"দানব মামার বন্ধু" একটি মজার ছোটদের গল্প, যেখানে মুন্না ও এক দানবের অদ্ভুত বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। রূপকথার গল্পের আবহে দানব মামা তার ভালো ব্যবহার দিয়ে গ্রামবাসীর মন জয় করে।

বাংলা ছোট গল্প

Home » বাংলা ছোট গল্প » দানব মামার বন্ধু

দানব মামার বন্ধু

"দানব মামার বন্ধু" একটি মজার ছোটদের গল্প, যেখানে মুন্না ও এক দানবের অদ্ভুত বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। রূপকথার গল্পের আবহে দানব মামা তার ভালো ব্যবহার দিয়ে গ্রামবাসীর মন জয় করে।

আমাদের WA চ্যানেল জয়েন করুন

এই মাসের সেরা রোমান্টিক ছোট গল্প, পড়ুন ও অডিও স্টোরির স্বাদ উপভোগ করুন – পুনঃবিচ্ছেদ

রচনা - সুরজিৎ রায়   ||   গল্পপাঠে - সুমনা নাগ

অধ্যায় ১: রহস্যময় জঙ্গলে যাত্রা

বাংলা ছোটদের রূপকথার ছোট গল্পটির অডিও স্টোরি শুনতে নিচে প্লে বোতাম টি ক্লিক করুন।

পাহাড়ের কোলে সবুজে মোড়া একটি ছোট্ট গ্রাম ছিল—সীতানগর। সেখানে প্রকৃতির শোভা এমন সুন্দর যে মনে হয় পরীর দেশ নেমে এসেছে মর্ত্যে। সেই গ্রামের মাঝেই ছোট্ট মুন্না তার দিদার সঙ্গে থাকত। তার বাবা-মা কাজের জন্য বড় শহরে থাকতেন, আর দিদা ছিল তার পৃথিবী। দিদা প্রতিদিন সন্ধ্যায় পরীর গল্প বলতেন, যেখানে জাদু, দানব আর নানান রহস্যময় চরিত্রের কথা শুনে মুন্না রোজই স্বপ্নের জগতে হারিয়ে যেত।

মুন্নার বয়স ছয়। ছোট্ট এই ছেলেটি একেবারে দুষ্টু আর কৌতূহলী। তার চোখে সব কিছু নতুন, সবকিছুর পেছনের রহস্য জানার জন্য সে ব্যাকুল। দিদা বারবার তাকে সাবধান করতেন, “মুন্না, বাড়ির পাশের জঙ্গলে একা যেও না। সেখানে অনেক রহস্যময় জিনিস আছে। পথ হারিয়ে ফেললে কী করবে?” কিন্তু মুন্না তো এমন ছেলে, যার কৌতূহল থামে না।

একদিন দুপুরে, আকাশের নীলিমা আর শীতল হাওয়ার আমন্ত্রণে মুন্না ভাবল, একটু বাইরে গিয়ে পাখি দেখবে। বাড়ির পেছনের জঙ্গলে বিভিন্ন রঙের পাখি থাকত। তাদের কিচিরমিচির শুনলেই মুন্না ছুটে যেত।

জঙ্গলে ঢুকেই মুন্না দেখল বড় বড় গাছের ফাঁকে সোনালি রোদ পড়ে মাটিকে আলোকিত করে রেখেছে। চারপাশে অদ্ভুত সুন্দর ফুল ফুটে আছে, যেগুলো সে আগে কখনো দেখেনি। একটা ফুল দেখে তো সে থমকে গেল—ফুলটি ছিল রঙ বদলানোর মতো। কখনো লাল, কখনো নীল। মুন্না সেই ফুল ছুঁতে গিয়ে একটু থেমে গেল, কারণ তার মনে হল, ফুলটি যেন তাকে মুচকি হাসছে।

জঙ্গলের গভীরে ঢুকতেই চারপাশের পরিবেশ বদলে গেল। গাছগুলো যেন অনেক লম্বা আর ঘন হয়ে উঠল। পাখিদের কিচিরমিচির ধীরে ধীরে থেমে গেল। হঠাৎ, মুন্নার চোখে পড়ল একটি বড় ঝোপের পাশে বিশাল আকৃতির একটি দানব।

দানবটি দেখতে সত্যিই অদ্ভুত। তার গায়ের রং ছিল সবুজ, মাথার ওপর ছিল ছোট ছোট লাল কাঁটা। চোখ দুটো বড় আর গভীর, কিন্তু তার মুখে ছিল এক অদ্ভুত কোমল হাসি। তার হাতে একটি ভাঙা খেলনা—একটি কাঠের ঘোড়া, যেটি সে মন দিয়ে ঠিক করছিল।

মুন্না প্রথমে ভয় পেয়ে গেল। তার পা যেন মাটি থেকে সরছিল না। সে ভাবল, “এ তো সেই দানবদের মতো, যাদের কথা দিদা গল্পে বলে! আমাকে এখনই দৌড়ে পালাতে হবে।”

মুন্না পেছন ফিরে পালানোর চেষ্টা করতেই দানবটি মাথা তুলে বলল, “ওহে ছোট্ট বন্ধু, কোথায় যাচ্ছো? ভয় পেয়ো না। আমি তোমাকে কিছু করব না।”

মুন্না থমকে দাঁড়াল। তার ভয়ে ভরা চোখ দুটি ধীরে ধীরে দানবটির কোমল হাসি দেখে খানিকটা স্বাভাবিক হল। সে সাহস করে বলল, “তুমি কে? তুমি কি দিদার গল্পের দানব?”

দানবটি হেসে বলল, “হ্যাঁ, আমি এক রঙিন দানব। তবে আমি কাউকে ভয় পাইয়ে দিতে চাই না। আমি খেলনা বানাই, আর বাচ্চাদের সঙ্গে মজা করি। কিন্তু সবাই আমার চেহারা দেখে ভয় পায়, তাই আমি জঙ্গলে একা থাকি।”

মুন্না অবাক হয়ে বলল, “তুমি খেলনা বানাও? আমাকে দেখাবে?”

দানব মামা তার ভাঙা কাঠের ঘোড়াটি মুন্নার সামনে তুলে ধরে বলল, “এটা ঠিক করতে অনেক সময় লাগবে। কিন্তু যদি তুমি চাও, আমি তোমার জন্য নতুন খেলনা বানাব।”

মুন্নার ভয় কেটে গিয়ে সে বলল, “তুমি তো খুব ভালো দানব! তাহলে তুমি কেন গ্রামে এসে সবার সঙ্গে মিশে থাকো না?”

দানব মামা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল, “আমার চেহারা দেখে সবাই ভয় পায়। তুমি কি সত্যিই আমার বন্ধু হতে পারবে?”

মুন্না মিষ্টি হেসে বলল, “আমি তো তোমার বন্ধু হয়েই গেছি। আমার নাম মুন্না। এবার থেকে আমি তোমাকে ‘দানব মামা’ বলে ডাকব।”

অনুপ্রেরণামূলক বাংলা ছোট গল্প - সময়ের স্মৃতি: "সময়ের স্মৃতি" একটি মোটিভেশনাল বাংলা ছোট গল্প, যেখানে দিদিমার ঘড়ির মাধ্যমে জীবনের স্মৃতি, ত্যাগ, ভালোবাসা ও একাত্মতার মর্মার্থ তুলে ধরা হয়েছে। সময়ের টিকটিক গল্প বলে যায়। সম্পূর্ণ বাংলা ছোট গল্পটি পড়তে ও অডিও স্টোরির স্বাদ উপভোগ করতে এই লিংকটি ক্লিক করুন।

অধ্যায় ২: দানব মামার সঙ্গে বন্ধুত্ব 

বাংলা ছোটদের রূপকথার ছোট গল্পটির অডিও স্টোরি শুনতে নিচে প্লে বোতাম টি ক্লিক করুন।

ধীরে ধীরে মুন্না বুঝতে পারল যে দানব মামা মোটেও ভয়ংকর নয়। তার বিশাল চেহারার আড়ালে লুকিয়ে আছে এক কোমল আর স্নেহশীল মন। দানব মামার আসল নাম কেউ জানত না, তাই মুন্নাই তাকে নাম দিয়েছিল “দানব মামা”।

দানব মামার সবচেয়ে বড় শখ ছিল বাচ্চাদের জন্য রঙিন আর মজার খেলনা বানানো। তার জঙ্গলের বাড়ি ছিল ছোট্ট একটি গুহায়। সেই গুহার ভেতরে গাছের শেকড়, লতাপাতা আর নানান রঙিন পাথর দিয়ে সাজানো একটি কারখানা ছিল। সেখানে নানা রকমের খেলনা তৈরি হত—কাঠের ঘোড়া, পাতা দিয়ে বানানো পাখি, আর ছোট ছোট ঘূর্ণি। প্রতিটা খেলনা যেন জাদুর ছোঁয়া পেয়ে প্রাণবন্ত হয়ে উঠত।

একদিন, মুন্না দানব মামার খেলনা দেখতে দেখতে জানতে চাইল, “তুমি এখানে জঙ্গলে কেন থাকো? আমাদের গ্রামে এসে থাকলে সবাই তোমার সঙ্গে বন্ধু হতে পারত।”

দানব মামার মুখে এক দুঃখী হাসি ফুটে উঠল। সে বলল, “আমি ছোটবেলায় গ্রামে থাকতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমার চেহারা দেখে সবাই ভয় পেত। কেউ আমার সঙ্গে খেলতে চাইত না। তাই আমি এখানে জঙ্গলে এসে থাকি। এখানে গাছপালা আর পাখিরাই আমার বন্ধু। কিন্তু আমি মনে মনে চাই, একদিন বাচ্চারা আমাকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করবে। তাদের জন্যই আমি খেলনা বানাই।”

মুন্না দানব মামার কথা শুনে বলল, “তোমার খেলনাগুলো এত সুন্দর! তুমি যদি আমাদের গ্রামে আসতে, সবাই তোমার খেলনা খুব পছন্দ করত। আর আমি তো তোমার বন্ধু হয়েই গেছি। তাই আর কেউ ভয় পাবে না।”

দানব মামা একটু চিন্তায় পড়ে গেল। সে জিজ্ঞেস করল, “তোমার গ্রামের লোকেরা কি সত্যিই আমায় ভয় পাবে না?”

মুন্না তার ছোট্ট হাতে দানব মামার বড় হাত ধরে বলল, “আমি তোমার গল্প সবার কাছে বলব। আমি সবাইকে বোঝাব তুমি আমাদের কোনো ক্ষতি করবে না। তুমি তো দানব নও, তুমি তো আমাদের ‘দানব মামা’!”

দানব মামার খেলনা দেখতে দেখতে মুন্নার মনে হল যেন সে কোনো রঙিন স্বপ্নের মধ্যে আছে। প্রতিটা খেলনায় ছিল কোনো না কোনো মজার বৈশিষ্ট্য। একটা কাঠের ঘোড়া ছিল, যা দানব মামার জাদুর ছোঁয়ায় নিজে থেকেই নড়াচড়া করতে পারত। একটা পাতার পাখি ছিল, যেটি বাতাসে উড়ে বেড়াত। মুন্না অবাক হয়ে বলল, “তুমি তো জাদু জানো! এই খেলনাগুলো এভাবে চলতে পারে কীভাবে?”

দানব মামা হেসে বলল, “এটা জাদু নয়, এটা আমার মনের ভালোবাসা। আমি যখন খেলনা বানাই, তখন সেই খেলনাগুলোর মধ্যে আমি আমার ভালোবাসা আর স্নেহ দিয়ে প্রাণ দিই। তাই তারা এমন মজার হয়ে ওঠে।”

মুন্না তখন বলল, “আমার বন্ধুদের জন্যও তুমি এমন খেলনা বানাবে তো?”

দানব মামা মাথা নেড়ে বলল, “অবশ্যই বানাব। যদি তারা আমাকে ভয় না পায়, তাহলে আমি সবার জন্য খেলনা বানাতে রাজি।”

মুন্না তখন দানব মামার হাত ধরে বলল, “চলো, আমি তোমাকে আমাদের গ্রামে নিয়ে যাব। সবাই তোমার খেলনা দেখবে, আর তুমি আমাদের সবার প্রিয় হয়ে যাবে।”

কিন্তু দানব মামা একটু ভয় পেয়ে গেল। সে বলল, “আমি যদি তোমার গ্রামে গিয়ে থাকি, আর যদি কেউ আমাকে ভয় পায়?”

মুন্না আশ্বস্ত করে বলল, “তুমি তো ভালো, আর আমি সবার কাছে তোমার কথা বলব। সবাই বুঝবে তুমি কেমন দারুণ বন্ধু। আর তুমি যদি কিছু খেলনা নিয়ে যাও, তাহলে সবাই তোমায় পছন্দ করবে।”

দানব মামা একটু চিন্তা করে বলল, “ঠিক আছে, আমি তোমার কথা শুনব। তবে তুমি কথা দাও, কেউ যদি আমায় ভয় পায়, তখন তুমি পাশে থাকবে।”

মুন্না মাথা নেড়ে বলল, “অবশ্যই, দানব মামা! আমি তো তোমার সেরা বন্ধু।”

এইভাবে মুন্না আর দানব মামার বন্ধুত্ব আরও গভীর হল। মুন্না ঠিক করল, দানব মামার সঙ্গে গ্রামে গিয়ে সবার কাছে তার পরিচয় করিয়ে দেবে। কিন্তু তার আগে সে জানত, গ্রামের লোকেদের দানব মামার ভালো মনের কথা বোঝানো খুবই জরুরি।

আর এভাবেই শুরু হল মুন্না আর দানব মামার নতুন এক রঙিন যাত্রা। জঙ্গলের ভেতর দানব মামার খেলনার জাদু আর তাদের মজার গল্প যেন পরীর জগতের মতোই সুন্দর ছিল।

বাংলা রোমান্টিক ছোট গল্প - পুনঃবিচ্ছেদ: রোমান্টিক বাংলা ছোট গল্প 'পুনঃবিচ্ছেদ' হৃদয় ছুঁয়ে যায়। বিচ্ছেদের মধ্যেও প্রেমের অনুভূতি, নস্টালজিয়া আর জীবনের এক অন্যরকম গল্প। শিখা ও রাহুলের আবেগঘন মুহূর্তে প্রেম নতুন রূপ পায়। সম্পূর্ণ বাংলা ছোট গল্পটি পড়তে ও অডিও স্টোরির স্বাদ উপভোগ করতে এই লিংকটি ক্লিক করুন।

অধ্যায় ৩: গ্রামে দানব মামা

বাংলা ছোটদের রূপকথার ছোট গল্পটির অডিও স্টোরি শুনতে নিচে প্লে বোতাম টি ক্লিক করুন।

পরের দিন সকাল থেকেই মুন্না ভীষণ উত্তেজিত ছিল। সে তার বন্ধুদের বলল, “তোমরা জানো, জঙ্গলের ভেতর একটা দানব আছে, কিন্তু সে একেবারে আমাদের মতো। ও খেলনা বানায় আর আমাদের বন্ধু হতে চায়!”

বন্ধুদের মধ্যে কেউ বিশ্বাস করল, কেউ করল না। একজন বলল, “দানব? এটা তো শুধু গল্পে শোনা যায়!” আরেকজন বলল, “তুমি নিশ্চয় মিথ্যা বলছ, মুন্না!”

মুন্না জেদ করে বলল, “আমি মিথ্যা বলছি না! চলো, তোমাদের দানব মামার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিই।”

মুন্না তার বন্ধুদের নিয়ে জঙ্গলের দিকে রওনা হল। ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা একে অপরের হাত ধরে এগোতে লাগল। কেউ কেউ একটু ভয় পাচ্ছিল, কেউ আবার রোমাঞ্চিত ছিল।

জঙ্গলের ভেতরটা ধীরে ধীরে বদলে যেতে লাগল। চারপাশে রঙিন ফুল, বড় বড় গাছ, আর অদ্ভুত গন্ধ তাদের বিস্মিত করল। একজন বলল, “এত সুন্দর জায়গা! আমি আগে কখনও দেখিনি।”

হঠাৎ তারা একটা গুহার সামনে এসে দাঁড়াল। গুহার মুখে বড় ঝোপ আর গাছের শেকড় ঝুলে ছিল। মুন্না বলল, “এখানেই দানব মামা থাকে। তোমরা একদম ভয় পেয়ো না।”

দানব মামা তখন গুহার সামনে বসে নতুন খেলনা বানাচ্ছিল। তার হাতের মধ্যে ছিল কাঠের তৈরি একটি ছোট্ট ঘূর্ণি। মুন্না চিৎকার করে বলল, “দানব মামা! আমি এসে গেছি, আর আমার বন্ধুরাও এসেছে!”

দানব মামা মুখ তুলে তাকাল। তার বিশাল আকৃতি দেখে বাচ্চারা প্রথমে একটু ভয় পেল। তারা একে অপরের পিছনে লুকিয়ে পড়ল।

দানব মামা কোমল গলায় বলল, “ওহে ছোট্ট বন্ধুরা, ভয় পেও না। আমি তোমাদের জন্য খেলনা বানিয়েছি।”

তার কথা শুনে বাচ্চারা একটু সাহস পেল। মুন্না এগিয়ে এসে বলল, “দেখ, আমি তো বলেছিলাম, দানব মামা ভয়ংকর নয়। তিনি আমাদের বন্ধু!”

দানব মামা বাচ্চাদের সামনে তার বানানো খেলনাগুলো রাখল। সেখানে ছিল কাঠের ঘোড়া, পাখির মূর্তি, আর পাতার তৈরি রঙিন ঘূর্ণি। প্রতিটা খেলনা যেন জীবন্ত হয়ে উঠল।

একজন মেয়ে বলল, “এই ঘোড়াটা তো নিজে নিজেই নড়ছে!”
আরেকজন ছেলে বলল, “এটা কি জাদু?”

দানব মামা হাসতে হাসতে বলল, “এটা কোনো জাদু নয়, এটা ভালোবাসার শক্তি। আমি যখন খেলনা বানাই, তখন আমার ভালোবাসা সেগুলোকে জীবন্ত করে তোলে।”

বাচ্চারা মুগ্ধ হয়ে দানব মামার খেলনাগুলো দেখতে লাগল। তারা একে অপরকে বলল, “এত সুন্দর খেলনা আমরা আগে কখনও দেখিনি!”

দানব মামা বলল, “তোমাদের জন্য আরও অনেক খেলনা বানাব, যদি তোমরা ভালো ব্যবহার করো আর একে অপরকে সাহায্য করো। আমি চাই তোমরা সবার বন্ধু হও, আর দুষ্টুমি না করো।”

একটা ছোট ছেলে দানব মামার হাত ধরে বলল, “আমরা কথা দিচ্ছি, আমরা সবসময় ভালো ব্যবহার করব। তুমি আমাদের আরও খেলনা বানাবে তো?”

দানব মামা মাথা নেড়ে বলল, “অবশ্যই বানাব। তবে তোমরা আমাকে আর ভয় পেয়ো না।”

সেদিন থেকে গ্রামের বাচ্চারা দানব মামাকে তাদের সেরা বন্ধু হিসেবে মেনে নিল। তারা প্রায়ই জঙ্গলে গিয়ে দানব মামার সঙ্গে সময় কাটাত। দানব মামাও তাদের জন্য নতুন নতুন খেলনা বানিয়ে দিত আর মজার গল্প শোনাত।

একদিন মুন্না বলল, “দানব মামা, তুমি আমাদের গ্রামের লোকদের সঙ্গেও দেখা করো। তারা সবাই তোমার গল্প শুনে খুশি হবে।”

দানব মামা একটু চিন্তায় পড়ে গেল। সে বলল, “তারা কি সত্যিই আমায় বন্ধু হিসেবে মেনে নেবে?”

মুন্না আশ্বস্ত করে বলল, “তুমি যখন আমাদের বন্ধু হতে পারো, তখন গ্রামের বড়রাও তোমায় ভালোবাসবে।”

রহস্য-রোমাঞ্চ বাংলা ছোট গল্প - রক্ষক: রহস্য, রোমাঞ্চ ও দেব-দানবের যুদ্ধ নিয়ে লেখা "রক্ষক" এক অনবদ্য বাংলা ছোট গল্প। রাক্ষসের অভিশাপ, দেবীশক্তি ও মানবতার রক্ষার গল্প আপনাকে টেনে নিয়ে যাবে এক মহাকাব্যিক জগতে! সম্পূর্ণ বাংলা ছোট গল্পটি পড়তে ও অডিও স্টোরির স্বাদ উপভোগ করতে এই লিংকটি ক্লিক করুন।

অধ্যায় ৪: গ্রামবাসীর অভ্যর্থনা

বাংলা ছোটদের রূপকথার ছোট গল্পটির অডিও স্টোরি শুনতে নিচে প্লে বোতাম টি ক্লিক করুন।

গ্রামের প্রতিটা মানুষ এখন দানব মামার গল্প জানত। মুন্না আর তার বন্ধুরা দানব মামার বানানো খেলনা নিয়ে খেলত আর তার গল্প শোনাত। দানব মামার সম্পর্কে জানার পর গ্রামের বড়রাও তাকে দেখতে চাইল। একদিন গ্রামের মোড়ল বলল, “এমন একজন দানব, যে বাচ্চাদের জন্য খেলনা বানায়, তাকে তো আমাদের গ্রামে আনতেই হবে!”

মুন্না আনন্দে লাফিয়ে উঠল। সে দৌড়ে জঙ্গলে গেল আর দানব মামাকে বলল, “দানব মামা! গ্রামের সবাই তোমার সঙ্গে দেখা করতে চায়। তারা তোমায় গ্রামে আসতে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে!”

দানব মামা প্রথমে খুব লজ্জা পেল। সে বলল, “আমি তো খুব বিশ্রী দেখতে। যদি তারা আমায় দেখে ভয় পায়?”

মুন্না হেসে বলল, “তুমি ভয় পেলে কেন? সবাই জানে তুমি খুব ভালো। আমি তোমার সঙ্গে থাকব, কেউ ভয় পাবে না।”

দানব মামা মাথা নিচু করে বলল, “তাহলে আমি চেষ্টা করব। কিন্তু তোমাকে আমার পাশে থাকতে হবে, মুন্না।”

দানব মামা গ্রামের দিকে রওনা দিল। সে এত বড় আর ভারী ছিল যে, গ্রামের রাস্তায় তার হাঁটার সময় পুরো মাটি কাঁপছিল। গ্রামের বাচ্চারা খুশিতে দৌড়ে তার দিকে এল। তারা চিৎকার করে বলল, “দানব মামা এসেছে! দানব মামা এসেছে!”

কিছু বড়রা একটু ভয় পেয়ে পিছিয়ে গেল। কিন্তু মুন্না সবার সামনে দাঁড়িয়ে বলল, “দেখুন, দানব মামা কত মজার আর ভালো। তিনি আমাদের জন্য খেলনা বানান আর গল্প শোনান।”

গ্রামের মোড়ল এগিয়ে এসে দানব মামার সঙ্গে হাত মিলিয়ে বলল, “আমরা শুনেছি, তুমি বাচ্চাদের জন্য কত কিছু করো। আমাদের গ্রামে এসে তুমি আমাদের অনেক খুশি করেছ।”

দানব মামা একটু লজ্জা পেয়ে বলল, “আমি শুধু বন্ধুত্ব চাই। আমি চাই সবাই একে অপরকে ভালোবাসুক।”

দানব মামা বলল, “আমি চাই, গ্রামে একটা বড় খেলার মেলা করি। আমি নিজের হাতে বানানো খেলনা আর বেলুন দিয়ে সবার জন্য উপহার আনব।”

গ্রামের সবাই খুশি হয়ে বলল, “হ্যাঁ! মেলা হবে! সেটা খুব মজার হবে।”

মেলার দিন দানব মামা নিজের হাতে তৈরি রঙিন খেলনা আর বেলুন নিয়ে এল। মেলা শুরু হল, আর গ্রাম ভরে গেল আনন্দে। বাচ্চারা খেলনা নিয়ে খেলতে ব্যস্ত। কেউ কাঠের ঘোড়া নিয়ে দৌড়াচ্ছিল, কেউ ঘূর্ণি ঘোরাচ্ছিল।

একটা মেয়ে বলল, “দানব মামা, তুমি কি আরও খেলনা বানাবে?”
দানব মামা হেসে বলল, “তোমরা যদি ভালো ব্যবহার করো, তাহলে আমি তোমাদের জন্য আরও খেলনা বানাব।”

গ্রামের বড়রাও খেলনা দেখে অবাক। একজন বলল, “আমরা তো ভাবতাম, দানব মানেই ভয়ংকর। কিন্তু দানব মামা তো আমাদের সবার বন্ধু।”

দানব মামা বাচ্চাদের জন্য শুধু খেলনা নয়, একটা বিশেষ গল্পও বলল। সে বলল, “যদি তোমরা সবাই একে অপরকে সাহায্য করো আর ভালো ব্যবহার করো, তাহলে পৃথিবী অনেক সুন্দর হবে। আমি চেহারায় হয়তো ভয়ংকর, কিন্তু আমার মন ভালো। আর মনই আসল সৌন্দর্য।”

গ্রামের লোকেরা তার কথা শুনে মুগ্ধ হল। মুন্না তার বন্ধুদের বলল, “আমি তো আগে থেকেই জানতাম, দানব মামা সবার থেকে আলাদা।”

গ্রামের মোড়ল দানব মামার দিকে তাকিয়ে বলল, “তোমার মতো বন্ধু আমাদের সবার দরকার। তুমি শুধু বাচ্চাদের নয়, আমাদেরও অনেক কিছু শিখিয়েছ।”

দানব মামা বলল, “তাহলে আমায় এখানে থাকতে দাও। আমি এখানেই থাকব, আর সবার সঙ্গে ভালো সময় কাটাব।”

সেই দিন থেকে দানব মামা আর গ্রামবাসীদের মধ্যে কোনো দূরত্ব রইল না। বাচ্চারা প্রায়ই তার কাছে যেত খেলতে আর তার বানানো খেলনা উপভোগ করত। বড়রাও তার সঙ্গে সময় কাটাত। গ্রামে এক নতুন বন্ধুত্বের অধ্যায় শুরু হল।

জঙ্গলের সেই ভয়ংকর দানব এখন সবার প্রিয় দানব মামা হয়ে গেল। মুন্না জানত, তার সাহস আর বন্ধুত্বের কারণেই এই পরিবর্তন সম্ভব হয়েছিল।

শেষে, গ্রামের মেলার আকাশে উড়তে থাকা রঙিন বেলুন আর বাচ্চাদের হাসি যেন দানব মামার মনেও নতুন রঙ ছড়িয়ে দিল।

এই রকম চিত্তাকর্ষক বাংলা ছোট গল্প -এর আপডেট পেতে আমাদের WhatsApp চ্যানেল জয়েন করুন।

আমরা কারা

নতুন বাংলা ছোট গল্প

দানব মামার বন্ধু

"দানব মামার বন্ধু" একটি মজার ছোটদের গল্প, যেখানে মুন্না ও এক দানবের অদ্ভুত বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। রূপকথার গল্পের আবহে দানব মামা তার ভালো ব্যবহার দিয়ে গ্রামবাসীর মন জয় করে।

"দানব মামার বন্ধু" একটি মজার ছোটদের গল্প, যেখানে মুন্না ও এক দানবের অদ্ভুত বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। রূপকথার গল্পের আবহে দানব মামা তার ভালো ব্যবহার দিয়ে গ্রামবাসীর মন জয় করে।

সম্পুর্ন্য গল্পটি পড়ুন: দানব মামার বন্ধু

সময়ের স্মৃতি

"সময়ের স্মৃতি" একটি মোটিভেশনাল বাংলা ছোট গল্প, যেখানে দিদিমার ঘড়ির মাধ্যমে জীবনের স্মৃতি, ত্যাগ, ভালোবাসা ও একাত্মতার মর্মার্থ তুলে ধরা হয়েছে। সময়ের টিকটিক গল্প বলে যায়।

"সময়ের স্মৃতি" একটি মোটিভেশনাল বাংলা ছোট গল্প, যেখানে দিদিমার ঘড়ির মাধ্যমে জীবনের স্মৃতি, ত্যাগ, ভালোবাসা ও একাত্মতার মর্মার্থ তুলে ধরা হয়েছে। সময়ের টিকটিক গল্প বলে যায়।

সম্পুর্ন্য গল্পটি পড়ুন: সময়ের স্মৃতি

পুনঃবিচ্ছেদ

"রোমান্টিক বাংলা ছোট গল্প 'পুনঃবিচ্ছেদ' হৃদয় ছুঁয়ে যায়। বিচ্ছেদের মধ্যেও প্রেমের অনুভূতি, নস্টালজিয়া আর জীবনের এক অন্যরকম গল্প। শিখা ও রাহুলের আবেগঘন মুহূর্তে প্রেম নতুন রূপ পায়।"

রোমান্টিক বাংলা ছোট গল্প 'পুনঃবিচ্ছেদ' হৃদয় ছুঁয়ে যায়। বিচ্ছেদের মধ্যেও প্রেমের অনুভূতি, নস্টালজিয়া আর জীবনের এক অন্যরকম গল্প। শিখা ও রাহুলের আবেগঘন মুহূর্তে প্রেম নতুন রূপ পায়।

সম্পুর্ন্য গল্পটি পড়ুন: পুনঃবিচ্ছেদ

Leave a Comment

অনুলিপি নিষিদ্ধ!