উনি আজকাল কারও সঙ্গে খুব একটা মিশতে চান না। তার বাড়ি মন্দিরের পেছনে। তবে সাবধান, উনি একটু রাগী মানুষ।”
সত্যজিৎ ধন্যবাদ জানিয়ে তার দল নিয়ে কাকাবাবুর বাড়ির দিকে রওনা দেন। বাড়িটি ছিল একটি পুরনো দোতলা কাঠের বাড়ি, যার জানালাগুলো ধুলোয় ঢাকা। বাড়ির দরজায় কড়া নাড়তেই কিছুক্ষণ পর একটি কাষ্ঠকণ্ঠে আওয়াজ আসে, “কে?”
“আমি সত্যজিৎ সেন, ডিটেকটিভ। আপনাদের সঙ্গে কিছু জরুরি কথা বলার আছে,” সত্যজিৎ বললেন।
দরজা খুলতেই এক বৃদ্ধকে দেখা গেল, যার হাতে একটি পুরনো লণ্ঠন। তিনি সন্দেহভরা চোখে বললেন, “তোমরা এখানে কী নিয়ে এসেছ? আমি পুলিশের সঙ্গে কিছুই জানাতে চাই না।”
“আমরা কোনো ঝামেলায় আসিনি, কাকাবাবু। একটি চুরি হওয়া চিত্রকর্মের বিষয়ে আপনার সাহায্য চাই,” সত্যজিৎ শান্তভাবে বললেন।
কাকাবাবু এক মুহূর্ত চুপ করে থাকলেন, তারপর তাদের ভিতরে নিয়ে গেলেন। বাড়ির ভিতরে অসংখ্য পুরনো বই, পুঁথি এবং শিল্পকর্ম এলোমেলোভাবে রাখা ছিল। একটি ধুলোমাখা টেবিলের উপর একটি রাসায়নিকের বোতল এবং কিছু পরীক্ষার সরঞ্জাম দেখা যাচ্ছিল।
“কী জানতে চাও?” কাকাবাবু কৌতূহলী দৃষ্টিতে জিজ্ঞাসা করলেন।
“এই চিত্রকর্মটি,” সত্যজিৎ তার মোবাইলে ‘মেঘদূত’-এর ছবি দেখালেন। “এটি রাসায়নিক দিয়ে নষ্ট করার চেষ্টা করা হয়েছে। আপনি কি বলতে পারেন কী ধরনের রাসায়নিক এতে ব্যবহৃত হতে পারে?”
কাকাবাবু মোবাইলের দিকে তাকিয়ে গভীর চিন্তায় পড়লেন। “এটি কোনো সাধারণ রাসায়নিক নয়। শিল্পকর্ম ধ্বংস করার জন্য ব্যবহৃত একটি বিশেষ দ্রব্য হতে পারে। আমি কয়েক বছর আগে এই ধরনের একটি রাসায়নিক সম্পর্কে পড়েছিলাম। এটি মিশ্রণ করার পদ্ধতিটা অত্যন্ত জটিল, এবং খুব কম লোকই এটা জানে। তবে এই রাসায়নিকটি শিল্পকর্মের উপরের স্তর মুছে দেয়, এবং নিচের স্তরে থাকা যেকোনো বার্তা লুকিয়ে রাখে। তবে…”
“তবে কী, কাকাবাবু?” সত্যজিৎ তাড়াতাড়ি জানতে চাইলেন।
“তবে আমি নিশ্চিত নই কে এই রাসায়নিক তৈরি করতে পারে। তবে যদি কেউ শিল্পকর্ম নষ্ট করতে চায়, তার অবশ্যই চিত্রকর্মের সঙ্গে যুক্ত কোনো গোপন বার্তা বা রহস্যের কথা জানা ছিল।”
“আপনি কি জানেন এই চিত্রকর্মে কোনো গোপন বার্তা থাকতে পারে?”
কাকাবাবু মাথা নেড়ে বললেন, “এ বিষয়ে আমার কোনো ধারণা নেই। তবে তুমি যদি রাসায়নিকের উৎস খুঁজতে চাও, তাহলে শহরের একটি বিশেষ গবেষণাগারে খোঁজ করতে পারো। কয়েক বছর আগে আমি তাদের কাছ থেকে একটি পুরনো ফর্মুলা পেয়েছিলাম, যা এই রাসায়নিকের সঙ্গে মেলে।”
এই তথ্য পেয়ে সত্যজিৎ বুঝলেন, তিনি সঠিক পথে রয়েছেন। তবে একটি প্রশ্ন তার মাথায় ঘুরছিল—যদি রাসায়নিকের মাধ্যমে চিত্রকর্ম নষ্ট করা হয়ে থাকে, তাহলে সেটি করার উদ্দেশ্য কী ছিল?
কাকাবাবুর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে সত্যজিৎ তার দলকে নির্দেশ দিলেন, “আমরা শহরের ওই গবেষণাগারে যাব। আমি নিশ্চিত, চিত্রকর্মের গোপন বার্তা এবং রাসায়নিকের উৎপত্তি আমাদের এই রহস্যের গভীরে নিয়ে যাবে।”
তাদের গাড়িতে ওঠার সময় সত্যজিৎ তার সহকারী অমিতকে বললেন, “অমিত, তুমি কি লক্ষ্য করেছ? কাকাবাবু কিছু লুকোতে চাইছিলেন। তার আচরণে এমন কিছু ছিল, যা পুরোপুরি স্বাভাবিক নয়। তাকে নজরে রাখো। আমরা গ্রামে ফিরে আসতে পারি।”
অমিত মাথা নেড়ে সম্মতি জানাল। এদিকে, দলটি দ্রুত শহরের গবেষণাগারের উদ্দেশ্যে রওনা দিল। তাদের সামনে ছিল এক নতুন চ্যালেঞ্জ, এবং সত্যজিৎ জানতেন, রহস্যটি যত গভীরে যাবে, ততই এটি আরও জটিল হয়ে উঠবে।
রহস্য-রোমাঞ্চ বাংলা ছোট গল্প - মৃত্যুর শেষ খাতা: "মৃত্যুর শেষ খাতা" একটি রহস্য রোমাঞ্চ বাংলা ছোট গল্প, যেখানে এক সাধারণ বীমা কর্মী রহস্যময় মৃত্যু ও প্রতারণা চক্র উন্মোচনে সাহসিকতার সঙ্গে জীবন ও সততার লড়াই করে। সম্পুর্ন্য বাংলা ছোট গল্পটি পড়তে ও অডিও স্টোরির স্বাদ উপভোগ করতে এই লিংকটি ক্লিক করুন।
অধ্যায় ৫: চিত্রকর্মের উদ্ধার এবং শেষ রহস্য
শহরের গবেষণাগারে পৌঁছানোর পর সত্যজিৎ এবং তার দল সেখানে এক রাসায়নিক বিশেষজ্ঞ, ডক্টর রূপেশ সিংহের সঙ্গে দেখা করেন। ডক্টর রূপেশ ছিলেন শিল্পকর্মের সংরক্ষণ এবং পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে একজন বিশেষজ্ঞ। সত্যজিৎ তার হাতে চিত্রকর্মটির ধ্বংসপ্রাপ্ত অংশের ছবি এবং রাসায়নিকের নমুনা তুলে দিয়ে জানতে চাইলেন,
“ডক্টর সিংহ, এই রাসায়নিক কি আপনি চিহ্নিত করতে পারবেন? এটি এমন কিছু, যা শিল্পকর্ম নষ্ট করতে ব্যবহৃত হয়েছে।”
ডক্টর রূপেশ দীর্ঘ সময় ধরে নমুনা পরীক্ষা করলেন এবং বললেন, “এই রাসায়নিকটি একটি বিশেষ মিশ্রণ, যা সাধারণত শিল্পকর্মের গোপন বার্তা লুকানোর জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি এক ধরণের পলিমার, যা বার্তার স্তরকে মুছে দেয়। তবে ভাল খবর হল, কিছু অংশ এখনো দৃশ্যমান আছে। আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মির সাহায্যে আমরা সেই মুছে ফেলা বার্তাগুলি পুনরুদ্ধার করতে পারি।”
এই কথা শুনে সত্যজিৎ উচ্ছ্বসিত হয়ে বললেন, “তাহলে দেরি কেন? আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বার্তাগুলি পুনরুদ্ধার করতে চাই।”
ডক্টর রূপেশ একটি বিশেষ যন্ত্র নিয়ে আসেন এবং চিত্রকর্মটির ধ্বংসপ্রাপ্ত অংশে আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি প্রয়োগ করেন। ধীরে ধীরে, একটি গোপন কোড এবং কিছু ধ্বংসপ্রাপ্ত শব্দ দৃশ্যমান হতে থাকে। সত্যজিৎ এবং তার দল উৎসুক দৃষ্টিতে পর্যবেক্ষণ করছিলেন।
ডক্টর রূপেশ বলেন, “এই কোডটি খুব জটিল। এটি কোনো সাধারণ কোড নয়। এটি শিল্পীদের ব্যবহৃত একটি গোপন লিপি, যা ইতিহাসের এক মূল্যবান অংশ নির্দেশ করতে পারে।”
অমিত এগিয়ে এসে বলল, “স্যার, কোডটি বুঝতে হলে আমাদের একটি বিশেষজ্ঞ দরকার। এই ধরনের কোড ডিকোড করতে সময় লাগবে।”
“ঠিক বলেছ, অমিত। তবে আমরা সময় নষ্ট করতে পারি না। কোডটি যত দ্রুত সম্ভব ডিকোড করাতে হবে,” সত্যজিৎ বললেন।
কোডটি পাঠানো হয় এক প্রখ্যাত কোডবিশেষজ্ঞ, সুমিত্র সেনের কাছে। কয়েক ঘণ্টার পর সুমিত্র সেন ফোন করে বলেন, “মিস্টার সেন, কোডটি এক ঠিকানার দিকে নির্দেশ করছে। এটি একটি পুরনো দুর্গ, যা শহরের বাইরে কয়েক কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। আমার ধারণা, সেই দুর্গেই এই চিত্রকর্মটির আসল রহস্য লুকিয়ে রয়েছে।”
এই নতুন তথ্য পেয়ে সত্যজিৎ তার দল নিয়ে সেই দুর্গের দিকে রওনা দেন। দুর্গটি ছিল অন্ধকারাচ্ছন্ন এবং রহস্যময়। ভিতরে প্রবেশ করে তারা একটি পুরনো ঘরে কিছু ধুলোয় ঢাকা পুঁথি এবং পুরনো কাগজপত্র খুঁজে পান।
“এগুলো তো স্রেফ পুরনো বইপত্র। এর মধ্যে কী থাকতে পারে?” অমিত হতাশ হয়ে বলল।
“এটাই তো রহস্য, অমিত। বইয়ের মধ্যে লুকোনো বার্তা আমাদের খুঁজে বের করতে হবে,” সত্যজিৎ বলেন।
ঘণ্টার পর ঘণ্টা অনুসন্ধান করার পর, একটি পুরনো পুঁথির পৃষ্ঠার মধ্যে থেকে একটি ছোট্ট কাগজ বেরিয়ে আসে। সেই কাগজে লেখা ছিল, “ইতিহাসের মাঝে লুকিয়ে থাকা সত্যটি চিত্রকর্মের ভিতরেই আছে। এটি কেবল শিল্প নয়, একটি সত্যের প্রতীক।”
ডক্টর রূপেশ সেই কাগজের রসায়নিক পরীক্ষা করে জানান, “এই কাগজ এবং চিত্রকর্মের মধ্যে একটি সংযোগ আছে। চিত্রকর্মটি একটি বিশেষ কোড ধারণ করে, যা একটি গুপ্তধনের অবস্থান নির্দেশ করছে। এটি শুধু শিল্পকর্ম নয়, এটি বহু বছরের লুকানো ইতিহাসের একটি অংশ।”
এই তথ্য শুনে সত্যজিৎ বুঝতে পারেন, এই চিত্রকর্মটি শুধুমাত্র একটি মূল্যবান শিল্প নয়, বরং ইতিহাসের এক অমূল্য সম্পদ। এই রহস্য উদ্ঘাটনের মাধ্যমে তিনি শিল্প ও ইতিহাসের মধ্যে এক গভীর সম্পর্ক খুঁজে পান।
অবশেষে, চিত্রকর্মটি উদ্ধার হয় এবং তার গোপন বার্তাগুলি সবার সামনে উন্মোচিত হয়। এটি এক বিশাল ইতিহাসের অংশ, যা বহু বছর ধরে লুকিয়ে ছিল। সত্যজিৎ বুঝতে পারেন, তার কাজ এখানেই শেষ নয়। এই রহস্যের জাল আরও গভীর, এবং তিনি জানেন যে প্রতিটি শিল্পকর্মের পেছনে লুকিয়ে থাকতে পারে এমন আরও অজানা গল্প।
ফিরতি পথে, অমিত বলল, “স্যার, মনে হচ্ছে এই অভিযান কেবল শুরু। এর পর আরও কিছু রহস্য আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে।”
সত্যজিৎ মুচকি হেসে বললেন, “তোমার কথাই ঠিক, অমিত। রহস্য যতই গভীর হোক, সত্য সব সময় প্রকাশ পায়। আমাদের কাজ তা খুঁজে বের করা।”
এই কথার মাধ্যমে সত্যজিৎ আর তার দল নতুন অভিযান এবং রহস্যের জন্য প্রস্তুত হতে থাকেন, যেখানে শিল্প, ইতিহাস, এবং মানুষের জটিল সম্পর্কের গল্প লুকিয়ে থাকে।